পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়: বছরের সেই দিনগুলোতে স্কুল ছিল শুধুই পড়াশোনার জায়গা নয়, ছিল আত্মপরিচয়ের পাঠশালাও। কত ছাত্রের জীবনে গেঁথে গেছে এমন মুহূর্ত, যা আজও মনে পড়লে এক অনির্বচনীয় গর্ব জন্মায়। যেমনটা ঘটেছিল পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেলায়। মাত্র ফিফ্থ ক্লাসে পড়ার সময়, গেরুয়া রঙের পোশাকে, সোনার মাকড়ি কানে, সদ্য পইতা পড়া এই কিশোরটির জীবনে এসেছিল এক অন্যরকম দিন। হঠাৎই স্কুলে আসেন ইন্সপেক্টর ভূদেব মুখোপাধ্যায়। ছোট্ট পাঁচকড়ির সাহসী উত্তর আর দেশীয় গর্বের ইঙ্গিত তখনই নজর কেড়েছিল সবার।
পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠশালা ছাড়িয়ে দেশের প্রতি টান (Patriotism towards Nation)
এই ছোট্ট ঘটনার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল ভবিষ্যতের এক সাহসী সাহিত্যিকের বীজ। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানস গঠিত হয়েছিল এমন এক যুগে, যেখানে যুক্তিবোধ (Rationalism), হিন্দুত্ব (Hindu Identity), স্বদেশপ্রেম (Patriotism) এবং সমাজকল্যাণের (Social welfare) ভাবনা সদ্য জন্ম নিচ্ছিল। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় লেখার মধ্যে স্পষ্ট ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শন যুগের প্রভাব। “মাটি, তুমি সত্যই মা-টি”—এই একটি বাক্যই তাঁর দেশাত্মবোধের গভীরতা তুলে ধরে। তিনি দেখিয়েছিলেন, কিভাবে দেশের মাটি, কৃষি, শিল্প এবং সংস্কৃতি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
Read More: বড় সিদ্ধান্ত! শ্রাবণে তারকেশ্বরে গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষেধ! ভক্তদের জন্য জারি নতুন নির্দেশিকা
পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের জাতীয় চেতনা জাগাতে সাহিত্য-সম্মিলনের ভূমিকা (Role of Literary Conference in National Awareness)
শুধু ব্যক্তিগত অনুভব নয়, পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাধারায় ছিল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। তাঁর মতে, সাহিত্য সম্মেলন (Literary Conference) ছিল দেশের ভাষা, সংস্কৃতি এবং জাতীয় গৌরবকে জাগ্রত করার অন্যতম মাধ্যম। “সাহিত্য-সম্মিলন আমাদিগকে বাঙ্গালিত্বের উপাদান জোগাইয়া দিতেছে”— এই কথায় তাঁর বিশ্বাস প্রতিফলিত। এমনকি তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, ভারতবর্ষের প্রতিটি অংশ যদি নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়ে পুষ্ট হয়, তবেই গোটা দেশের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশী শাসকের প্রতি বিরোধিতা এবং নিজের শিকড়ের প্রতি টান (Opposition to Foreign Rulers & Cultural Roots)
পাঁচকড়ি ছিলেন নির্ভীক। বিদেশী শাসকের প্রতি অবজ্ঞা ছিল তাঁর রচনার স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পরে তাঁর কলম আরও শানিত হয়ে ওঠে। *“যা রে বিদেশি বঁধু, আমি তোরে চাই না”—*এই পংক্তির মধ্যেই ধ্বনিত হয়েছে এক অনমনীয় প্রতিজ্ঞা। তিনি দেখিয়েছিলেন, সত্যিকারের স্বরাজ-প্রাপ্তি (Swaraj attainment) কেবল আইন মানার মধ্য দিয়ে নয়, বরং জাতীয় চেতনার জাগরণের মধ্য দিয়ে সম্ভব। একই সঙ্গে তিনি সতর্কও করেছিলেন যে, শুধু ইউরোপীয় আদর্শ অনুকরণ করে দেশাত্মবোধ শেখা যাবে না। বরং আমাদের নিজেদের প্রাচীন সংস্কারের মধ্যেই এর গভীর ভিত্তি রয়েছে, যেমন তর্পণ।
Read More: ২০২৫-এ শ্রাবণের প্রথম সোমবারে কীভাবে করবেন শিবপুজো? মন্ত্র, পদ্ধতি ও শুভ মুহূর্ত রইল এখানে
আজকের প্রেক্ষাপটে পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা কতটা প্রাসঙ্গিক? (Relevance of Panchkadi’s Thought in Today’s Context)
সর্বশেষে আসল তথ্য। বর্তমান সময়ে যখন বিশ্বায়নের স্রোতে অনেক সময় জাতীয় চেতনা ফিকে হয়ে যায়, তখন পাঁচকড়ির মতো চিন্তকের লেখা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়। দুর্গাপূজা, জগদ্ধাত্রীপূজার মধ্যেও তিনি যে স্বদেশ ভাবনার সঞ্চার দেখিয়েছিলেন, তা আজও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি জোগায়। তাঁর বিশ্বাস ছিল—দেশাত্মবোধ কোনও আমদানিকৃত ভাবনা নয়; বরং আমাদের প্রতিদিনের জীবনাচরণের মধ্যেই এর চর্চা হওয়া উচিত। আধুনিক ভারতবর্ষেও, পাঁচকড়ির লেখার আবেদন কমেনি, বরং নতুন প্রজন্মের সামনে এই মূল্যবোধ আরও বেশি করে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |