Buddhadeb Bhattacharjee: শেষ হলো এক যুগের। পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছর বামফ্রন্ট আমলের পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় এবং শেষ বাম মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন আজ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সালে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব বাবু। আজ ৮ই আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ মাধ্যমকে বুদ্ধবাবুর চলে যাবার খবর দেন তারা সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য।
সূত্রের খবর অনুযায়ী সকালের প্রাতরা সেরে অসুস্থ বোধ করছিলেন বুদ্ধদেব পাব তারপরেই সকাল আটটা কুড়ি মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই। বুধবার রাতে বুদ্ধদেবের শ্বাসকষ্ট বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা রাতে সামাল দেওয়া হয়েছিল। তখনই ঠিক করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ উডল্যান্ডসের চিকিৎসকেরা এসে তাঁকে পরীক্ষা করবেন। কিন্তু সেই সুযোগ টুকু আর দিলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগেই সকলকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বুদ্ধদেব। সকালে উঠে প্রাতরাশের পর চা-ও খেয়েছিলেন। তার পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে নেবুলাইজ়ার দেওয়ার চেষ্টা হয়। সে সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তারপর এই চিকিৎসকদের খবর দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা তাকে প্রয়াতে বলে ঘোষণা করেন। বুদ্ধদেব বাবু তার পূর্বসূরী জ্যোতি বসুর মতো মরণোত্তর দেহ দান করে গিয়েছেন। বুদ্ধদেব পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। ফলে দিল্লির নেতাদেরও তাঁর শেষযাত্রায় একটা ভূমিকা থাকবে। আপাতত পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’কামরার ফ্ল্যাটেই তাঁর মরদেহ রাখা হচ্ছে।
দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা তে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব। ২০২১-এর মে মাসের মাঝামাঝি কোভিডে আক্রান্ত হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৮ মে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দিই ছিলেন। আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাঁকে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব বাবু। সেই সময়েও কয়েক দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হয় তাঁকে। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
গত বছরের ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। ৯ অগস্ট হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বেশ কয়েক দিন তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছিলেন। ফুসফুস এবং শ্বাসনালিতে মারাত্মক রকমের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সেই সময় দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলেছিল তার, চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সাড়া দিয়েছিলেন বাড়িও ফিরে এসেছিলেন।
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি বুদ্ধদেব বাবু পদ্মভূষণ সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর নাম মনোনীত করলেও, তিনি এই সম্মান নিতে অস্বীকার করেন। যতদিন তিনি শাসন ক্ষমতায় ছিলেন তার লক্ষ্য ছিল শিল্পায়ন ঘটানো। ২০১১ সালে বুদ্ধদেব বাবুর সাথে সাথে সমাপ্ত হয় ৩৪ বছরের বাম শাসন।