শহরে হঠাৎ বন্যা! KP-Boat Club Road-এ জল বাড়ছে, দায় নদীসৈকত প্রকল্পের?

KP-Boat Club Road: বর্ষা নামলেই শহরের সাধারণ মানুষের মনে প্রথম আতঙ্ক তৈরি হয় জলস্তর (Water Level) বৃদ্ধি নিয়ে। হঠাৎ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি কীভাবে জীবনের ছন্দকে নষ্ট করে দেয়, তা শহরের প্রত্যেক বাসিন্দারই জানা। অফিস যাওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি ফেরা, স্কুলের পড়াশোনা থেকে গাড়ি পার্কিং—সব ক্ষেত্রেই অস্বস্তির চিহ্ন ফুটে ...

Updated on:

KP-Boat Club Road

KP-Boat Club Road: বর্ষা নামলেই শহরের সাধারণ মানুষের মনে প্রথম আতঙ্ক তৈরি হয় জলস্তর (Water Level) বৃদ্ধি নিয়ে। হঠাৎ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি কীভাবে জীবনের ছন্দকে নষ্ট করে দেয়, তা শহরের প্রত্যেক বাসিন্দারই জানা। অফিস যাওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি ফেরা, স্কুলের পড়াশোনা থেকে গাড়ি পার্কিং—সব ক্ষেত্রেই অস্বস্তির চিহ্ন ফুটে ওঠে জল জমার কারণে। ঠিক এই বাস্তবতার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে আরও একটি নতুন চিন্তা, যা এবার মুলা-মুথা নদীর ধারের মানুষের জীবনে ভয়াবহতা তৈরি করছে।

শহরের উন্নয়ন না কি নতুন সংকট 

শহরের রূপ বদলাতে নানা ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প (Development Project) নেওয়া হচ্ছে। রাস্তা, সেতু, নদীর ধারে সৌন্দর্যায়ন—সবই মানুষের সুবিধার জন্য। কিন্তু প্রতিটি কাজেরই থাকে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এই উন্নয়ন কি তাদের নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে, নাকি উল্টে তাদের বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে? গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির পর নদীর ধারে যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে, তাতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।

জলস্তর বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ 

পুনে-র কোরেগাঁও পার্ক (Koregaon Park), বোট ক্লাব রোড (Boat Club Road) এবং নর্থ মেইন রোডের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মাত্র ২-৩ দিনের বৃষ্টিতেই নদীর জলস্তর (River Water Level) অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তাদের অভিযোগ, নদী তীরবর্তী উন্নয়ন (River Front Development – RFD) প্রকল্প নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহকে আটকে দিয়েছে। এর ফলে মুষলধারে বৃষ্টির সময় জল জমে যাচ্ছে এবং আশেপাশের হাউজিং সোসাইটিগুলিতে (Housing Societies) পানি ঢুকে পড়ছে। বাসিন্দাদের কথায়, অতীতে বছরে ২-৩ বার এই সমস্যা দেখা দিলেও এখন ঘন ঘন ঘটছে, যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

নাগরিকদের ক্ষোভ ও অভিজ্ঞতা 

১৯ আগস্ট রাতে বেশ কয়েকটি হাউজিং সোসাইটির প্রাঙ্গণে জল ঢুকে গাড়ি পার্কিং থেকে বাগান পর্যন্ত ডুবে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, প্রতিবারই অস্থায়ী বাঁধ (Temporary Dam) ভেসে যায়, আবার নতুন করে তৈরি হয়। এতে করদাতাদের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বোট ক্লাব রোডের বাসিন্দা রোদা মেহতার কথায়, “মাত্র কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে টানা বর্ষণে কী হবে, কল্পনা করাই ভয়ঙ্কর।” কল্যাণীনগরের বাসিন্দা সতীশ প্রধানের মতে, দীর্ঘদিনের RFD কাজ নদীতে জলাবদ্ধতা (Waterlogging) তৈরি করছে, আর এই কারণেই আশেপাশের এলাকায় বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞ ও কর্তৃপক্ষের মতামত 

পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে RFD প্রকল্প নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। জীবিতনাদী সংস্থার শৈলজা দেশপাণ্ডে জানান, নদীর ধারণক্ষমতা (Capacity) ও জলপ্রবাহের উচ্চতা সঠিকভাবে নিরূপণ না করায় আজ এই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। তার মতে, নগর বন্যা এড়াতে অবিলম্বে বাফার জোন (Buffer Zone) ও জলাভূমি (Wetlands) তৈরি করা উচিত। অন্যদিকে, পিএমসি-র (PMC) নির্বাহী প্রকৌশলী বিপিন শিন্ডে দাবি করেছেন, কাজ সম্পূর্ণ হলে সমস্যার সমাধান হবে। তবে বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন, মূল পরিকল্পনাতেই ভুল থাকায় সমস্যা আরও বাড়বে। প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—শহরের উন্নয়নের নামে সাধারণ মানুষ কি এবার জলবন্দি জীবনের জন্য প্রস্তুত হবেন?

অবশ্যই দেখবেন: Frank Caprio: না ফেরার দেশে ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিও, কে এই ‘বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’?

WhatsApp Icon