CSP-আপনার কাছেই ব্যাঙ্কের মিনি ব্রাঞ্চ: মাসে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের সুযোগ!

কলকাতা, ২৬শে মে, ২০২৫: দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে এখনও ব্যাঙ্কের শাখা পৌঁছায়নি, সেখানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সহজলভ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে CSP বা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (Customer Service Point) অথবা মিনি ব্রাঞ্চগুলি। এটি একদিকে যেমন গ্রাম ও মফস্বলের বাসিন্দাদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে সাহায্য করছে, তেমনই স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য মাসে হাজার ...

Published on:

CSP-আপনার কাছেই ব্যাঙ্কের মিনি ব্রাঞ্চ: মাসে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের সুযোগ!

কলকাতা, ২৬শে মে, ২০২৫: দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে এখনও ব্যাঙ্কের শাখা পৌঁছায়নি, সেখানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সহজলভ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে CSP বা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (Customer Service Point) অথবা মিনি ব্রাঞ্চগুলি। এটি একদিকে যেমন গ্রাম ও মফস্বলের বাসিন্দাদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে সাহায্য করছে, তেমনই স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগারের এক দারুণ সুযোগ তৈরি করেছে। একজন ভারতীয় নাগরিক চাইলেই এখন যেকোনো ব্যাঙ্কের CSP বা মিনি ব্রাঞ্চ খুলে স্বাবলম্বী হতে পারেন। কীভাবে এই সুযোগ পাবেন এবং কোথায় আবেদন করবেন, জেনে নিন বিস্তারিত।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

CSP আসলে কী?

CSP-এর পুরো নাম হলো কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (Customer Service Point)। এগুলি মূলত এমন ছোট আকারের ব্যাঙ্কিং আউটলেট যা গ্রাম বা মফস্বলের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থাপন করা হয়, যেখানে ব্যাঙ্কের কোনো নিয়মিত শাখা নেই। এই মিনি ব্রাঞ্চগুলির প্রধান উদ্দেশ্য হলো, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যাতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং ব্যাঙ্কগুলিও তাদের পরিষেবা নেটওয়ার্ককে আরও বিস্তৃত করতে পারে। এটি একটি ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’ মডেল, যেখানে স্থানীয় এজেন্টরা ব্যাঙ্কের হয়ে পরিষেবা প্রদান করেন।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

CSP থেকে আয়ের সম্ভাবনা

ভারতজুড়ে বহু সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক CSP বা মিনি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে তাদের পরিষেবা পরিচালনা করছে এবং এর মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েকশো কোটি টাকা আয় করছে। একইসাথে, CSP এজেন্টরাও মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন। একজন এজেন্ট মূলত কমিশনের মাধ্যমে আয় করেন। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) সহ অন্যান্য ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট পরিচালনা করে এজেন্টরা বিভিন্ন পরিষেবার উপর কমিশন লাভ করেন। স্বাভাবিকভাবেই, যে CSP বা মিনি শাখায় যত বেশি গ্রাহক হবেন এবং যত বেশি লেনদেন হবে, সেই CSP এজেন্ট তত বেশি অর্থ রোজগার করতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

Read More: হলুদ লাইন পেরোলেই বিপদ! আজ পর্যন্ত কতজনকে দিতে হল জরিমানা, জানুন বিস্তারিত

পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন ব্যাঙ্ক CSP পরিষেবা দিচ্ছে?

পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটি বড় সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক বর্তমানে CSP পরিষেবা চালু রেখেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

সরকারি ব্যাঙ্ক: স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI), পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (PNB), এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা (BOB), কানাড়া ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইউকো ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।

বেসরকারি ব্যাঙ্ক: ICICI ব্যাঙ্ক, HDFC ব্যাঙ্ক, Axis ব্যাঙ্ক-এর মতো বহু বেসরকারি ব্যাঙ্কও CSP পরিষেবা প্রদান করছে।

CSP খোলার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও নথি

পশ্চিমবঙ্গের যেকোনো নাগরিক CSP খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা এবং নথিপত্র প্রয়োজন:

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা:

বয়স: আবেদনকারীর ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর হতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: কমপক্ষে মাধ্যমিক পাশ (Class 10 Pass) হতে হবে।

কম্পিউটার জ্ঞান: বেসিক কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের প্রতি জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

স্থান ও পরিকাঠামো: আবেদনকারীর নিজস্ব বা ভাড়ার একটি দোকান ঘর (Shop/Premises) থাকা প্রয়োজন। যে জায়গায় CSP খোলার জন্য আবেদন করা হচ্ছে, সেখানে অবশ্যই ভালো ইন্টারনেট সংযোগ (Internet Connection) অর্থাৎ Wi-Fi থাকা বাধ্যতামূলক।

Related: জিও গ্রাহকদের ধাক্কা: গেমিং প্ল্যান থেকে ডেটা সুবিধা সরিয়ে নিল জিও!

প্রয়োজনীয় নথি:

  • ভোটার কার্ড (Voter ID) অথবা আধার কার্ড (Aadhaar Card)
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি (Passport Size Photos)
  • প্যান কার্ড (PAN Card)
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট (Police Verification Certificate)
  • ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট (Bank Statement)

CSP থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায়

একজন CSP এজেন্ট সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন:

  • লেনদেনের উপর কমিশন: টাকা জমা (Cash Deposit) বা উত্তোলনের (Cash Withdrawal) ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কমিশন।
  • নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা: প্রতিটি নতুন সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কমিশন।
  • বীমা বিক্রি: ব্যাঙ্কের বিভিন্ন বীমা পণ্য বিক্রির উপর কমিশন।
  • লোন প্রসেসিং ফি: গ্রাহকদের লোন পেতে সাহায্য করার জন্য কমিশন।
  • অন্যান্য পরিষেবা: মোবাইল রিচার্জ, DTH ও ইলেকট্রিসিটি বিল পেমেন্ট, PAN কার্ড তৈরি, এবং AEPS (আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম) ব্যবহার করে লেনদেনের মাধ্যমেও আয় করা যায়।

মাসিক আয়ের পরিমাণ

CSP থেকে মাসিক রোজগার মূলত সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের নীতি এবং গ্রাহক সংখ্যার উপর নির্ভর করে। তবে একজন এজেন্ট যদি সঠিকভাবে এবং দক্ষতার সাথে তাঁর মিনি শাখা বা CSP পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে তিনি কমপক্ষে মাসিক ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা আয় করতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে, যেখানে গ্রাহকের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি এবং লেনদেন নিয়মিত, সেখানে একজন CSP এজেন্ট মাসে ৪০ হাজার টাকা বা তারও বেশি রোজগার করার উদাহরণও রয়েছে।

এই উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করছে। আগ্রহীরা তাদের নিকটবর্তী ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন।

Related: একসঙ্গে ৩ মাসের রেশন! বর্ষার আগে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের, কারা কীভাবে পাবেন এই সুবিধা?