শনিবার সকালে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল মিজোরাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আইজল বিমানবন্দর থেকে ভৈরবী-সাইরাং রেলপথ (Bairabi Sairang railway line)-এর উদ্বোধন করলেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে এই রাজ্য ভারতীয় রেল মানচিত্রে জায়গা পেল। শুধু তাই নয়, এদিন রাজ্যের প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস ‘সাইরাং-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস’ চালুর ঘোষণাও করা হয়েছে।
ভৈরবী-সাইরাং রেলপথের (Bairabi Sairang railway line) গুরুত্ব
এই নতুন রেলপথটি শুধু মিজোরামের মানুষের স্বপ্ন পূরণই নয়, বরং উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের পথে বড় পদক্ষেপ। প্রায় ৮,০৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই প্রকল্পে রয়েছে ৪৫টি সুরঙ্গ এবং ১৪২টি সেতু। এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ সাইরাং-এর কাছে অবস্থিত ১৪৪ নম্বর সেতু, যার উচ্চতা ১১৪ মিটার। এই রেলপথ তৈরি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে এবং মিজোরাম সরাসরি দেশের মূল রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও রাজনৈতিক বার্তা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু বছর ধরে দেশের কিছু রাজনৈতিক দল কেবল ভোটব্যাঙ্কের দিকে নজর দিয়েছে। এর ফলে মিজোরামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকেছে। তিনি জানান, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ভিন্ন। যাদের একসময় দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল, তাদের এখন মূলধারায় যুক্ত করা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও কম হয়নি। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দু’বছর পরে অবশেষে মণিপুর যাচ্ছেন, তবে তার আগে গেলে অনেক সংঘর্ষ এবং প্রাণহানি হয়তো রোধ করা যেত।
ভৈরবী-সাইরাং রেলপথে (Bairabi Sairang railway line)উন্নয়নের সম্ভাবনা
ভৈরবী-সাইরাং রেলপথ (Bairabi Sairang railway line) চালু হওয়ার ফলে মিজোরামের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে। কৃষিজাত পণ্য, বনজ দ্রব্য কিংবা হস্তশিল্প এখন সহজেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে। রাজ্যের শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষের ভ্রমণও হবে আরামদায়ক। এই রেলপথের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে মিজোরামের যোগাযোগ আরও মজবুত হবে। আগে যেখানে সড়কপথে দীর্ঘ যাত্রা ছিল বাধ্যতামূলক, এখন সেখানে ট্রেনের সহজলভ্যতা ভ্রমণকে দ্রুত ও সাশ্রয়ী করবে।
অবশ্যই দেখবেন: বৈশাখের দাবদাহে বিপর্যস্ত বাংলা! বৃষ্টি কবে হবে? দেখে নিন বিস্তারিত আবহাওয়ার পূর্বাভাস
প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ
এমন দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রেললাইন তৈরি করা সহজ কাজ ছিল না। একের পর এক সুরঙ্গ খনন, উঁচু সেতু নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রেলপথ ভবিষ্যতে পর্যটনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখন পর্যটকদের জন্য থাকবে আরও আরামদায়ক ও সহজ যাত্রার সুযোগ।
উদ্বোধনী দিনে বিশেষ আবহাওয়া
শনিবার সকালে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে পারেননি। তাই আইজল বিমানবন্দর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে রেলপথ উদ্বোধন করেন তিনি। সেখান থেকেই নির্বাচনী বার্তা দেন এবং উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
অবশ্যই দেখবেন: West Bengal Weather Today: দক্ষিণের ৩ জেলায় তাণ্ডবলীলা! কালবৈশাখীর দাপটে কাঁপছে বাংলা, কলকাতার জন্য জারি সতর্কতা!
ভৈরবী-সাইরাং রেলপথ (Bairabi Sairang railway line) উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মিজোরাম নতুন সম্ভাবনার পথে পা রাখল। শুধু একটি রেললাইন নয়, এটি একটি সেতুবন্ধন, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করবে। অর্থনীতি, শিক্ষা, পর্যটন—সব ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়বে। আগামী দিনে এই প্রকল্প সত্যিই মিজোরামকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
Disclaimer
এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এখানে উল্লেখিত প্রকল্পের খরচ, কাঠামো এবং রাজনৈতিক বক্তব্য সরকারি সূত্র ও সংবাদমাধ্যমের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা হয়েছে। সময়ের সঙ্গে এ ধরনের তথ্য পরিবর্তিত হতে পারে। পাঠকদের সর্বশেষ ও সরকারি তথ্যের জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
অবশ্যই দেখবেন: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি ও প্রসাদ পৌঁছাবে আপনার বাড়িতেও! মমতার চমকে দেওয়া ঘোষণা