SIR-এর আগে বড় সিদ্ধান্ত! বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ীর ভাগ্য কমিশনের হাতে

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক গরমাগরম পরিবেশ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলই নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে, কর্মীদের কাজে নামাচ্ছে। তবে এর মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে এল কমিশন (Election Commission Of India)। মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকার যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, তাঁদের নাম যেন ...

Updated on:

Election Commission Of India

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক গরমাগরম পরিবেশ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলই নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে, কর্মীদের কাজে নামাচ্ছে। তবে এর মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে এল কমিশন (Election Commission Of India)। মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকার যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, তাঁদের নাম যেন কোনওভাবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়, সেই দিকেই জোর দিচ্ছে কমিশন।

পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকারের প্রশ্নে উদ্যোগ

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর মানুষ ভিন রাজ্যে কাজ করেন। নির্মাণ শ্রমিক, দৈনিক মজুর, ফ্যাক্টরির কর্মী—অনেকের জীবনজীবিকা নির্ভর করে বাইরে গিয়ে কাজ করার ওপর। রাজ্যের নির্বাচনী অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এত বড় সংখ্যক ভোটারকে যদি কোনও কারণে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে তা শুধু তাঁদের অধিকার খর্ব করবে না, নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলবে। তাই কমিশন (Election Commission Of India) এবার বিশেষ নজর দিতে চলেছে তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম ঠিকঠাকভাবে রাখা আছে কি না।

জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরির নির্দেশ

সূত্রের খবর, অন্তত ১০টি জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। সেই কারণেই সিইও দফতরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বুথ ধরে ধরে খোঁজ নিতে হবে কত পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে কারা ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। এর ফলে নিশ্চিত করা যাবে, তাঁদের নাম অন্য কোথাও, অন্য রাজ্যের তালিকায় নেই। আবার কেউ যদি ভিন রাজ্যের তালিকায় নাম তোলেন, তাহলে সেখানে নাম বাদ দিয়ে বাংলায় নাম যোগ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

QR কোড ব্যবহার করে নাম তোলার সুযোগ

এবারের পদক্ষেপের মধ্যে নতুনত্ব রয়েছে। কমিশন (Election Commission Of India) জানিয়েছে, যদি কোনও কারণে পরিযায়ী শ্রমিকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ চলে যায়, তাহলে QR কোড ব্যবহার করে আবার নাম তোলার ব্যবস্থা করা হবে। এতে প্রক্রিয়াটি হবে সহজ এবং দ্রুত। পাশাপাশি সিইও দফতর জেলা শাসকদের নির্দেশ দিয়েছে, কোনও ভোটার যাতে বিভ্রান্ত না হন এবং সঠিকভাবে তথ্য জমা দিতে পারেন, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।

পুজোর পর থেকেই শুরু হচ্ছে প্রক্রিয়া

খবর অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর পর অর্থাৎ অক্টোবর মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে এই বিশেষ প্রক্রিয়া। মূলত SIR বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এই উদ্যোগ কার্যকর করা হবে। তখন প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের তথ্য নথিভুক্ত করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ শ্রম ও প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলার প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই পদক্ষেপকে ঘিরে রাজনৈতিক তরফে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার মানুষ প্রায়ই নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। তাঁদের ভোটাধিকার যাতে কোনওভাবে ক্ষুণ্ণ না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে বিজেপিও সমানভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জানা গিয়েছে, বিজেপি প্রায় ৪৫ হাজার বুথ লেভেল ইনচার্জ বা BLI তৈরি করেছে। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কীভাবে কাজ করতে হবে এবং প্রতিদিনের রিপোর্ট দলের অ্যাপে পাঠাতে হবে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই উদ্যোগ

গণতন্ত্রে ভোট দেওয়া প্রতিটি নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। পরিযায়ী শ্রমিকরা অর্থনীতির বড় অংশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের শ্রম, তাঁদের রোজগারের টাকাই একদিকে পরিবারের চাকা ঘোরাচ্ছে, আবার অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে। সুতরাং তাঁদের ভোটাধিকার রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া নিঃসন্দেহে ইতিবাচক পদক্ষেপ। কমিশন (Election Commission Of India)-এর এই সিদ্ধান্তের ফলে আশা করা যায়, আগামী নির্বাচনে কোনও শ্রমিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চরম প্রস্তুতি। শাসক ও বিরোধী উভয় শিবিরই নিজেদের কর্মী বাহিনীকে কাজে নামিয়েছে। তবে এর পাশাপাশি কমিশন (Election Commission Of India)-এর এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে দিল, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাখতেই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে তারা। এখন দেখার বিষয়, বাস্তবে এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হয় এবং কতটা সুবিধা পান পরিযায়ী শ্রমিকরা।

Disclaimer

এই প্রতিবেদনটি বিভিন্ন সংবাদসূত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে উল্লিখিত তথ্যের যথার্থতার জন্য মূল সূত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা উচিত। পাঠকদের উদ্দেশে অনুরোধ, শুধুমাত্র এই প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না।

অবশ্যই দেখবেন: লিটার প্রতি ২ টাকা দাম কমাচ্ছে মাদার ডেয়ারি; দাম কমছে অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যেরও! জানুন বিস্তারিত

Anamika Sen

দেশ-বিদেশের খবর, অর্থনীতি, জ্যোতিষ, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য এবং টেকনোলজির জগৎ—এই সব বিষয় নিয়ে লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
WhatsApp Icon