বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে তীব্র গরম এবং দাবদাহের প্রেক্ষিতে রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে চলছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি (Summer Vacation 2025)। প্রতিদিনই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছচ্ছে, যা শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর। এই পরিস্থিতিতে গরমের ছুটির মেয়াদ নিয়েই তৈরি হয়েছে প্রচুর জল্পনা। কেউ বলছেন ছুটি বাড়বে, কেউ বলছেন ২ জুনেই স্কুল খুলবে। কিন্তু আদতে কবে খুলছে স্কুল? শিক্ষাদপ্তরের পক্ষ থেকে কি ঘোষণা এসেছে? এই প্রতিবেদনেই রইল সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর, বিশদে।
গরমের ছুটি শেষে স্কুল কবে খুলবে? | When will school open after the Summer Vacation 2025 ?
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দপ্তর সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি ৩১ মে, ২০২৫ (শনিবার) পর্যন্ত চলবে এবং ছুটির পরবর্তী সোমবার অর্থাৎ ২ জুন, ২০২৫ থেকে স্কুল পুনরায় খোলা হবে। অর্থাৎ, কোনো অতিরিক্ত ছুটির ঘোষণা এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে করা হয়নি।
তবে এই নির্দেশিকা প্রাথমিকভাবে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকার স্কুলগুলির জন্য প্রযোজ্য বলে জানানো হয়েছে। সমতলের অন্যান্য জেলার স্কুলগুলিতেও প্রাথমিকভাবে একই তারিখেই ছুটি শেষ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভবিষ্যতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
অবশ্যই দেখবেন: নিম্নচাপ গেলেও বৃষ্টির ভয় কাটেনি! দক্ষিণবঙ্গের কোন জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস আজ? দেখে নিন বিস্তারিত
গুজবে কান দেবেন না, সরকারি নোটিশেই ভরসা রাখুন
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে যে, রাজ্যে গরমের ছুটি আরও ৭ দিন বা ১৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে এবং স্কুল খুলবে ৯ জুন কিংবা ১৬ জুন থেকে। এই খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর কোনওরকম অফিসিয়াল ঘোষণা করেনি যা ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে নির্দেশ করে।
অবশ্যই দেখবেন: আর ফ্রি নয়! WhatsApp মেসেজ পাঠালেই কাটা যাবে টাকা, জারি হল নতুন নিয়ম!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অপ্রমাণিত সূত্রে প্রকাশিত হওয়া এমন খবরের ফলে অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এধরনের ভুল তথ্যের কারণে শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে শুধুমাত্র শিক্ষা দপ্তরের সরকারি ওয়েবসাইট বা অফিসিয়াল নোটিশ অনুসরণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
শিক্ষার ক্ষতির আশঙ্কা
ছুটির বাড়াবাড়ি হলে শিক্ষার উপর কী প্রভাব পড়তে পারে? প্রশ্নটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উচ্চমাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রথম সেমিস্টার এবং ইউনিট টেস্ট প্রস্তুতির সময় এসে গিয়েছে। একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, যদি স্কুল আরও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে, তবে পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ করতে নিয়মিত ক্লাস চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।
বিশেষত ক্লাস ১১ ও ১২-এর ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই এখনো নতুন পাঠ্যবই হাতে পায়নি। ক্লাস শুরুর জন্য স্কুল খোলার অপেক্ষায় রয়েছে হাজার হাজার পড়ুয়া। পাশাপাশি, সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এখন থেকেই পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
বিভিন্ন স্কুলের প্রস্তুতি: ছুটি শেষে নিয়মিত ক্লাসের উদ্যোগ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির একাংশ ইতিমধ্যেই স্কুল খোলার পরবর্তী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি স্কুলগুলিতে ২ জুন থেকেই পূর্ণাঙ্গ ক্লাস রুটিন চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সরকারি স্কুলগুলিতেও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত উপস্থিতি এবং পরীক্ষার রুটিন জারি করার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে এই সময়ে একটি বড় সমস্যা হল, গরমে স্কুল খোলার পর ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার কম থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকরা ক্লাসে উপস্থিতদের পাশাপাশি অনুপস্থিতদের জন্যও পুনরায় পাঠদান ব্যবস্থা রাখতে পারে।
প্রচণ্ড গরমে শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হবে
এ বছর রাজ্যজুড়ে গ্রীষ্মের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় প্রতিদিন গড় তাপমাত্রা ৩৯-৪১ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। উত্তরবঙ্গেও পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আদ্রতাজনিত অস্বস্তি রয়েছে।
এই আবহাওয়ায় ছোট ছোট পড়ুয়াদের স্কুলে যাতায়াত করানো কতটা নিরাপদ, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক অভিভাবক। অনেকেই চাইছেন, অন্তত দুপুর ১২টার মধ্যে স্কুল ছুটি করে দেওয়া হোক। বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল ইতিমধ্যেই হাফ-ডে ক্লাস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে, যাতে গরমের মধ্যে পড়ুয়াদের অসুবিধা না হয়।
শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
যদিও শিক্ষা দপ্তর এখনো গরমের ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা করেনি, তবু প্রতিটি জেলার প্রশাসনকে জানিয়ে রাখা হয়েছে যে, প্রয়োজনে স্থানীয় তাপমাত্রা এবং পরিস্থিতি বিচার করে জেলা প্রশাসন নিজেরাই ছুটি বাড়ানোর সুপারিশ করতে পারে। তবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যবিধি ও ঝুঁকি বিবেচনা করে। অর্থাৎ, আপাতত ২ জুন, ২০২৫-এই স্কুল খোলার সরকারি পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতে কোনও পরিবর্তন হলে তা সরকারি বিজ্ঞপ্তি মারফতই জানানো হবে।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের স্কুল খোলার সম্ভাব্য তারিখ এবং সরকারি দপ্তরের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলাম। ভবিষ্যতে ছুটির তারিখে কোনও পরিবর্তন হলে আমরা তা দ্রুত আপডেট করব। নিয়মিত খবর পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
অবশ্যই দেখবেন: দিদির পুলিশের’ কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা! ভাইরাল অডিও ইস্যুতে অনুব্রতর নাটকীয় মোড়
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |