এবার মুখ দেখে খাবার! অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চালু হচ্ছে চমকে দেওয়া নিয়ম

Anganwadi food delivery face scan: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। উপভোক্তাদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী সঠিকভাবে বিতরণ হচ্ছে না বলেই দাবি উঠছিল বহুবার। এবার এই সমস্যা বন্ধ করতেই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক ফেস রেকগনিশন সিস্টেম (Anganwadi food delivery face scan) চালু করার সিদ্ধান্ত নিল। চলতি মাস থেকেই এই ব্যবস্থা ...

Published on:

Anganwadi food delivery face scan: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। উপভোক্তাদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী সঠিকভাবে বিতরণ হচ্ছে না বলেই দাবি উঠছিল বহুবার। এবার এই সমস্যা বন্ধ করতেই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক ফেস রেকগনিশন সিস্টেম (Anganwadi food delivery face scan) চালু করার সিদ্ধান্ত নিল। চলতি মাস থেকেই এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে দেশের সমস্ত রাজ্যে। এবার থেকে উপভোক্তার মুখের ছবি মেলালেই মিলবে খাবার। ‘পোষণ অ্যাপ’-এ ছবি আপলোড করা হবে প্রত্যেকের, যার মাধ্যমেই নিশ্চিত হবে হাজিরা ও সুবিধা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Anganwadi food delivery face scan
Anganwadi food delivery face scan

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বর্তমান চিত্র: কোথায় সমস্যা?

রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ ১৯ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে এবং উপভোক্তার সংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে মূলত ৬ বছর পর্যন্ত শিশু এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

তবে বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে—

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now
  • খাবার না পৌঁছানো
  • ভুয়ো নাম তুলে খাবার তোলা
  • উপভোক্তার উপস্থিতি ছাড়াই হাজিরা দেখানো
  • স্থানীয় স্তরে ঘাটতির অভিযোগ

এই সমস্যাগুলির মূলেই রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব ও অনিয়ন্ত্রিত মনিটরিং।

ফেস রেকগনিশনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনতে চাইছে কেন্দ্র

এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতেই কেন্দ্রীয় সরকার ‘ফেস রেকগনিশন সিস্টেম’ (Anganwadi food delivery face scan) বাধ্যতামূলক করছে। এই নতুন ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপভোক্তা কেন্দ্র এলে, তাঁর মুখের ছবি মিলিয়ে দেওয়া হবে পোষণ অ্যাপ-এ সংরক্ষিত ছবির সঙ্গে। মিলে গেলে তবেই হাজিরা গণ্য হবে এবং খাবার সরবরাহ করা হবে

পূর্বে কী ছিল?

আগে উপভোক্তার আধার কার্ড বা মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে সেবা দেওয়া হত। কিন্তু তাতে নানা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল।

এখন কী হবে?

  • প্রত্যেক উপভোক্তার মুখের ছবি তোলা হবে।
  • সেই ছবি পোষণ অ্যাপে আপলোড করা হবে।
  • উপস্থিতির সময় অ্যাপে ছবি মিলিয়ে তবেই সেবা দেওয়া হবে।

কী এই ‘পোষণ অ্যাপ’?

Poshan Tracker App বা পোষণ অ্যাপ, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের তৈরি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে:

  • উপভোক্তার তথ্য রক্ষণাবেক্ষণ
  • কেন্দ্রভিত্তিক পরিসংখ্যান
  • উপস্থিতির রেকর্ড
  • সরবরাহকৃত খাবারের হিসেব

সবকিছুই রিয়েল টাইমে কেন্দ্রীয় সার্ভারে আপলোড হবে।

জেলা পর্যায়ে কী প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে?

  • রাজ্যের সব জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
  • অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে
  • পরীক্ষামূলকভাবে কিছু জেলায় এই সিস্টেম চালু করা হয়েছিল, যা সফল হয়েছে বলেই এখন রাজ্যব্যাপী তা রোলআউট হচ্ছে।

ফিল্ড স্তরে পরিবর্তন:

  • খাবার নেওয়ার আগে উপভোক্তার মুখ স্ক্যান করতে হবে।
  • শিশু বা মায়ের ছবি না মেললে খাবার দেওয়া হবে না।
  • হাজিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেন্দ্রীয় সার্ভারে আপলোড হবে।

প্রশ্ন উঠছে নতুন নিয়ম নিয়ে

যদিও এই প্রযুক্তি দুর্নীতি রুখতে কার্যকর, তবুও কিছু বাস্তব সমস্যা নিয়েও উদ্বেগ উঠছে।

যদি উপভোক্তা অসুস্থ বা বাইরে থাকেন?

আগে পরিবারের অন্য কেউ গিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে পারতেন। এখন ছবি না মিললে সেটা সম্ভব নয়।

ছবি তোলা না হলে বা নেটওয়ার্ক না থাকলে কী হবে?

গ্রামাঞ্চলের অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক সমস্যা আছে। সেই কারণে রিয়েল টাইম ভেরিফিকেশন ব্যর্থ হলে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।

প্রযুক্তির অপব্যবহার বা ভুল শনাক্তের সম্ভাবনা?

ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তিতে এখনো কিছুটা ভুল শনাক্তের ঝুঁকি থাকে। সেটা কীভাবে সমাধান হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশ আসেনি।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

সামাজিক উন্নয়ন কর্মীদের একাংশ এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানালেও বলছেন—

“স্বচ্ছতা নিশ্চয়ই দরকার। কিন্তু প্রযুক্তির ব্যবহার মানবিক হতে হবে। যদি কোনো মা অসুস্থ থাকেন, তাঁকে শুধু প্রযুক্তির জালে ফেলে দেওয়া উচিৎ নয়।”

নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের বক্তব্য:

এক মুখপাত্র বলেন—

“এতদিন বহুজন উপকারভোগী ছিলেন না তবুও নাম থাকায় কেউ কেউ তাঁদের হয়ে খাবার নিচ্ছিলেন। এবার এই প্রযুক্তি জালিয়াতির রাস্তা বন্ধ করবে।”

উপকারিতা ও চ্যালেঞ্জ তালিকা

✅ উপকারিতা⚠️ চ্যালেঞ্জ
স্বচ্ছতা বাড়বেঅনুপস্থিতি মানেই খাবার না পাওয়া
ভুয়ো নাম কমবেনেটওয়ার্ক সমস্যা
রিয়েল টাইম তথ্য মিলবেপ্রযুক্তিগত সমস্যা
বাজেট লিকেজ বন্ধ হবেমানবিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তি (Anganwadi food delivery face scan) একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে। তবে এর বাস্তব রূপায়ণ যদি মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক না হয়, তাহলে প্রকৃত উপভোক্তাদেরই ভোগান্তি হতে পারে। সুতরাং, প্রযুক্তিকে সহযোগী হিসাবে ব্যবহার করে, নয় বাধা হয়ে, এমন নীতি গ্রহণ করাই ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক। প্রশাসন ও স্থানীয় স্তরের কর্মীদের সহানুভূতিশীল হয়ে এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।

অবশ্যই দেখবেন: এবার কি তৃণমূলের হাত ধরছেন দিলীপ ঘোষ? নিজেই দিলেন স্পষ্ট ইঙ্গিত!