Buddhadeb Bhattacharya: গতকাল নক্ষত্রপতন হয়েছে বাংলা রাজনীতিতে। প্রয়াত হয়েছেন পশ্চিম বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharya)। দীর্ঘ ১১ বছর ফুসফুসের সংক্রমণ ঘরবন্দী ছিলেন তিনি। গত বছর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ে চিকিৎসকদের পরামর্শে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। তারপর থেকে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন বুদ্ধদেব।
জীবদ্দশায় নিজের চক্ষু এবং দেহদান করে গিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তাই বৃহস্পতিবার তাঁর প্রয়াণের পর শত শোকের মধ্যেও কর্তব্যে অনড় ছিলেন তাঁর পরিবারের সকলে। সংশ্লিষ্ট দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ সংস্থার সঙ্গে ফোন করে যোগাযোগ করেন বুদ্ধদেবের পরিবার। দুপুরেরর মধ্যেই প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কর্ণিয়া সংগ্রহ করা হয়। রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি বা আরআইও- এর দ্বারা এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়। এরপর সন্ধ্যাতেই সেই কর্ণিয়া স্থাপন করা হয় দুজনের চোখে।
আরআইও এর ডিরেক্টর জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কর্ণিয়া গ্রহণ করে নতুনভাবে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন দুজন ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক বছর যাবৎ চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন বুদ্ধদেব। তবে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ায় ছানির অপারেশন করাননি তিনি। সেই কারণে তাঁর কর্ণিয়ার মানও বেশ ভালো ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এবার সেই কর্ণিয়ায় নতুন দৃষ্টি পেলেন আরো দুজন। নিয়ম অনুসারে, গ্রহীতাদের পরিচয় সহ অন্যান্য সকল তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমনে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিগত কয়েক বছর ধরে গৃহবন্দি অবস্থায় কলেজ তিনি। অসুস্থ হওয়ায় বার কয়েক হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছিল তাঁকে। জানা যাচ্ছে, বুধবার রাতেও শ্বাসকষ্টের সমস্যার বাড়াবাড়ি হয় তাঁর। রাতে কোনরকমে পরিস্থিতি সামাল দিলেও ঠিক ছিল বৃহস্পতিবার বেলায় উডল্যান্ডসের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে যাবেন তাঁকে। এমনকি প্রয়োজনে হাসপাতালেও ভর্তি করা হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালেই পরিস্থিতির অবনতি হয়।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতরাশের পর চা খেয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তারপরেই হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন তিনি। নেবুলাইজার দেওয়ার চেষ্টাও করা হলেও ঠিক তখনই হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলে খবর। তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসকদের। তাঁরা এসে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য এনআরএস মেডিকেলে নিজের দেহদানের অঙ্গীকার করে রেখেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মরণোত্তর সেখানেই তাঁর মরদেহ দান করা হবে।