দুয়ারে প্রসাদ প্রকল্পে বড় পরিবর্তন! জগন্নাথের মহাপ্রসাদ বিলিতে আর নেই সরকারের ভর্তুকি

পূজো মানেই ভোগ, আর ভোগ মানেই প্রসাদ। এবার সেই জগন্নাথ দেবের প্রসাদ (Jagannath Temple Prasad) পৌঁছতে চলেছে ঘরে ঘরে, একেবারে সরকারের উদ্যোগে। দীঘা জগন্নাথ মন্দিরের শুভ উদ্বোধনের পরে, এবার প্রসাদ বিতরণে রাজ্য সরকারের এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে। অক্ষয় তৃতীয়ার (৩০ এপ্রিল, ২০২৫) দিনে নতুনভাবে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার ...

Updated on:

Jagannath Temple Prasad

পূজো মানেই ভোগ, আর ভোগ মানেই প্রসাদ। এবার সেই জগন্নাথ দেবের প্রসাদ (Jagannath Temple Prasad) পৌঁছতে চলেছে ঘরে ঘরে, একেবারে সরকারের উদ্যোগে। দীঘা জগন্নাথ মন্দিরের শুভ উদ্বোধনের পরে, এবার প্রসাদ বিতরণে রাজ্য সরকারের এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে। অক্ষয় তৃতীয়ার (৩০ এপ্রিল, ২০২৫) দিনে নতুনভাবে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার খোলার পরে, এবার শুরু হতে চলেছে বিশাল প্রসাদ বিলি প্রকল্প, যা বাংলার ইতিহাসে প্রথমবার

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

দীঘা জগন্নাথ মন্দির প্রসাদ বিতরণ: কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

  • ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি জগন্নাথ ভক্তদের জন্য এক বিশেষ আশীর্বাদ।
  • সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি জনসংযোগ বৃদ্ধির এবং জনমনে ভক্তি সঞ্চারের অন্যতম মাধ্যম।
  • প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি রেশন ডিলারদের ব্যবহার করে সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থার দক্ষতা প্রমাণ করার একটি প্রয়াস।

কবে থেকে শুরু হচ্ছে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিতরণ? | When will the distribution of Jagannath Temple Prasad start?

নবান্ন সূত্রে খবর অনুযায়ী, যদি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোয়, তাহলে আগামী ১৭ জুন ২০২৫ থেকে শুরু হবে ঘরে ঘরে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিতরণ (Jagannath Temple Prasad)। আর এই প্রকল্প উল্টোরথ (২৭ জুন) এর আগেই সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য সরকার ও মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

কীভাবে বাড়িতে পৌঁছবে জগন্নাথ প্রভুর প্রসাদ?

এই প্রসাদ সরবরাহের প্রক্রিয়া হবে একেবারে সরকারি উদ্যোগে, একাধিক স্তরে পরিকল্পনা করে। এই প্রসাদ ‘দুয়ারে রেশন’ মডেলে গ্রাহকদের হাতে তুলে দেবেন রেশন ডিলাররা

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

অবশ্যই দেখবেন: দুয়ারে প্রসাদ প্রকল্পে বড় পরিবর্তন! জগন্নাথের মহাপ্রসাদ বিলিতে আর নেই সরকারের ভর্তুকি

➤ কাজের কাঠামো:

  1. সোমবার থেকে শুক্রবার: দুয়ারে রেশন মডেলে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে প্রসাদ।
  2. শনিবার ও রবিবার: রেশন দোকানে গেলে সেখান থেকেই পাওয়া যাবে প্রসাদ।

রেশন ডিলারদের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: বিনামূল্যে কাজ করবেন

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, রেশন ডিলাররা এই কাজের জন্য কোনও রকম পারিশ্রমিক নেবেন না। তাঁদের বক্তব্য, “স্বয়ং জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিলি করতে যদি আমরা টাকা নেই, তাহলে সেটা ধর্মদোষ হবে।” তাই রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত প্রতি প্যাকেট এক টাকা ভর্তুকি নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁরা।

অবশ্যই দেখবেন: বিদ্যুতের মোটা বিল দেখে টেনশনে? মাত্র ৪টি কৌশলেই বিল হবে অর্ধেক!

➤ ভর্তুকির অঙ্ক:

  • রাজ্যে প্রায় ১১ কোটি রেশন কার্ডধারী রয়েছেন।
  • প্রতিটি প্রসাদ প্যাকেটের জন্য সরকার বরাদ্দ করেছে ১ টাকা
  • ফলে মোট ১১ কোটি টাকা ভর্তুকি পাওয়ার কথা ডিলারদের
  • কিন্তু সেই পুরো অর্থ ডিলাররা নিচ্ছেন না, যা এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত।

কী থাকছে জগন্নাথ দেবের প্রসাদে?

এই বিশেষ মহাপ্রসাদের (Jagannath Temple Prasad) মধ্যে থাকছে প্যাঁড়া ও গজা, যা তৈরি হবে দীঘা জগন্নাথ মন্দিরের ক্ষীর ব্যবহার করে। প্রতিটি প্যাকেটেই মিলবে সেই পবিত্র ভোগমিশ্রিত মিষ্টান্ন।

➤ প্রস্তুতির প্রক্রিয়া:

  1. প্রত্যেক পৌরসভা/পুরসভা ঠিক করবে এলাকার কোন স্বনামধন্য মিষ্টির দোকান থেকে তৈরি হবে এই প্রসাদ।
  2. দীঘা মন্দিরের প্রসাদে ব্যবহৃত ক্ষীর পাঠানো হবে সেসব দোকানে।
  3. ক্ষীর মিশিয়ে তৈরি হবে বিশেষ ধরনের প্যাঁড়া ও গজা, যা আলাদা করে চিহ্নিত করা থাকবে।

কীভাবে প্যাকেজিং করা হবে?

প্রসাদ থাকবে সুরক্ষিত প্যাকেটে, যাতে লেখা থাকবে:

  • প্রস্তুতকারকের নাম
  • প্রস্তুতির তারিখ
  • ‘Best Before’ তারিখ, অর্থাৎ কতদিন পর্যন্ত প্রসাদ ভালো থাকবে
  • সরকারি ছাপ এবং “Jagannath Mahaprasad” ট্যাগ

এছাড়া প্রসাদ যাতে গুণমান ঠিক থাকে এবং দূষণমুক্ত থাকে, সেই বিষয়ে বিশেষভাবে নজর রাখা হবে।

গুণমান নিশ্চিত করতে ফুড ইন্সপেক্টর নিয়োগ

প্রসাদের গুণমান বজায় রাখতে প্রতিটি এলাকার জন্য ফুড ইন্সপেক্টর নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা প্রতিদিন মিষ্টির দোকান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করবেন। এছাড়া রেশন ডিলারদের পক্ষ থেকেও আবেদন জানানো হয়েছে, যেন প্রতিটি প্যাকেটে পরিষ্কারভাবে লেখা থাকে প্রসাদ কতদিন পর্যন্ত খাওয়ার যোগ্য।

রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক প্রস্তুতি

এই প্রকল্প সফলভাবে চালাতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসকদের (District Magistrate) সঙ্গে বৈঠক করে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলা, ব্লক ও ওয়ার্ড স্তরে লোকাল লজিস্টিক ও মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। কাজ শুরু হবে ধাপে ধাপে:

  • প্রথম ধাপে শহরাঞ্চলের বাড়ি বাড়ি প্রসাদ পৌঁছবে
  • পরবর্তী ধাপে গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হবে প্রসাদ

ধর্মীয় আবেগ ও সরকারী উদ্যোগের সম্মিলন

এই প্রকল্প শুধুমাত্র সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থার একটি অভিনব দৃষ্টান্ত নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও ঐতিহাসিক উদ্যোগ। বাংলা জুড়ে ভক্তদের মধ্যে এই প্রকল্পকে ঘিরে তৈরি হয়েছে আবেগ, ভক্তি ও কৃতজ্ঞতা।

দীঘা জগন্নাথ মন্দির প্রসাদ বিতরণ প্রকল্প ২০২৫ (Jagannath Temple Prasad) নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি অভিনব এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ। রেশন ডিলারদের সহযোগিতা, সরকারি প্রশাসনের সংগঠিত পরিকল্পনা, এবং ধর্মীয় আবেগ – সব মিলিয়ে এটি হতে চলেছে একটি মাইলফলক প্রকল্প। আগামী ১৭ জুন থেকে শুরু হওয়া এই মহাপ্রসাদ বিতরণ রথযাত্রার আগেই শেষ হবে, আর বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছবে জগন্নাথ প্রভুর আশীর্বাদ