Ration Card: ভারতের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (PDS) বা রেশন ব্যবস্থা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ স্বল্পমূল্যে কিংবা বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পান। বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য এই প্রকল্প জীবনরক্ষাকারী। তবে, সম্প্রতি রেশন কার্ড (Ration Card) সংক্রান্ত একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার রেশন কার্ডের সাথে eKYC (ইলেকট্রনিক নো-ইওর-কাস্টমার) বাধ্যতামূলক করেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে eKYC না করলে আপনার রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ ভুয়ো এবং নিষ্ক্রিয় রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে।
কেন রেশন কার্ডে eKYC বাধ্যতামূলক করা হলো?
রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারি সুবিধা সঠিক হাতে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে eKYC চালু করা হয়েছে।
- বহু অসাধু ব্যক্তি ভুয়ো রেশন কার্ড (Ration Card) তৈরি করে সরকারি সুবিধা ভোগ করছিলেন।
- একই পরিবারে একাধিক কার্ড ব্যবহার করে খাদ্যশস্য নেওয়া হচ্ছিল।
- সরকার ডুপ্লিকেট এবং জাল কার্ড বাতিল করে স্বচ্ছতা আনতে চায়।
➡️ তাই এখন থেকে রেশন কার্ডের (Ration Card) সঙ্গে আধার লিঙ্ক করে eKYC বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
eKYC না করলে কী হবে?
যদি আপনি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে eKYC সম্পন্ন না করেন—
- আপনার রেশন কার্ড প্রথমে সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।
- পরে সেটি স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে।
- এর ফলে আপনি আর রেশন দোকান থেকে সরকারি খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে পারবেন না।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লক্ষ লক্ষ রেশন কার্ড (Ration Card) বাতিল হয়ে গেছে। তাই এখনই কাজটি সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি।
রেশন কার্ড eKYC করার পদ্ধতি
অনলাইন পদ্ধতি (নিজে ঘরে বসে)
যদি আপনার আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করা থাকে, তবে ঘরে বসেই সহজে eKYC করতে পারবেন।
ধাপগুলো হলো:
- প্রথমে রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- পশ্চিমবঙ্গের জন্য লিংক: food.wb.gov.in
- সেখানে “Ration Card eKYC” বা “Aadhaar Link” অপশনটি বেছে নিন।
- আপনার রেশন কার্ড নম্বর ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিন।
- আধারের সঙ্গে লিঙ্ক থাকা মোবাইল নম্বরে একটি OTP (One Time Password) যাবে।
- সেই OTP দিয়ে সাবমিট করলে আপনার eKYC প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
অফলাইন পদ্ধতি (নিকটবর্তী সেন্টারে)
যাদের আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করা নেই, তারাও সহজেই eKYC করতে পারবেন।
ধাপগুলো হলো:
- আপনার নিকটবর্তী রেশন ডিলারের কাছে যান।
- সেখানেই বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যান দিয়ে eKYC সম্পন্ন হবে।
- এছাড়া কাছের CSC (কমন সার্ভিস সেন্টার) বা জনসেবা কেন্দ্রেও গিয়ে এই কাজ করতে পারবেন।
Read More: Nusrat Jahan: জন্মাষ্টমী উদযাপনে নুসরতকে কটাক্ষ! ‘ইসলামের কলঙ্ক’ বলে তোপ ধর্মান্ধদের
কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে?
রেশন কার্ড eKYC করার সময় সাধারণত এই নথিগুলি প্রয়োজন হয়:
- আধার কার্ড (সবার)
- রেশন কার্ড
- মোবাইল নম্বর (আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করা থাকলে সহজ হয়)
- ঠিকানার প্রমাণ (প্রয়োজনে)
কোন কোন রাজ্যে নিয়ম কার্যকর হয়েছে?
ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই রেশন কার্ড eKYC বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)
- উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh)
- বিহার (Bihar)
- ঝাড়খণ্ড (Jharkhand)
- তামিলনাডু, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক সহ আরও অনেক রাজ্য
প্রতিটি রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
কেন এখনই eKYC করবেন?
- সরকারি খাদ্যশস্য ও অন্যান্য সুবিধা পেতে হলে রেশন কার্ড সক্রিয় রাখতে হবে।
- ভুয়ো কার্ডধারীদের কারণে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন।
- এখন eKYC না করলে স্থায়ীভাবে কার্ড বাতিল হয়ে যাবে।
রেশন কার্ড (Ration Card) হলো দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে সরকারের সবচেয়ে বড় সহায়ক হাতিয়ার। তাই এটি সক্রিয় রাখা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রেশন কার্ড eKYC এখন বাধ্যতামূলক। আপনি যদি এখনও eKYC না করে থাকেন, তাহলে অবিলম্বে অনলাইনে বা অফলাইনে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করুন। অন্যথায় সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।