Ration Card: শুরু হয়েছে রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয়করণ, জেনে নিন নতুন নিয়ম ও প্রক্রিয়া! 

Ration Card: ভারতে পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (PDS) দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের কম খরচে খাদ্যশস্য সরবরাহ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার আওতায় যোগ্য ব্যক্তিদের রেশন কার্ড প্রদান করা হয়, যা রাজ্য সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাম্প্রতিক সময়ে, কেন্দ্র সরকার আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাই পদ্ধতি চালু করেছে, যার ফলে রেশন কার্ড ব্যবস্থাপনায় ...

Published on:

Ration Card: ভারতে পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (PDS) দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের কম খরচে খাদ্যশস্য সরবরাহ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার আওতায় যোগ্য ব্যক্তিদের রেশন কার্ড প্রদান করা হয়, যা রাজ্য সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাম্প্রতিক সময়ে, কেন্দ্র সরকার আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাই পদ্ধতি চালু করেছে, যার ফলে রেশন কার্ড ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন এসেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

একসময় দেশে প্রায় ১০.৬ কোটি ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু ছিল। কিন্তু আধার-ভিত্তিক নতুন সিস্টেম কার্যকর হওয়ার পর বৈধ কার্ডের সংখ্যা কমে ৯.১২ কোটিতে নেমে এসেছে। এ প্রক্রিয়ায় বহু কার্ড নিষ্ক্রিয় বা বাতিল করা হয়েছে এবং আরও কার্ড বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত অব্যবহৃত ও অবৈধ কার্ডগুলোর অপসারণ করাই এই পরিবর্তনের উদ্দেশ্য।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

কাদের রেশন কার্ড বাতিল হতে পারে?

বিভিন্ন রাজ্যে রেশন কার্ড (Ration Card) ব্যবস্থাপনার নিয়ম আলাদা হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য নতুন নিয়মের সাথে একমত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পূর্বেও অনুরূপ ব্যবস্থা কার্যকর ছিল, যেখানে কোনো ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেশন না নিতেন, তাহলে তার কার্ড (Ration Card) নিষ্ক্রিয় করা হতো।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

২০২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি নিয়ম চালু করে যেখানে বলা হয়, যদি কেউ পরপর দুই মাস রেশন সংগ্রহ না করেন, তবে তাঁর রেশন কার্ড (Ration Card) সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় করা হবে। পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পুনরায় সক্রিয় না করলে, কার্ডটি স্থায়ীভাবে বাতিল হয়ে যাবে। কেন্দ্র সরকারও একই ধরনের নিয়ম কার্যকর করেছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নিয়ম কী?

কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ছয় মাসের মধ্যে একবারও রেশন না নেন, তবে তার রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হবে। নিষ্ক্রিয় হওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তিন মাস সময় থাকবে নিজের কার্ড পুনরায় সক্রিয় করার জন্য। এই সময়ের মধ্যে ই-কেওয়াইসি (ইলেকট্রনিক যাচাইকরণ) সম্পন্ন করে আধার সংযুক্ত করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে কার্ড পুনরায় সক্রিয় না করলে সেটি স্থায়ীভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

নতুন নিয়মের প্রভাব ও বিতর্ক

এই নতুন নিয়ম নিয়ে কিছু বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অল ইন্ডিয়া রেশন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু মন্তব্য করেছেন যে, গ্রাহকদের রেশন কার্ড ব্লক করা হলে তাদের যথাযথভাবে জানানো উচিত। সরাসরি তথ্য না পাওয়ায় অনেক যোগ্য ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের অধিকার হারাতে পারেন।

এ কারণে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলোর একসঙ্গে কাজ করা উচিত, যাতে এই প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সহজ হয়। সরকার চাইলে রেশন কার্ডধারীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস বা নোটিফিকেশন পাঠিয়ে তাদের অবগত করতে পারে।

কিভাবে রেশন কার্ড পুনরায় সক্রিয় করা যাবে?

যদি কোনো রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিম্নলিখিত ধাপে কার্ড পুনরায় সক্রিয় করতে পারেন—

1. স্থানীয় খাদ্য দপ্তর বা রেশন দোকানে গিয়ে আবেদন জমা দিতে হবে।

2. ই-পস (ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেল) মেশিনের মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই করতে হবে।

3. বায়োমেট্রিক যাচাই সম্পন্ন হওয়ার পর, কার্ড পুনরায় সক্রিয় করা হবে।

পরিবর্তনের উদ্দেশ্য ও চ্যালেঞ্জ

সরকারের মতে, অব্যবহৃত রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করার মূল লক্ষ্য হলো পিডিএস ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা এবং অপব্যবহার কমানো। বহু ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, কিছু পরিবার বা ব্যক্তি বাস্তবে রেশন সংগ্রহ করেন না, কিন্তু কার্ড (Ration Card) সক্রিয় থাকে। এতে প্রকৃত উপকারভোগীরা খাদ্যশস্য থেকে বঞ্চিত হন।

তবে, এই পরিবর্তনের ফলে অনেক গ্রাহক সমস্যায় পড়তে পারেন, বিশেষত যারা তথ্য সম্পর্কে অবগত নন। বিশেষ করে গ্রামীণ বা দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগের এলাকায় বসবাসকারী ব্যক্তিরা এই প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে পড়তে পারেন। তাই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে, জনগণ যথাযথভাবে এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন এবং সময়মতো তাঁদের রেশন কার্ড পুনরায় সক্রিয় করার সুযোগ পাচ্ছেন।

সার্বিকভাবে, নতুন নিয়মের লক্ষ্য হলো রেশন কার্ড ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ করা এবং প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। তবে, এই পরিবর্তনের বাস্তবায়ন যথাযথভাবে পরিচালনা করা না হলে অনেক দরিদ্র মানুষ সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো, সাধারণ মানুষকে সঠিকভাবে গাইড করা এবং রেশন ব্যবস্থা আরও দক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।

আরও পড়ুন। Nandini Didi: লাল নয়, ছকভাঙা সাজে বিয়ের পিঁড়িতে নন্দিনী দিদি! কোথায় হল বিয়ে, মেনুতে কী ছিল?