Jeet Adani Wedding: নতুন বছরের শুরুতেই দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গৌতম আদানির ছেলে জিত আদানির বিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে। তবে চমকের কারণ বিয়ের চাকচিক্য নয়, বরং এক মহৎ উদ্যোগ। যেখানে মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রি-ওয়েডিং ও বিয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারকাদের মেলা বসেছিল, সেখানে জিত আদানির বিয়ে ছিল তুলনামূলকভাবে সাদামাটা। তবে এই বিশেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে গৌতম আদানি এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—তিনি সমাজসেবায় ১০,০০০ কোটি টাকা দান করেছেন।
১০,০০০ কোটি টাকার অনুদান: দেশের জন্য অনন্য দান
আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির কনিষ্ঠ পুত্র জিৎ আদানি হীরা ব্যবসায়ী জেমিন শাহের কন্যা দিভার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আহমেদাবাদের ঐতিহ্যবাহী রীতিতে সম্পন্ন হয় এই বিয়ে। এক্স-এ (প্রাক্তন টুইটার) পোস্ট করে গৌতম আদানি নববধূকে ‘ডটার ডিভা’ বলে সম্বোধন করেন এবং এই বিশেষ মুহূর্তে ১০,০০০ কোটি টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দেন।
গৌতম আদানি এক্স-এ লেখেন, “ঈশ্বরের আশীর্বাদে জিৎ এবং ডিভা বিবাহের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। আহমেদাবাদে ঘনিষ্ঠ পরিজনদের উপস্থিতিতে এটি একটি ছোট এবং ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান ছিল। আমরা সকলকে আমন্ত্রণ জানাতে পারিনি, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে, আপনাদের আশীর্বাদ এবং শুভেচ্ছাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে আদানি পরিবারের উদ্যোগ
ব্যবসায়ী গৌতম আদানি শুধুমাত্র বিয়ে সাদামাটা রাখেননি, বরং সমাজসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর প্রতিশ্রুত ১০,০০০ কোটি টাকার অনুদান মূলত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নের অবকাঠামো তৈরিতে ব্যয় করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বমানের হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, কে-১২ স্কুল এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে দক্ষতা একাডেমির একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে।
‘মঙ্গল সেবা’: এক অনন্য মানবিক উদ্যোগ
বিয়ের আগেই আদানি পরিবার ‘মঙ্গল সেবা’ নামক একটি কর্মসূচির ঘোষণা করেছিল, যার আওতায় প্রতিবছর ৫০০ জন প্রতিবন্ধী মহিলাকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। জিত আদানি তার বিয়ের মাত্র দুই দিন আগে ২১ জন নববিবাহিত প্রতিবন্ধী মহিলা ও তাদের স্বামীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই মহৎ উদ্যোগের কথা প্রকাশ করে গৌতম আদানি বলেন, “আমার ছেলে জিৎ এবং পুত্রবধূ ডিভা এক মহান প্রতিশ্রুতি নিয়ে নতুন জীবন শুরু করছে।”
আদানি পরিবারের সামাজিক প্রতিশ্রুতি
গৌতম আদানি বরাবরই জনহিতকর কাজে বিশেষভাবে উদ্যোগী। তাঁর মতে, ‘সেবাই ভক্তি, সেবাই প্রার্থনা এবং সেবাই চূড়ান্ত বাস্তবতা।’ এই দান শুধুমাত্র একটি সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জিত আদানির বিয়ে এবং তার সঙ্গে আদানি পরিবারের এই দানের মহৎ উদ্যোগ সমাজে এক ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। দেশের উন্নয়নে এই ধরনের পদক্ষেপ শুধুমাত্র ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, মানবিকতার প্রকৃত রূপও তুলে ধরে।