২০২০ সালে হঠাৎ করে শুরু হওয়া অতিমারির ঢেউ পাল্টে দিয়েছিল গোটা দেশের অর্থনৈতিক চেহারা। প্রতিদিনকার স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, থমকে গিয়েছিল জীবনযাত্রা। তবুও যে মানুষগুলো দেশের চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিলেন, তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা। সংক্রমণের ভয়কে উপেক্ষা করে, যাঁরা নিরবিচারে কাজ করে গেছেন সেই কঠিন সময়ে, আজ তাঁরাই এক বড়সড় প্রত্যাশা নিয়ে বসে আছেন সরকারের দিকে চেয়ে।
কর্মচারী হোন বা পেনশনভোগী—সবাই চান তাঁদের প্রাপ্য পাওনাগুলি যেন অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ করে মহামারির সময়ে স্থগিত থাকা ডিএ (Dearness Allowance) ও ডিআর (Dearness Relief)-এর বকেয়া প্রাপ্তির দাবি বহুদিন ধরেই জোরালো হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের মতোই সরকারি কর্মীরা এখন অর্থনৈতিক চাপে জর্জরিত।
স্থগিত ছিল দীর্ঘ ১৮ মাসের বকেয়া DA/DR (18 Months DA/DR Pending Since Pandemic)
ডিএ-ডিআর নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চ থেকে, যখন কোভিডের কারণে সরকার ডিএ ও ডিআর-এর বর্ধিত হারে প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। এই স্থগিতাদেশ চলতে থাকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রায় ১৮ মাসের বকেয়া পড়ে রয়েছে লক্ষাধিক কর্মী ও পেনশনভোগীর। যদিও এই সময়কালেও সরকারি কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন পূর্ণ নিষ্ঠায়। সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্ষদের (JCM) ৬৩তম বৈঠকে (JCM Meeting) এই বিষয়টি ফের আলোচনায় উঠে আসে। বৈঠকে কর্মী পক্ষের প্রতিনিধিরা, বিশেষত শিবগোপাল মিশ্র ও এম. রঘবাইয়া, স্পষ্ট জানান—এই বকেয়া অর্থ অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তাঁদের বক্তব্য, কর্মীদের প্রতি সরকারের এই অবহেলা অনৈতিক।
Read MOre: দৈনিক ৫০ টাকায় ৩৫ লক্ষ! পোস্ট অফিসের বাম্পার ‘গ্রাম সুরক্ষা’ স্কিম(Gram Suraksha Yojana)
সরকারের যুক্তি ও অস্বীকার DA/DR (Government’s Response to DA Arrear)
তবে এই দাবি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক (Finance Ministry)। তাদের যুক্তি, অতিমারির সময় দেশের আর্থিক অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক। সামাজিক ও স্বাস্থ্য খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল সরকারের। সেই প্রেক্ষিতে ডিএ ও ডিআর-এর বকেয়া ফেরত দেওয়া এখনই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। সরকারের বক্তব্যে স্পষ্ট, এখন দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার দিকেই মূল ফোকাস দেওয়া হচ্ছে। ফলে এই মুহূর্তে ১৮ মাসের বকেয়া পরিশোধের কোনও পরিকল্পনা নেই। এই অবস্থান কর্মচারীদের মধ্যে একপ্রকার হতাশা সৃষ্টি করেছে, যদিও তাঁরা এখনো আশা ছাড়ছেন না।
৮তম বেতন কমিশন DA/DR নিয়ে বড় আলোচনা (8th Pay Commission Discussion)
এই বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তা হল অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission)। জানা গিয়েছে, কমিশনের কিছু প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। লক্ষ্য করা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করা। যদিও বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে, সেই অনুযায়ী বকেয়া প্রদান নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হবে বলে আশ্বাস মিলেছে। এই বেতন কাঠামোর মাধ্যমে কর্মীদের জন্য আরও কিছু সুবিধা যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় কর্মীদের জন্য গোষ্ঠী বিমা প্রকল্প (CGEGIS)-এর একটি নতুন সংস্করণ প্রস্তাব আকারে তোলা হয়েছে। শীঘ্রই অর্থ মন্ত্রক এই প্রস্তাবের বিস্তারিত কর্মী পক্ষের কাছে তুলে ধরবে।
Read More: অটো আপগ্রেডেশন স্কিম ভারতীয় রেলে(Indian Railways) নতুন সুবিধা: স্লিপার ভাড়ায় এবার এসি কোচে ভ্রমণ!
শেষ কথা: মিলবে কি ১৮ মাসের বকেয়া DA/DR? (Will the 18 Months Arrear Be Paid?)
সবশেষে যে তথ্যটি সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীরা দীর্ঘদিন ধরে জানার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন, তা হল—এই মুহূর্তে ১৮ মাসের ডিএ-ডিআর বকেয়া পরিশোধের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই। সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই দাবিকে বাস্তবায়িত করা এখন সম্ভব নয়। যদিও কর্মচারী সংগঠনগুলি সরকারের এই অবস্থানকে মানতে নারাজ এবং তাঁরা দাবিতে অনড় রয়েছেন। আগামী দিনে এই বকেয়া নিয়ে আরও আন্দোলনের সম্ভাবনা থাকছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে কর্মী পক্ষ থেকে। অর্থাৎ, এই দাবির নিষ্পত্তি এখনই হচ্ছে না—কিন্তু আলোচনা ও চাপ বজায় থাকবে তা বলাই যায়।
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |