অবস্থার অবনতি! এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দিল্লির AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে

তিনি এক সময় ছিলেন বিচারপতির আসনে, বর্তমানে লোকসভার সাংসদ। রাজনীতির ময়দানে তাঁর পদার্পণ বহু বিতর্কের জন্ম দিলেও, আজ তাঁর কথা উঠছে একেবারে অন্য প্রেক্ষাপটে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) — এক পরিচিত নাম, যিনি বর্তমানে শুয়ে আছেন হাসপাতালের বেডে, জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে। সাধারণ মানুষের মনেও উঠছে একটাই প্রশ্ন — “উনি এখন কেমন আছেন?” গোটা রাজ্যজুড়ে একটাই চর্চা, একসময়ের কড়া বিচারপতি এখন বাঁচার লড়াইয়ে ব্রতী। এই লড়াই শুধু তাঁর নয়, সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর পরিবার, রাজ্যের রাজনীতি এবং শত শত সাধারণ মানুষের শুভকামনা। অনেকেই হয়তো জানতে চাইছেন — হঠাৎ কী ঘটল? কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তাঁকে কলকাতা থেকে দিল্লি পাঠানোর?

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ট্রান্সফার

কলকাতার উডল্যান্ডস (Woodlands Hospital) থেকে একেবারে দিল্লির এইমস (AIIMS Delhi)। মাঝের পথটা পেরোতে তৈরি করা হয়েছে গ্রিন করিডর (Green Corridor)। চিকিৎসকের দল, পরিবারের সদস্য এবং প্রশাসনিক সহায়তায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Abhijit Gangopadhyay) দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে। সাধারণ কোনো রোগী নন তিনি, তাই এই অপারেশন ছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল। উডল্যান্ডসে ভর্তির পর থেকেই ক্রমাগত চিকিৎসা চলছিল। যদিও তেমন উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায়, শেষমেশ দিল্লির এইমসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) নিজে এই তথ্য জানিয়েছেন, বলেছিলেন, “ওর পরিবার ও চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

অবশ্যই দেখবেন: অটো আপগ্রেডেশন স্কিম ভারতীয় রেলে(Indian Railways) নতুন সুবিধা: স্লিপার ভাড়ায় এবার এসি কোচে ভ্রমণ!

কী কারণে অসুস্থ (Health Condition & ICU Treatment of Abhijit Gangopadhyay)

১৪ জুন দুপুরে আচমকাই শুরু হয় পেটের তীব্র যন্ত্রণা ও বমির উপসর্গ (Abdominal Pain & Vomiting)। তৎক্ষণাৎ ভর্তি করা হয় উডল্যান্ডস হাসপাতালে। সেখানেই পরীক্ষার পর জানা যায়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আক্রান্ত হয়েছেন প্যানক্রিয়াটাইটিস (Pancreatitis) এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সেপসিসে (Gastrointestinal Sepsis)। দুটোই অত্যন্ত জটিল ও সংকটজনক অসুস্থতা। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড (Medical Board) গঠন করা হয়। এই বোর্ডে ছিলেন এন্ডোক্রিনোলজি, পালমোনোলজি, ক্রিটিক্যাল কেয়ার, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি এবং সার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। দেওয়া হয়েছিল লো-ফ্লো অক্সিজেন সাপোর্টও (Low Flow Oxygen Support)। কিন্তু সেসব চেষ্টার পরও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়াতেই শুরু হয় দিল্লি ট্রান্সফারের তোড়জোড়।

চিকিৎসার নতুন দিশা 

দিল্লির এইমস হাসপাতালে উন্নত পরিকাঠামো (Advanced Infrastructure in AIIMS) রয়েছে, যা এই ধরণের জটিল রোগের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী। সে কারণেই মেডিকেল বোর্ড ও অভিজিৎবাবুর পরিবার সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়। দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল, ভাইপো এবং গাড়ির চালকও। রাজনৈতিক মহলে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বেগ ছড়ায়। তৃণমূল বা বিজেপি— সব দলের নেতা-নেত্রীদের মুখেই একটাই কথা, “উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন।” দিল্লির চিকিৎসকেরাও আপাতত সমস্ত রিপোর্ট মূল্যায়ন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলেই জানা যাচ্ছে।

বিচারপতি থেকে সাংসদ— জনপ্রিয় মুখের লড়াই 

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি বিচারপতি হিসেবে একাধিক কড়া আদেশ এবং মন্তব্যের জন্য সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন, তিনি এই মুহূর্তে লড়ছেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন লড়াই। বিচারপতির আসন ছেড়ে বিজেপির হয়ে তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে সংসদে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু আজ রাজনীতি নয়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে তাঁর চিকিৎসার আপডেট। সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক মহল— সকলেই প্রার্থনা করছেন, এই অসম লড়াইয়ে যেন অভিজিৎবাবু জয়ী হন। কারণ রাজনীতির ময়দান তাঁকে এখনই ছেড়ে দিতে রাজি নয়, রাজ্যের মানুষও নয়। এই মুহূর্তে সবথেকে বড় চাওয়া — “উনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসুন।”

অবশ্যই দেখবেন: দৈনিক ৫০ টাকায় ৩৫ লক্ষ! পোস্ট অফিসের বাম্পার ‘গ্রাম সুরক্ষা’ স্কিম(Gram Suraksha Yojana)