India New Vice President: ভারতের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সবসময়ই রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্ব বহন করে। কারণ এই পদটি কেবলমাত্র সংবিধান অনুযায়ী সংসদের উচ্চকক্ষ অর্থাৎ রাজ্যসভার সভাপতির দায়িত্বই সামলায় না, বরং রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এবারের নির্বাচনে সেই আসনে দেখা যাবে এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণণকে। ৪৫২টি ভোট পেয়ে তিনি India New Vice President পদে নির্বাচিত হলেন। এই ফলাফলের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে বিরোধী শিবিরের একাংশও এনডিএ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আসুন ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক এবারের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সমস্ত খুঁটিনাটি।
India New Vice President Election: নির্বাচনের চিত্র
এবারের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মোট ৭৬৭ জন সাংসদ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে ৭৫২টি ভোট বৈধ ধরা হয় এবং ১৫টি ভোট অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণণ পেয়েছেন ৪৫২টি ভোট, আর বিরোধী শিবিরের প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি পেয়েছেন ৩০০ ভোট। নীচের টেবিল থেকে এক নজরে দেখা যাক ফলাফলের সারসংক্ষেপঃ
বিষয় | সংখ্যা |
---|---|
মোট সাংসদ | 767 |
বৈধ ভোট | 752 |
অবৈধ ভোট | 15 |
সি পি রাধাকৃষ্ণণ (NDA) | 452 |
বি সুদর্শন রেড্ডি (INDIA Bloc) | 300 |
জয়ের ব্যবধান | 152 |
এই ফলাফল থেকে বোঝা যাচ্ছে যে অন্তত ১৪ জন বিরোধী সাংসদ এনডিএ প্রার্থীর পক্ষে ক্রস ভোট করেছেন। রাজনৈতিক অঙ্কের দিক থেকে এটি একটি বড় বার্তা বহন করছে।
Congratulations to Shri C.P. Radhakrishnan Ji on being elected as the Vice President of India.
I firmly believe that your sagacity as a leader who has risen from the grassroots of the society and profound knowledge about administration will help us in bringing out the best in…
— Amit Shah (@AmitShah) September 9, 2025
কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন
ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদটি শুধু একটি সাংবিধানিক দায়িত্বই নয়, এটি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রভাব বিস্তার করে। কারণ উপ-রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার সভাপতির ভূমিকা পালন করেন। সংসদের উচ্চকক্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার দায়িত্ব এই পদেই বর্তায়। ফলে, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এটি মর্যাদাপূর্ণ একটি আসন। সি পি রাধাকৃষ্ণণ নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে এনডিএ আবারও প্রমাণ করল যে সংসদের ভিতরে তাদের প্রভাব এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী।
প্রার্থীরা কারা ছিলেন
এই নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুজন পরিচিত মুখ। একদিকে এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণণ, অন্যদিকে ইন্ডিয়া ব্লকের প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি।
বি সুদর্শন রেড্ডি
তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। আইন এবং সংবিধান সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা বিশাল। বিরোধী জোট তাঁকে প্রার্থী করেছিল এই ভেবে যে, তাঁর নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি সাংসদদের আকৃষ্ট করবে। তবে ফলাফলে তা বড়সড় সাফল্য আনতে পারেনি।
সি পি রাধাকৃষ্ণণ
এবার আসা যাক India New Vice President সি পি রাধাকৃষ্ণণের জীবনের দিকে। তিনি তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। খুব অল্প বয়স থেকেই তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
তিনি দু’বার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন কোয়েম্বাটুর থেকে। পরবর্তীতে ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলেছেন। প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতা বিজেপি-র কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হয়।
ফলাফলের তাৎপর্য
ফলাফল দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠছে, এনডিএ-এর নির্দিষ্ট সংখ্যা থেকে বেশি ভোট রাধাকৃষ্ণণ পেলেন কীভাবে? আসলে বিরোধী শিবিরের অন্তত ১৪ জন সাংসদ এনডিএ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেন। এটিকে বলা হচ্ছে ক্রস ভোটিং।এই ক্রস ভোটিং বিরোধী শিবিরে ভাঙনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে সংসদের ভিতরে এনডিএ-র অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফা ও নতুন নির্বাচন
গত ২১ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন হঠাৎ করেই উপ-রাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আগেই পদত্যাগ করেন। ফলে সংবিধান অনুযায়ী নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনেই জয়ী হন সি পি রাধাকৃষ্ণণ।
সি পি রাধাকৃষ্ণণের রাজনৈতিক যাত্রা
সি পি রাধাকৃষ্ণণের রাজনৈতিক যাত্রা ধাপে ধাপে গড়ে উঠেছে। আরএসএস-এ যুক্ত থাকার সময় থেকেই তিনি সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখিয়েছেন। পরে বিজেপির মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করে কোয়েম্বাটুর থেকে দু’বার সাংসদ নির্বাচিত হন।
রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও অর্জন করেন। তাঁর শান্ত স্বভাব, সংগঠন সামলানোর দক্ষতা এবং শৃঙ্খলাবোধ তাঁকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করে, সংসদের উচ্চকক্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তিনি উপযুক্ত প্রার্থী।
বিরোধীদের অবস্থান
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী শিবির পুরোপুরি এককাট্টা ছিল না। বিজু জনতা দল এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতির সাংসদরা ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। আবার যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১৪ জন এনডিএ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেন। এই বিভাজনই বিরোধীদের পরাজয়ের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবশ্যই দেখবেন: Mahila Rojgar Yojana: পুজোর আগেই মহিলাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১০,০০০ টাকা! ঘোষণা করল রাজ্য সরকার
ভবিষ্যতের দিকে নজর
India New Vice President সি পি রাধাকৃষ্ণণের সামনে এখন বড় দায়িত্ব হলো রাজ্যসভার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করানো এবং সংসদীয় কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে সামলানো তাঁর প্রধান দায়িত্ব হবে। রাজনৈতিক দিক থেকেও এই ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এনডিএ এখনো সাংসদ সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। বিরোধীদের একতা গড়ে তোলা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
অবশ্যই দেখবেন: New Aadhaar Card Rule: এবার আধার কার্ডে নয়া নিয়ম! আপনার জন্য বাধ্যতামূলক কি বদল আনল সরকার?
ভারতের নতুন উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে সি পি রাধাকৃষ্ণণের নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক জয় নয়, বরং প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার দিক থেকেও তা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অভিজ্ঞতা, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আগামী দিনে সংসদের কাজকর্মে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। India New Vice President হিসেবে তিনি কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবেন, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত এই ফলাফল এনডিএ-র জন্য বড় সাফল্য এবং বিরোধীদের জন্য বড় ধাক্কা।
Disclaimer
এই নিবন্ধে দেওয়া তথ্য বর্তমান সংবাদ প্রতিবেদন এবং সরকারি ঘোষণার ভিত্তিতে তৈরি। সময়ের সাথে সাথে কিছু তথ্য পরিবর্তিত হতে পারে। পাঠকদের অনুরোধ, সর্বশেষ তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম এবং সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন।
অবশ্যই দেখবেন: iPhone 17 Series: Apple আজ আনছে iPhone 17 Series—দাম জেনে চোখ কপালে উঠবে!