Happy Vishwakarma Puja 2025 Wishes: বাংলার আকাশে যখন শরতের সাদা মেঘ ভেসে বেড়াতে শুরু করে, তখনই মন কেমন করে ওঠে দুর্গাপুজোর জন্য। কিন্তু দুর্গোৎসবের আগমনী ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় যে বিশেষ দিনটি, সেটি হল বিশ্বকর্মা পুজো। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে এই পুজো পালিত হয়। দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার আরাধনা করা হয় শিল্পক্ষেত্রে, কলকারখানায়, এমনকি অনেক ঘরেও।
বিশ্বাস করা হয়, ভগবান বিশ্বকর্মা দেবতাদের স্থপতি। ঋগবেদে তাঁকে বলা হয়েছে সর্বদর্শী ও সর্বজ্ঞ। স্বর্গলোকের প্রাসাদ থেকে শুরু করে সুদর্শন চক্র কিংবা মহাদেবের ত্রিশূল—সবই তাঁর সৃষ্টি। তাই তাঁকে দেবশিল্পী নামে অভিহিত করা হয়।

২০২৫ সালে বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার। এদিন বাংলার নানা প্রান্তে সকাল থেকেই কারখানায়, কর্মশালায়, দোকানে, অফিসে পূজার আয়োজন হবে। কর্মজীবনে সাফল্য, উন্নত ভবিষ্যৎ, নিরাপদ কাজের পরিবেশ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই দিনে প্রার্থনা করা হয়।
বিশ্বকর্মা পুজোর মাহাত্ম্য
অন্য সব পুজোর সময় নির্ভর করে চাঁদের গতির উপর, কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজো হয় সূর্যের গতির উপর ভিত্তি করে। যখন সূর্য সিংহ রাশি থেকে কন্যা রাশিতে প্রবেশ করে, তখনই শুরু হয় এই উৎসব। মনে করা হয়, তখনই দেবতারা নিদ্রা থেকে জেগে ওঠেন।
বাংলায় এই দিনটি পড়ছে ৩১ ভাদ্র। অনেকে এই দিনটিকে শিল্প ও কারিগরের উৎসবও বলেন। কারণ কামার, কুমোর, তাঁতি, চাষি—সবাই এই দিনে বিশ্বকর্মার আরাধনা করেন। এটি আসলে কর্মের মাহাত্ম্যের দিন।
বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা (Happy Vishwakarma Puja 2025 Wishes)
বিশেষ দিনে আমরা সবাই কাছের মানুষদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আগেকার দিনে বাড়িতে গিয়ে আশীর্বাদ নেওয়া বা দেওয়ার রীতি থাকলেও এখন অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বার্তা পাঠান। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনেও এর ব্যতিক্রম হয় না। কেউ বন্ধুকে লেখেন ভগবান বিশ্বকর্মা আপনার পেশাদার জীবনে সাফল্য আনুন, কেউ আবার পরিবারের সদস্যদের জানান দেবশিল্পীর আশীর্বাদে জীবন উজ্জ্বল হয়ে উঠুক। অনেকে কবিতার ছলে লেখেন, সত্যযুগে তুমি স্বর্গ সাজালে, তেতা যুগে লঙ্কা বানালে, দাপরে মথুরা নগরী, কলিতে সাজালে ভবপুরী, জয় বাবা বিশ্বকর্মা। এসব বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা (Happy Vishwakarma Puja 2025 Wishes) শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এগুলো আসলে শুভ কামনা। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি, পরিবারের মঙ্গল আর ব্যক্তিগত জীবনে শান্তি কামনা করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
🌸 ১. ভগবান বিশ্বকর্মা আপনার কর্মজীবনকে সাফল্য ও সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে তুলুন। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫।
🌸 ২. বিশ্বকর্মা পুজোর পবিত্র দিনে আপনাদের সবার জীবনে আনন্দ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসুক। আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল।
🌸 ৩. দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার চরণে প্রণাম জানাই। তাঁর আশীর্বাদে সবার জীবন হোক সুখময় ও আলোকিত। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
🌸 ৪. কামার, কুমোর, তাঁতি কিংবা চাষি— আমরা সবাই বিশ্ববাসী। কর্মই আমাদের সত্য ধর্ম। জয় হোক দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার।
🌸 ৫. পরিবারের সকল সদস্যকে জানাই বিশ্বকর্মা পুজোর আন্তরিক শুভেচ্ছা। প্রভুর আশীর্বাদে সবার জীবন হোক উজ্জ্বল ও কর্মময়।
🌸 ৬. প্রতিটি শিল্পকর্মে উন্নতি ও সফলতা আসুক আপনার জীবনে। এই বিশেষ দিনে সেই শুভকামনাই জানাই। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
🌸 ৭. সত্যযুগে সাজালেন স্বর্গ, ত্রেতায় নির্মাণ করলেন সোনার লঙ্কা, দ্বাপরে গড়লেন মথুরা নগরী, আর কলিযুগে সাজালেন ভবপুরী। জয় হোক বিশ্বকর্মার।
🌸 ৮. কর্মই ধর্ম, কর্মই ঈশ্বর— বিশ্বকর্মা পুজো আমাদের সেই শিক্ষাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
🌸 ৯. যে ভক্ত বিশ্বকর্মার নাম নেন, তিনি অবশ্যই কর্মফল লাভ করেন। আপনাকে জানাই বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা।
🌸 ১০. বিশ্বকর্মা পুজোর এই পবিত্র দিনে আপনার কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধা আরও বৃদ্ধি পাক। দেবশিল্পীর আশীর্বাদে কর্মজীবন হোক সফল।
🌸 ১১. ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে চারিদিকে আনন্দের জোয়ার। সকল শিল্পের স্রষ্টা বিশ্বকর্মাকে জানাই অগাধ শ্রদ্ধা। জয় বাবা বিশ্বকর্মা।
🌸 ১২. ভগবান বিশ্বকর্মা আপনার সমস্ত স্বপ্ন ও আশা পূর্ণ করুন। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
🌸 ১৩. যে জন করে বিশ্বকর্মার অর্চনা, তাঁর কর্মচেতনা হয় পরিপূর্ণ। শেষ ভাদরে সেই দেবশিল্পীকে জানাই অগাধ প্রণাম। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
🌸 ১৪. স্বর্গবাস, দ্বারকা নগরী, সুদর্শন চক্র কিংবা মহাদেবের ত্রিশূল— সবকিছুর স্রষ্টা তিনি দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা। তাঁর আশীর্বাদে আপনার পরিবার হোক সুন্দর ও সমৃদ্ধ।
🌸 ১৫. বিশ্বকর্মা পুজোর শুভক্ষণে আপনার ব্যবসায় উন্নতি হোক, জীবনে আসুক সাফল্যের নতুন দিগন্ত। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
🌸 ১৬. প্রভু বিশ্বকর্মা আপনার জীবনে সর্বদা পাশে থাকুন, প্রতিটি কাজে সাফল্য আসুক।
🌸 ১৭. বিশ্বকর্মার আশীর্বাদে আপনার সকল মনোবাসনা পূর্ণ হোক। আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে।
🌸 ১৮. বিশ্বকর্মা এক আশ্চর্য সৃষ্টিকর্তা, তাঁর জ্ঞানই মহাবিশ্বের মূল শক্তি। তিনি দান করেন তেজ, শক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রেরণা। শুভ বিশ্বকর্মা পুজো।
কীভাবে বার্তা পাঠাবেন
যারা অফিসে কাজ করেন তারা সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে পেশাদার শুভেচ্ছা পাঠাতে পারেন। যেমন, ভগবান বিশ্বকর্মা আপনার কর্মজীবনকে সাফল্যে ভরিয়ে তুলুন। আবার যারা পরিবার বা বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানাতে চান, তারা আরও ব্যক্তিগত ভাষা ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, দেবশিল্পীর আশীর্বাদে তোমার জীবন আলোয় ভরে উঠুক। আজকের দিনে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে সুন্দর ছবি বা কোটস দিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা (Happy Vishwakarma Puja 2025 Wishes) জানানো খুব সহজ হয়ে গেছে।

বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে আবহ
কলকারখানায় এদিন ছুটি থাকে, অনেক জায়গায় উৎসবের আমেজ থাকে। ভোর থেকেই কর্মীরা পূজা করেন তাঁদের মেশিন, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের। বিশ্বাস করা হয়, এতে কাজের গতি বাড়ে এবং দুর্ঘটনা কমে। গ্রামে গ্রামে আবার এই দিন মেলা বসে, অনেকেই নতুন জামাকাপড় কেনেন। এদিন আসলে শ্রম ও সৃজনশীলতার জয়গান। তাই কবি যেমন বলেছেন কর্মই ধর্ম, কর্মই ঈশ্বর। বিশ্বকর্মা পুজো সেই সত্যই আমাদের মনে করিয়ে দেয়।

বিশ্বকর্মা পুজো শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি কর্মজীবনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের দিন। ভাদ্র মাসের শেষ দিনে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে, শিল্পক্ষেত্রে, কর্মশালায়, আনন্দে ভরে ওঠে পরিবেশ। আমরা সবাই চাই আমাদের কাজ সফল হোক, পরিবার সুখী থাকুক আর জীবন সমৃদ্ধ হোক। তাই এই দিনে পাঠানো প্রতিটি বার্তাই হয়ে ওঠে শুভ কামনা। তাই এ বছরও আমরা সবাই একে অপরকে জানাব বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা (Happy Vishwakarma Puja 2025 Wishes)।
FAQ
প্রশ্ন ১: বিশ্বকর্মা পুজো কবে পালিত হবে ২০২৫ সালে?
উত্তর: এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার (৩১ ভাদ্র)।
প্রশ্ন ২: বিশ্বকর্মা দেবতার পরিচয় কী?
উত্তর: তিনি দেবতাদের স্থপতি বা দেবশিল্পী হিসেবে পরিচিত। স্বর্গ, দ্বারকা, সুদর্শন চক্র, মহাদেবের ত্রিশূল—সবই তাঁর সৃষ্টি।
প্রশ্ন ৩: কেন বিশ্বকর্মা পুজো করা হয়?
উত্তর: কর্মক্ষেত্রে সাফল্য, নিরাপত্তা ও উন্নতির জন্য ভগবান বিশ্বকর্মার আরাধনা করা হয়।
প্রশ্ন ৪: বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা কীভাবে জানানো যায়?
উত্তর: পরিবার ও বন্ধুদের আন্তরিক বার্তা, ছবি বা কোটসের মাধ্যমে সহজেই জানানো যায়।
Disclaimer
এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর তারিখ ও মাহাত্ম্য সম্পর্কিত তথ্য পঞ্জিকা এবং প্রচলিত বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। পাঠকদের অনুরোধ, পূজার সঠিক সময় ও নিয়ম জানতে স্থানীয় পঞ্জিকা বা পুরোহিতের পরামর্শ নিন।
অবশ্যই দেখবেন: ভাদ্র মাসে রেঁধে খেতে হবে আশ্বিন মাসে! কেন এমন নিয়ম রান্নাপূজায়? জানুন বিস্তারিত




