ভোটার কার্ড-আধারও চলবে না! নাগরিকত্ব প্রমাণে বাধ্যতামূলক এই ডকুমেন্ট, আপনি কি প্রস্তুত?

India Citizenship: বিধানসভা নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে ‘নিবিড় সংশোধনী অভিযান’ বা SIR। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য, ভোটের আগে ভোটার তালিকাকে পুরোপুরি খতিয়ে দেখা ও সংশোধন করা। ইতিমধ্যেই বিহারে এই অভিযান চালিয়ে ৫১ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের খোঁজ মিলেছে, যা যথেষ্ট চমকপ্রদ। এই ৫১ লক্ষের মধ্যে— ১৮ লক্ষ ভোটার ...

Updated on:

India Citizenship

India Citizenship: বিধানসভা নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে ‘নিবিড় সংশোধনী অভিযান’ বা SIR। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য, ভোটের আগে ভোটার তালিকাকে পুরোপুরি খতিয়ে দেখা ও সংশোধন করা। ইতিমধ্যেই বিহারে এই অভিযান চালিয়ে ৫১ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের খোঁজ মিলেছে, যা যথেষ্ট চমকপ্রদ।

এই ৫১ লক্ষের মধ্যে—

  • ১৮ লক্ষ ভোটার ইতিমধ্যেই মৃত,
  • ২৬ লক্ষ ভোটার সেই বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাই নন,
  • এবং ৭ লক্ষ ভোটারের নাম একাধিক স্থানে তালিকাভুক্ত

এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই জোরালো হয়েছে সম্ভাবনা যে, বাংলাতেও ভোটার তালিকা সংশোধনের অভিযান শুরু হতে পারে খুব শীঘ্রই। আর যদি এমন অভিযান বাংলায় শুরু হয়, তাহলে শুধুমাত্র ভোটার কার্ড, আধার কার্ড কিংবা রেশন কার্ডকেই নাগরিকত্বের প্রমাণ (India Citizenship) হিসেবে গ্রাহ্য করা নাও হতে পারে—এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা ও যথার্থতা বাড়াবে, তবে সাধারণ নাগরিকদের জন্যও বাড়তে পারে কিছুটা প্রশাসনিক জটিলতা ও অতিরিক্ত যাচাই-বাছাইয়ের চাপ। এখন দেখার, বাংলায় এই অভিযান কতটা দ্রুত শুরু হয় এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব কতটা গভীর হয়।

অবশ্যই দেখবেন: বজরংবলীর আশীর্বাদে দুর্ভাগ্য কাটিয়ে উঠবে এই ৩ রাশি! আজকের রাশিফল, ২২ জুলাই

ভোটার সংশোধনে ভারতের নাগরিকত্ব (India Citizenship) প্রমাণে কোন কোন নথি জরুরি?

জানিয়ে রাখা দরকার, বিহারে চলমান সংশোধন অভিযানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কিছু গোষ্ঠী সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। এই মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন তাদের পালটা হলফনামায় স্পষ্টভাবে জানায় যে, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড – এই তিনটি নথির কোনওটিকেই ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসেবে ধরা হবে না। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হলে ঠিক কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ নথি রাখতে হবে হাতে? ভবিষ্যতে যাতে কোনও জটিলতায় পড়তে না হয়, তাই এখনই জেনে নিন নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নথিগুলির তালিকা। এখানে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য গ্রহণযোগ্য নথিগুলির তালিকা তুলে ধরা হলো, যেগুলি ভোটার, আধার বা রেশন কার্ডের বিকল্প হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হতে পারে —

প্রয়োজন পড়বে নিম্নলিখিত নথিগুলির:

১. ✅ সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পেনশন হোল্ডারদের নথি:
যদি আপনি কেন্দ্রীয়, রাজ্য সরকার অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পেনশনভোগী হন, তবে তার প্রমাণপত্র নাগরিকত্বের স্বীকৃত নথি হিসেবে গৃহীত হতে পারে।

২. ✅ বার্থ সার্টিফিকেট:
যথাযথ সংস্থা বা আধিকারিকের মাধ্যমে ইস্যু করা জন্ম সনদ (Birth Certificate) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি।

৩. ✅ ১লা জুলাই, ১৯৮৭-র আগের সরকারি পরিচয়পত্র:
সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তরফে ইস্যু করা এমন কোনও পরিচয়পত্র, যা ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগে ইস্যু হয়েছে।

৪. ✅ শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র:
সরকার স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট বা অন্য কোনও শিক্ষাগত শংসাপত্র।

৫. ✅ স্থায়ী বসবাসের শংসাপত্র:
যথাযথ রাষ্ট্রীয় সংস্থার দ্বারা ইস্যু করা স্থায়ী বসবাসের প্রমাণপত্র (Domicile Certificate)।

৬. ✅ জাতিগত শংসাপত্র:
তফসিলি জাতি, উপজাতি বা অন্য কোনও স্বীকৃত জাতিগোষ্ঠীর শংসাপত্র যা সরকার অনুমোদিত।

৭. ✅ পরিবারের নথিবদ্ধ তথ্য:
সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের রেকর্ডে থাকা পরিবারের সদস্যদের তালিকা বা ফ্যামিলি এনুমারেশন রেকর্ড।

৮. ✅ জমি বা বাড়ির কাগজপত্র:
সরকার ইস্যু করা জমি মালিকানার দলিল বা বাড়ির শংসাপত্র।

৯. ✅ পাসপোর্ট:
ভারত সরকারের ইস্যু করা বৈধ পাসপোর্টও নাগরিকত্বের গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নিয়মাবলী এখানেই শেষ নয়। নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী, জন্ম তারিখ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নথিপত্রের সংখ্যাও ভিন্ন ভিন্ন হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো—

জন্ম তারিখ অনুসারে প্রয়োজনীয় নথিপত্রের নিয়ম:

১. যদি ১লা জুলাই, ১৯৮৭ সালের আগে জন্ম হয়ে থাকে:

  • এই ক্ষেত্রে মাত্র একটি নথি যথেষ্ট, যেটি জন্মস্থান এবং জন্মক্ষণ প্রমাণ করতে সক্ষম।

২. যদি জন্ম হয় ১লা জুলাই, ১৯৮৭ থেকে ২রা ডিসেম্বর, ২০০৪-এর মধ্যে:

  • এই ক্ষেত্রে দুটি নথি প্রয়োজন:
    • 📌 প্রথম নথি: নিজের জন্মস্থান এবং জন্মক্ষণ প্রমাণ করার জন্য।
    • 📌 দ্বিতীয় নথি: বাবা বা মায়ের জন্মস্থান এবং জন্মক্ষণ প্রমাণ করার জন্য।

৩. যদি ২রা ডিসেম্বর, ২০০৪-এর পরে জন্ম হয়:

  • এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ নথি:
    • প্রথম নথি: নিজের জন্মস্থানজন্মক্ষণ সংক্রান্ত।
    • দ্বিতীয় নথি: বাবার জন্মস্থান ও জন্মক্ষণ।
    • তৃতীয় নথি: মায়ের জন্মস্থান ও জন্মক্ষণ।
    • চতুর্থ নথি: যদি বাবা বা মা—দু’জনের একজনও ভারতীয় নাগরিক না হন, তাহলে সেই অভিভাবকের ভ্যালিড পাসপোর্ট এবং ভিসা কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

সংশোধন আবেদনের সময় যা করতেই হবে:

  • সংশোধনের জন্য আবেদন জানাতে গেলে একটি হলফনামা অবশ্যই জমা দিতে হবে।
  • এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
  • হলফনামায় স্বতঃপ্রণোদিত ঘোষণাপত্র দিয়ে জানাতে হবে:
    • আপনি অন্য কোনও দেশের নাগরিক নন।
    • আপনি অন্য কোথাও ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত নন।

এই নিয়মগুলি যথেষ্ট কড়া এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্ভুল নথিপত্র জোগাড় করে আবেদন জমা না দিলে তা বাতিলও হয়ে যেতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত সময় থাকতেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখা ও সংশোধনের সময় সতর্কভাবে জমা দেওয়া। নিজের পরিচয় ও নাগরিকত্বের অধিকার (India Citizenship) বজায় রাখতে এগুলি জানা ও অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

অবশ্যই দেখবেন: ঘূর্ণিঝড় উইফারের দাপটে কাঁপছে বাংলা! জলমগ্ন হবে এই ৭ জেলা, সতর্কতা জারি

 

Anamika Sen

দেশ-বিদেশের খবর, অর্থনীতি, জ্যোতিষ, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য এবং টেকনোলজির জগৎ—এই সব বিষয় নিয়ে লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
WhatsApp Icon