Table of Contents
দুর্গা পূজা (Durga Puja): ভারতের শ্রেষ্ঠ উৎসবের সম্পূর্ণ বিবরণ
দুর্গা পূজার (Durga Puja) উৎপত্তি ও ইতিহাস
দুর্গা পূজা বাঙালির সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ও হৃদয়ের উৎসব, যা একাধারে ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন। হিন্দু ধর্মমতে, দেবী দুর্গা হলেন শক্তির অপরূপ রূপ। পুরাণে বর্ণিত আছে, অসুররাজ মহিষাসুরের অত্যাচার থেকে দেবতাদের রক্ষা করতে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর তাঁদের শক্তি একত্রিত করে সৃষ্টি করেন মহাশক্তির প্রতীক, দেবী দুর্গাকে। দশ হাতে সজ্জিত এই দেবী মহিষাসুরের বিরুদ্ধে দশ দিন ধরে যুদ্ধ করেন এবং দশম দিনে তাঁকে পরাজিত ও বধ করেন। এই বিজয়ই বিজয়া দশমীর উৎস এবং দুর্গা পূজার মূল তাৎপর্য।
দেবী দুর্গার জন্ম কাহিনি
দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে দেবতাদের সম্মিলিত শক্তি থেকে, যখন মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গলোক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রতিটি দেবতা তাঁকে নিজের অস্ত্র দান করেন—বিষ্ণু দেন চক্র, শিব দেন ত্রিশূল, ইন্দ্র দেন বজ্র, আগ্নি দেন জ্বলন্ত শিখা। এই সমস্ত শক্তি ও অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দেবী রূপ নেন অদম্য যোদ্ধার। দশ দিন ধরে চলে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ, আর শেষমেশ দশম দিনে দেবী দুর্গা বধ করেন মহিষাসুরকে। এই বিজয় শুধু এক যুদ্ধের জয় নয়, এটি শুভ শক্তির দ্বারা অশুভ শক্তির পরাজয়ের চিরন্তন প্রতীক।
প্রাচীন দুর্গোৎসবের ইতিহাস
দুর্গা পূজার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। সপ্তম শতকের সংস্কৃত নাটক ও প্রাচীন লিপিতেই মেলে এর উল্লেখ। সময় গড়াতে গড়াতে জমিদার বাড়ির উদ্যোগেই ধীরে ধীরে শুরু হয় বড় করে পূজার আয়োজন। রাজশাহী, দিনাজপুর এবং নদিয়ার জমিদাররা প্রথম দিকে বারোয়ারি দুর্গা পূজার প্রচলন করেন, যেখানে একদল মানুষ একত্র হয়ে পূজার আয়োজন করতেন। পরে, ১৮৩২ সালে কলকাতার ভাগবাজারে প্রথমবারের মতো সর্বজনীন দুর্গা পূজার আয়োজন হয়, যেখানে সমাজের সব স্তরের মানুষ অংশ নিতে পারেন—সেই থেকেই গড়ে ওঠে আমাদের আজকের চেনা জনপূজার ঐতিহ্য।

দুর্গা পূজা (Durga Puja) কবে এবং কোথায় উদযাপন করা হয়?
দুর্গা পূজা সাধারণত আশ্বিন মাসে, শরতের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটি পড়ে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মাঝে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, এই উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে ওড়িশা, আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলিতেও। চারদিকে ঢাকের আওয়াজ, আলোর সাজ, আর ভক্তির উজ্জ্বল ছোঁয়ায় গোটা সমাজ ঢেকে যায় পূজোর আনন্দে।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী Durga Puja সময় নির্ধারণ
দুর্গা পূজার শুরুটা হয় মহালয়ার পবিত্র দিনে, যেদিন ভোরবেলা চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আগমনের আহ্বান জানানো হয়। তারপর একে একে আসে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী—প্রতিটি দিনেই থাকে বিশেষ রীতি, পূজা, আর ভক্তির আবেশ। সবশেষে আসে দশমী, অর্থাৎ বিজয়া দশমী, যেদিন দেবী দুর্গাকে চোখের জলে বিদায় জানিয়ে গঙ্গাজলে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই বিদায়ের মধ্যেই মিশে থাকে পরের বছর আবার ফিরে আসার প্রতীক্ষা—”আসছে বছর আবার হবে”।
Read More: Jagadhatri: কেন সৃষ্টি হলেন জগদ্ধাত্রী! জানুন, দেবীর আবির্ভাবের ইতিহাস
দুর্গা পূজার (Durga Puja) পাঁচটি দিন
দুর্গা পূজা মূলত পাঁচ দিন ধরে ধুমধাম করে পালিত হয়—ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে বিজয়া দশমীতে শেষ হয়। প্রতিটি দিনেই থাকে আলাদা আলাদা রীতি, আনন্দ আর গভীর তাৎপর্য। ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন দিয়ে শুরু, সপ্তমী থেকে শুরু হয় মূল পূজা, অষ্টমী মানেই কুমারী পূজা আর অঞ্জলির ভিড়, নবমীতে চণ্ডীপাঠ আর সন্ধিপুজোর আবেগ, আর দশমীতে তো চোখ ভেজানো বিদায়। এই পাঁচটি দিন যেন বাঙালির জীবনের পাঁচটি উজ্জ্বল অধ্যায়।
মহালয়া
মহালয়া দিয়েই শুরু হয় দুর্গাপুজোর সেই স্বপ্নময় যাত্রা। ভোরবেলা ঘুম ভেঙে রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে “মহিষাসুরমর্দিনী” শুনেই যেন বাঙালির মনে পূজোর প্রথম স্পন্দন জাগে। এই দিনটি শুধুই দেবী আরাধনার শুরু নয়, পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তর্পণের দিনও বটে। চারদিকে তখন এক আবেগঘন পরিবেশ—মনে হয়, মা দুর্গা সত্যিই বুঝি আসছেন, মর্ত্যে তাঁর আগমনের বার্তা নিয়ে।
ষষ্ঠী
ষষ্ঠীর দিন থেকেই দুর্গাপুজোর আসল শুরু। এদিন হয় দেবীর ‘বোধন’—বিশেষ মন্ত্রপাঠ ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবীকে মর্ত্যে আহ্বান জানানো হয়। এই দিনেই প্রতিমায় আঁকা হয় দেবীর চোখ, যাকে বলা হয় “নেত্রদান”। সেই মুহূর্তে যেন প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা পায়—দেবী হয়ে ওঠেন জীবন্ত, দর্শনার্থীদের মনে জাগিয়ে তোলেন ভক্তি, আবেগ আর এক অদ্ভুত উত্তেজনা। ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই শহর-গ্রাম জুড়ে শুরু হয় মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, ঢাকের বোল আর উলুধ্বনিতে ভরে ওঠে চারপাশ।
সপ্তমী
সপ্তমীর সকালটা দুর্গাপুজোর এক বিশেষ মাহাত্ম্য নিয়ে আসে। এদিন ভোরে হয় ‘নবপত্রিকা স্নান’—নয় ধরনের পবিত্র গাছকে গঙ্গাজলে স্নান করিয়ে দেবীর প্রতীক হিসেবে পূজামণ্ডপে আনা হয়। এরপর হয় ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’, অর্থাৎ দেবীর মূর্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই মুহূর্ত থেকেই শুরু হয় মূল উপাসনা। মন্দিরে কিংবা প্যান্ডেলে সকালের পুষ্পাঞ্জলিতে ভক্তরা হাতে ফুল নিয়ে ভিড় করেন, হৃদয়ে থাকে প্রার্থনা—মা যেন সবার মঙ্গল করেন। সপ্তমীর সকালটা তাই শুধু আচার নয়, বাঙালির আবেগে ভরপুর এক পবিত্র সূচনা।
অষ্টমী
অষ্টমীকে বলা হয় দুর্গাপুজোর সবচেয়ে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে হাজারো ভক্ত ভোরবেলা উঠে মায়ের চরণে অঞ্জলি দেন, মন থেকে প্রার্থনা করেন শান্তি ও মঙ্গলের জন্য। অষ্টমীর অন্যতম বিশেষ আচার হলো কুমারী পূজা—শক্তির প্রতীক হিসেবে এক কন্যাকে দেবীর রূপে পূজা করা হয়, যা এক অনন্য আবেগের মুহূর্ত তৈরি করে। আর সন্ধ্যাবেলায় হয় সন্ধিপূজা, যা অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে পালিত হয়। এই পূজা দেবী চামুণ্ডার অসুর বিনাশের গৌরবগাথা স্মরণ করে। চারপাশে তখন ধূপ, দীপ আর ঢাকের ছন্দে ভরে যায় এক অন্যরকম শক্তির অনুভবে।
নবমী ও বিজয়া দশমী
নবমীর পূজা ও হোমের মধ্য দিয়ে দুর্গাপুজোর মূল আচার-অনুষ্ঠান প্রায় শেষের পথে আসে। তারপর আসে সেই আবেগঘন দশমী, যেদিন মাকে চোখের জলে বিদায় জানাতে হয়। এই দিনেই হয় ‘সিঁদুর খেলা’—বিবাহিতা মহিলারা মায়ের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন, আর তারপর নিজেরা একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে উৎসবের রঙে মেতে ওঠেন। এ যেন একদিকে বিষাদের বিদায়, অন্যদিকে আনন্দের বন্ধন। এরপর শুরু হয় ‘বিজয়া’—আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের বাড়ি গিয়ে প্রণাম, আশীর্বাদ ও মিষ্টিমুখের মাধ্যমে জানানো হয় শুভেচ্ছা। এই ভাবেই বিষাদের মধ্যে থেকেও ভালোবাসা ও সম্প্রীতির সুরে শেষ হয় দুর্গাপুজোর উৎসব।
Read More: মা হতে চেয়েছিলেন, হলেন মাসি! কে এই গুণ্ডিচাদেবী? জগন্নাথ কেন থাকেন ৭ দিন তাঁর বাড়িতে?
Durga পূজার বিভিন্ন আচার ও রীতি
বোধন ও আমন্ত্রণ
দেবীর বোধন দুর্গাপুজোর এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগঘন মুহূর্ত। সাধারণত এটি ঘটে পবিত্র বেলগাছের ডালে, যা দেবীর প্রতীক হিসেবে পূজিত হয়। বোধনের সময় উচ্চারিত হয় বৈদিক মন্ত্র, চারদিকে বাজে শঙ্খ ও ঢাকের সুর, আর ধুনুচি নৃত্যে মুখরিত হয় পরিবেশ। আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে মণ্ডপ, আর ভক্তদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে এক অদ্ভুত আনন্দ আর অপেক্ষার উত্তেজনা। এই আচার মূলত দেবীর আত্মাকে জাগ্রত করার প্রতীক, যেন মা স্বর্গ থেকে নেমে এসে মর্ত্যে তাঁর ভক্তদের মাঝে বিরাজ করেন।
কুমারী পূজা
এই আচার অনুযায়ী, একটি কিশোরী মেয়েকে জীবন্ত দেবীর রূপে পূজা করা হয়—তাঁকেই বলা হয় ‘কুমারী’। দেবী দুর্গার শক্তির প্রতীক হিসেবে এই ছোট্ট মেয়েকে সম্মান জানানো হয়, তাঁর পায়ে স্পর্শ করে আশীর্বাদ নেওয়া হয়। বিশেষ করে বেলুড় মঠে এই কুমারী পূজা খুবই জনপ্রিয় এবং অত্যন্ত ভক্তি ও গম্ভীরতার সঙ্গে পালন করা হয়। সেদিনের পরিবেশটা যেন আলাদা—নীরব শ্রদ্ধা, ভক্তির আবহ আর এক অন্যরকম অনুভব, যা চোখে জল আর হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেয়।
সন্ধিপূজা
অষ্টমী ও নবমীর মাঝের সেই সংযোগক্ষণেই অনুষ্ঠিত হয় সন্ধিপূজা—একটা অত্যন্ত গম্ভীর আর শক্তিময় মুহূর্ত। পুরাণ অনুযায়ী, এই সময়েই দেবী চণ্ডী চণ্ড ও মুণ্ড নামের দুই ভয়ংকর অসুরকে বধ করেছিলেন। সেই বিজয়ের মাহাত্ম্যেই পালন করা হয় এই পূজা। ঢাকের গর্জন, প্রদীপের আলো, ধূপের গন্ধ আর মন্ত্রোচ্চারণে চারপাশে তৈরি হয় এক তীব্র ভক্তিভাবনা—যেন মা নিজেই নেমে এসেছেন অশুভের বিনাশ করতে। সন্ধিপূজা তাই শুধু একটা আচার নয়, এটা শক্তি, সাহস আর সত্যের জয়কে শ্রদ্ধা জানানোর এক গভীর প্রতীক।
বিসর্জন
দশমীর দিন আসে সেই প্রতীক্ষিত অথচ হৃদয়ভাঙা বিদায়ের সময়। দেবী দুর্গাকে গঙ্গাজলে বিসর্জন দেওয়া হয়, যা প্রতীক—মা এখন কৈলাসে, তাঁর ধামে ফিরে যাচ্ছেন। ঢাকের শেষ আওয়াজ, চোখে জল, কাঁপা গলায় বিদায় জানানো—সব মিলিয়ে বিসর্জনের মিছিলটা হয়ে ওঠে ভীষণ আবেগঘন। প্রতিমা গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যেতে থাকে আর ভক্তদের মুখে তখন একটাই কথা—“আসছে বছর আবার হবে“। যেন বিদায়ের মাঝেও থাকে আশার আলো, মাকে আবার ফিরে পাওয়ার অঙ্গীকার।
Durga Puja প্রতিমা নির্মাণ ও কারিগরদের ভূমিকা

কুমোরটুলি ও মৃৎশিল্প
কলকাতার কুমোরটুলি নামটা শুনলেই মনে পড়ে যায় মাটির ঘ্রাণ আর শিল্পের নিপুণতা। এই এলাকা বিখ্যাত প্রতিমা তৈরির জন্য—এখানকার মৃৎশিল্পীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তৈরি করে চলেছেন দেবী দুর্গার মূর্তি। মাটির প্রতিমা, বাঁশের কাঠামো, রঙ, অলংকার—সব কিছুই হাতে তৈরি, সব কিছুতেই থাকে শিল্পীর নিখুঁত ছোঁয়া আর পরম যত্ন। একটা প্রতিমা তৈরি হয় শুধু হাতের গুণেই নয়, হৃদয়ের ভালোবাসা আর ভক্তিতেও। দুর্গাপুজোর মূলে তাই কুমোরটুলির এই শিল্পীরা এক অদৃশ্য অথচ অপরিহার্য অংশ।
প্রতিমা তৈরির পর্যায়
- বাঁশ দিয়ে কাঠামো তৈরি
- খড় ও কাপড় জড়িয়ে আকৃতি নির্ধারণ
- মাটি লাগিয়ে গঠন তৈরি
- শুকিয়ে রং করা ও অলংকার লাগানো
- চক্ষুদান
Durga Puja প্রতিমার অলংকার ও সাজসজ্জা
দেবী দুর্গার অলংকারে থাকে এক অপার সৌন্দর্য আর গভীর অর্থ। সোনালি রঙের ঝালর, ঝলমলে রেশমি শাড়ি, কাগজের রঙিন ফুল, ধাতব মুকুট আর নানা অস্ত্র—সব মিলিয়ে দেবীর সাজ যেন এক অলৌকিক দৃশ্য। কিন্তু এগুলো শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়—প্রতিটি অলংকার, প্রতিটি উপাদান আসলে এক একটি শক্তির প্রতীক। মুকুটে থাকে শাসনের গরিমা, অস্ত্রে থাকে অশুভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা। দেবীর এই রূপ আমাদের শেখায়—সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকে সাহস, ক্ষমতা আর আশীর্বাদের এক শক্তিশালী বার্তা।
Read More: আসছে বাবা লোকনাথের তিরোধান দিবস! জেনে নিন পুজোর দিনক্ষণ এবং সঠিক নিয়ম
দুর্গা পূজার (Durga Puja) মণ্ডপ ও আলোকসজ্জা
Durga Puja থিম ভিত্তিক মণ্ডপ
বর্তমানে থিম ভিত্তিক পূজা খুব জনপ্রিয়। ইতিহাস, সমাজ, পৌরাণিক কাহিনি, বৈজ্ঞানিক চিন্তা এমনকি সিনেমার উপর ভিত্তি করেও থিম তৈরি হয়।
লাইটিং ও ডিজাইন
চাঁদনি লাইট, ডিজিটাল এনিমেশন, চলমান আলোকচিত্র—সব মিলিয়ে রাতের কলকাতা হয়ে ওঠে আলোর শহর।
Durga Puja বিখ্যাত কলকাতার প্যান্ডেল
- বাগবাজার সার্বজনীন
- সুরুচি সংঘ
- দেশপ্রিয় পার্ক
- কলেজ স্কোয়ার
দুর্গা পূজায় সংস্কৃতি ও বিনোদন
নাচ, গান ও নাটক
পূজার সময় মণ্ডপে সঙ্গীতানুষ্ঠান, ধুনুচি নাচ ও নাটক পরিবেশিত হয়। রাবীন্দ্রসঙ্গীত, ধ্রুপদী ও আধুনিক গান বাজে মণ্ডপজুড়ে।
ফ্যাশন ও র্যাম্প
বাঙালির পূজার ফ্যাশনও উল্লেখযোগ্য। নতুন পোশাক, ট্র্যাডিশনাল শাড়ি, কুর্তা-পাঞ্জাবি—সবই ফ্যাশনের অংশ।
FAQs (সাধারণ প্রশ্নোত্তর)
১. দুর্গা পূজা কোথা থেকে শুরু হয়?
প্রাচীনকালে রাজশাহি ও নদিয়ার জমিদাররা দুর্গা পূজা শুরু করেন। পরবর্তীতে সর্বজনীন রূপ নেয় কলকাতায়।
২. দুর্গা পূজা কয়দিন ধরে চলে?
মোট ৫ দিন—ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত।
৩. মহালয়া কী?
মহালয়া হল পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা। এদিন দেবীর আগমন বার্তা পাওয়া যায়।
৪. দুর্গা পূজায় কুমারী পূজা কেন করা হয়?
এটি দেবী দুর্গার কুমারী রূপের পূজা। এটি নারী শক্তির সম্মান ও পূজার অঙ্গ।
৫. থিম ভিত্তিক পূজার উদ্দেশ্য কী?
মানবিক বার্তা, সামাজিক ভাবনা এবং সৃষ্টিশীলতা ফুটিয়ে তুলতে থিম পূজার প্রচলন।
৬. দুর্গা বিসর্জনের সময় কী বলা হয়?
“আসছে বছর আবার হবে”—এই শ্লোগানে আবেগঘন বিদায় জানানো হয় দেবীকে।
উপসংহার
দুর্গা পূজা (Durga Puja) শুধু একটা ধর্মীয় উৎসব নয়—এটা বাঙালির আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি আর মিলনের প্রতীক। এই কয়েকটা দিনে যেন গোটা সমাজটা এক সুরে বাঁধা পড়ে—আনন্দ ভাগ করে নেওয়া, একে অপরকে পাশে পাওয়া, আর নতুন কিছু তৈরি করার এই অনুভূতি সত্যিই অনন্য।
আজকের দিনে দুর্গা পূজা (Durga Puja) শুধু মন্দপের চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পৌঁছে যাচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। পরিবেশসচেতনতা থেকে শুরু করে থিমের ভাবনায় উঠে আসছে সামাজিক বার্তা। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বাঙালির দুর্গা পূজা আজ গর্বের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে। এই উৎসব তাই কালের স্রোতে এগিয়ে চলা এক জীবন্ত সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি।
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |