RG kar: কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজের ঘটনা নিয়ে ফুঁসছে বাংলা তথা গোটা দেশ। দোষীদের শাস্তির দাবিতে শহর থেকে মফস্সল পর্যন্ত পথে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন টলিপাড়ার এক বিরাট অংশ। তবে টলিপাড়ার কিছু অভিনেত্রী তথা সাংসদ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেননি বা প্রতিবাদের দাবিতে সোচ্চারও হতে দেখা যায়নি তাঁদের। যার ফলে সমাজমাধ্যমে কয়েকদিন ধরেই লাপাতা লেডিজ হিসাবে খোঁজ পড়েছিল তাঁদের।
এই তালিকায় ছিলেন সায়নী ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মাল্য, শতাব্দী রায়রা। কোথাও কোথাও আবার ‘লাপাতা লেডিস’ নামে পোস্টারও পড়েছিল তাঁদের নামে। হয়েছে বিস্তর সমালোচনাও। আরজিকর ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য তোলপাড় হচ্ছে তখনও কেন চুপ তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদেরা সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। অবশেষে নীরবতা ভেঙে হঠাৎই প্রকাশ্যে এলেন হুগলির সাংসদ তথা সকলের প্রিয় ডিসি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাধীনতা দিবসের দিনই প্রকাশ্যে এসেছে রচনার একটি ভিডিয়ো। সেখানে তাকে প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে সত্যিই কি নারীরা স্বাধীন? তাঁরা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছেন? ভিডিয়তে দেশব্যাপী সকল মহিলাদের কথা তুলে ধরেন রচনা। তিনি বললেন, ‘‘সারা ভারতে মহিলারা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছে? উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে মণিপুর একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াব। কলকাতা শহরে আরজি করের এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা রাস্তায় নেমেছি। আওয়াজ তুলেছি।
আমিও আপনাদের সঙ্গেই আছি।” শয়ে শয়ে মহিলারা যে ভাবে রাস্তায় নেমেছেন তা ভারতবর্ষে আগে কখনও হয়নি বলেই জানিয়েছেন রচনা। সঙ্গে সব মহিলাদের কুর্নিশও জানিয়েছেন তিনি। রচনা মৃতা চিকিৎসকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “যতক্ষণ না মৃতা চিকিৎসক সুবিচার পাচ্ছেন আপনারা আওয়াজ তুলবেন। ওঁর বাবা–মা যাতে সুবিচার পায়।, দোষী যাতে শাস্তি পায়। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে।”
কথা বলতে বলতে চোখে ভেজে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদের। তাঁর নিজের জীবনে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব না হলেও সমাজের একটা বড় অংশের মেয়েরা যেভাবে যাতায়াত করেন সেই নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, “রাতে কাজ সেরে আমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরি। তবে বহু মেয়ে ট্রেনে ঝুলতে-ঝুলতে ফেরে, কেউ বাসে, আবার কেউ ফেরে আটোতে। অনেকে অনেক কষ্ট করেন। আমি একজন বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ আমাকে সম্মান করবে, পুরুষ বিপদ পড়লে সাহায্য করবে। কিন্তু পুরুষের জাত আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমি চিৎকার করব কেউ শুনবে না!”
চোখের জল মুছতে মুছতেই ভারতের বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কঠিন একটা পদক্ষেপ করতে হবে। ভারতের বিচারব্যবস্থা এমন হতে হবে যাতে কোনও পুরুষ কোনও মেয়ের দিকে কুনজরে না তাকাতে পারে। যাদের নজর খারাপ তারা পাল্টায় না। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া উচিত। সকলে একজোট হয়ে থাকুন। আপনারা ভাববেন না আমরা শিল্পী, রাজনীতির মানুষ, আমাদের মন কাঁদে না তেমন নয়। আমরা আপনাদের সঙ্গেই আছি।”
যদিও তাঁর এই ভিডিও ভাইরাল হতেই কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। ঘটনার এতদিন পর তাঁর বোধদয় দেখে হাসির রোল উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে লিখেছেন অ্যাক্টিংটা আর একটু ভালো হতো। এছাড়াও নানান মন্তব্যে ভরে উঠেছে ভিডিওর কমেন্ট সেকশন।
আরও পড়ুন: National Film Awards: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে দক্ষিণের বাজিমাত! বাংলার ঝুলিতে কী এল?