Indian Railways: ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান! ১১৯ কিমি টানেল ও ৯২৭ সেতু পেরিয়ে অবিশ্বাস্য ট্রেন চালু করল ভারতীয় রেল

আনামিকা সেন, কলকাতা: ভারতের রেল (Indian Railways) যাত্রার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রার রোমাঞ্চ তো অনেকেই উপভোগ করেছেন, তবে এবার ভারতের রেল পরিষেবায় যুক্ত হতে চলেছে এমন এক ট্রেন যাত্রা, যা আপনার জীবনের সবচেয়ে মেমোরেবল সফরের অভিজ্ঞতা দিতে পারে। টানেলের ভিতর দিয়ে ছুটবে ট্রেন, জানালার বাইরে বরফে ঢাকা পাহাড় আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য—সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের সফর। আর এই অনন্য অভিজ্ঞতার নাম: উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্প।

উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্প

🔍 তথ্যের ধরন	📌 বিবরণ
📅 শুভ সূচনা	১৯ এপ্রিল ২০২৫
🎤 উদ্বোধন করবেন	প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
📍 রেল রুট	উধমপুর → শ্রীনগর → বারামুলা
🚆 মোট রুটের দৈর্ঘ্য	২৭২ কিমি
🚇 টানেল অংশ	১১৯ কিমি (ভারতের মধ্যে অন্যতম দীর্ঘতম টানেল)
🌉 সেতুর সংখ্যা	৯২৭ টি (ছোট-বড় মিলিয়ে)
🕒 সময় লাগবে	মাত্র ৩ ঘন্টা

---

প্রকল্পের ইতিহাস ও পরিপ্রেক্ষিত:

এই ঐতিহাসিক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। দীর্ঘ ২৮ বছরের ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পর অবশেষে সেটি রূপ নিতে চলেছে বাস্তবে। প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ ভক্তিভরে বৈষ্ণো দেবীর দর্শনে আসেন। কিন্তু জম্মু থেকে শ্রীনগরে পৌঁছাতে হলে আগে সড়কপথই ছিল একমাত্র ভরসা, যার জন্য ৭ ঘন্টারও বেশি সময় লাগত। শীতকালে বরফপাত হলে সেই সময় আরও বেড়ে যেত।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এবার পাহাড়ি দুর্গম রাস্তায় আর সময় নষ্ট নয়, ৩ ঘণ্টাতেই পৌঁছে যাওয়া যাবে জম্মু থেকে বারামুলা।

🚄 উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য:

বৈশিষ্ট্য	বিবরণ
রুটের মোট দৈর্ঘ্য	২৭২ কিমি
টানেল পথ	১১৯ কিমি (ভারতের মধ্যে দীর্ঘতম টানেল রুট)
সেতুর সংখ্যা	৯২৭ টি (ছোট বড় মিলিয়ে)
উচ্চতম সেতু	চেনাব রেল সেতু (আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার বেশি উঁচু)
ভূমিকম্প প্রতিরোধী	৮ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পেও টিকে থাকবে সেতু
মোট টানেলের সংখ্যা	৩৬ টি
নির্মাণে ব্যবহৃত স্টিল	৩০ হাজার টন

---

চেনাব রেল সেতু — প্রকল্পের রত্ন:

এই প্রকল্পের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো চেনাব নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুটি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু রেল সেতু হিসেবে স্বীকৃত। আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার বেশি এই সেতুতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টন উচ্চমানের স্টিল। নির্মাণ এমনভাবে করা হয়েছে যাতে ভূমিকম্প, শক্তিশালী ঝড় এমনকি উগ্র আবহাওয়াতেও কোনো ক্ষতি না হয়।

বরফে ঢাকা প্রাকৃতিক দৃশ্য — রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা

এই ট্রেনে জানালা দিয়ে দেখা যাবে কাশ্মীরের বরফে মোড়া উপত্যকা, তুষারে ঢাকা পাহাড়, ঝরনা আর সবুজ চারণভূমি। ১১৯ কিমি টানেলের ভিতর দিয়েও চলবে ট্রেন। আলোর খেলা আর টানেলের অভ্যন্তরের আধুনিক প্রযুক্তি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে যাত্রীদের।

এই রুটে সফরের উপকারিতা:

• সময় সাশ্রয়: সড়কপথে যেখানে ৭-৮ ঘন্টা লাগত, সেখানে মাত্র ৩ ঘণ্টায় যাত্রা শেষ
• নিরাপত্তা: ভূমিকম্প ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা
• যোগাযোগ উন্নয়ন: জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে আরও সহজ রেল যোগাযোগ
• পর্যটন উন্নয়ন: কাশ্মীর ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে
• অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি: এই সংযোগ পথ কাশ্মীরের আর্থিক উন্নয়নেও ভূমিকা নেবে

ভারতের রেল পরিষেবায় এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রযুক্তি, পরিকল্পনা ও দেশপ্রেমের এক দুর্দান্ত মিশেল এই উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্প। যারা প্রকৃতি ভালোবাসেন এবং ট্রেন সফরের রোমাঞ্চ পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এই রুট এক আবশ্যিক গন্তব্য হয়ে উঠবে নিঃসন্দেহে। প্রতিদিন সকালে দৈনিক আপডেট পেতে অবশ্যই গুগল করুন-Tollywood Online

অবশ্যই দেখবেন: Sealdah Local Train Ladies Coach Update: শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে বড় সিদ্ধান্ত! বাড়ছে মহিলা কামরার সংখ্যা, কেন জানলে অবাক হবেন!