School Timings: এপ্রিল থেকে বদলে যাচ্ছে স্কুলের সময়সূচি! কী বলছে শিক্ষা পর্ষদ?

School Timings: এপ্রিল মাস আসতে এখনো কিছুদিন বাকি, তবে তার আগেই বাংলার আবহাওয়া তার চিরচেনা খেলা দেখাতে শুরু করেছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পর সাময়িক স্বস্তি মিললেও এখন গরম তার দাপট দেখাতে শুরু করেছে। তাপমাত্রা আবারও ঊর্ধ্বমুখী, যার ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মার্চের শেষের ...

Updated on:

School Timings: এপ্রিল মাস আসতে এখনো কিছুদিন বাকি, তবে তার আগেই বাংলার আবহাওয়া তার চিরচেনা খেলা দেখাতে শুরু করেছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পর সাময়িক স্বস্তি মিললেও এখন গরম তার দাপট দেখাতে শুরু করেছে। তাপমাত্রা আবারও ঊর্ধ্বমুখী, যার ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মার্চের শেষের দিকেই পারদ ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির সময়সূচি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা পর্ষদ। এপ্রিল মাস থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে দুই ধরনের রুটিন চালু করা হচ্ছে, যা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে পর্ষদ।

দুই ভাগে ক্লাসের রুটিন

আপনার সন্তান যদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে, তাহলে এই খবর আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা পর্ষদের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যের ৫০ হাজার প্রাথমিক স্কুলে এবার থেকে দু’টি আলাদা সময়ে ক্লাস নেওয়া হবে। কেউ কেউ এই পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটি সমস্যার সৃষ্টি করবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

পর্ষদের প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হবে—

সকাল ৬:৩০ থেকে ১০:৩০ পর্যন্ত

সকাল ১০:৫০ থেকে বিকেল ৩:৩০ পর্যন্ত

এই নতুন রুটিন রাজ্যের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য হবে।

নতুন সময়সূচির কারণ কী?

এই পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, রাজ্যের কিছু স্কুলে ডে শিফটে ষষ্ঠ থেকে দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস হয়। এছাড়াও, গ্রীষ্মের ছুটির ঠিক আগে ও পরে অনেক স্কুলেই সকালে ক্লাস চালু থাকে। সেই বিষয়টি বিবেচনা করেই নতুন রুটিন চালু করা হয়েছে।

তবে শিক্ষকদের একাংশ এই যুক্তি মেনে নিতে পারছেন না। তারা মনে করছেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে প্রাথমিক স্তরে পাঠদানের মান কমতে পারে। কিছু শিক্ষক সংগঠন এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে এবং দাবি করেছে যে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও একই ধরনের নিয়ম চালু করা উচিত।

শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া

শিক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে এই নিয়ম চালু করা হলে তা বাচ্চাদের পড়াশোনার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন গরাই জানিয়েছেন, যদি গরমের কারণে প্রাথমিক স্তরের স্কুলগুলিতে মর্নিং শিফট চালু করা হয়, তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও একই নির্দেশিকা দেওয়া উচিত। তাছাড়া, গরমে ছুটির পরিমাণ না কমিয়ে বরং ক্লাসের সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা প্রয়োজন।

অভিভাবকদের একাংশও এই নতুন রুটিন নিয়ে চিন্তিত। অনেকের মতে, সকালে এত তাড়াতাড়ি শিশুদের স্কুলে পাঠানো যথেষ্ট কষ্টকর হতে পারে, বিশেষ করে যারা দূরবর্তী এলাকা থেকে আসে। অন্যদিকে, যারা ডে শিফটে থাকবে, তাদের জন্যও দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকা ক্লান্তিকর হতে পারে। তবে কিছু অভিভাবক মনে করছেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে গরমের কষ্ট কিছুটা কম হবে এবং পড়ুয়ারা বিকেলের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে স্কুল থেকে বেরোতে বাধ্য হবে না।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে?

নতুন সময়সূচি কার্যকর করার ফলে স্কুলগুলিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি দেখা যায় যে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুব বেশি অসুবিধার সৃষ্টি করছে, তবে ভবিষ্যতে এই নিয়ম নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা পর্ষদ এই বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে আপাতত, এপ্রিল মাস থেকে এই নতুন নিয়মই কার্যকর হচ্ছে। আগামী দিনে শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সময়সূচি পুনরায় পরিবর্তন করা হতে পারে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা চলবে।

আরও পড়ুন। Weather Today: বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গে স্বস্তির হাওয়া! আজকের আবহাওয়া আপডেট

WhatsApp Icon