Mobile Phone Restriction At Puri Temple: পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দির দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্তদের কাছে অতি পবিত্র এক স্থান। প্রতি বছর লক্ষাধিক ভক্ত এখানে আসেন দর্শনের জন্য। তবে ভিড় বাড়ার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাবও মন্দির চত্বরে দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মন্দিরের ভেতরে বারবার শৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রতি মন্দির প্রশাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্দিরে মোবাইল ফোন ব্যবহারে লাগাম
শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (SJTA) জানিয়েছে, এবার থেকে মন্দিরের ভেতরে আর যত্রতত্র মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। শনিবার সন্ধ্যায় ‘ছাতিসা নিজোগ’-এর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে পুলিশ কর্মী, মন্দিরের কর্মচারী ও আধিকারিকদের জন্য এই নিয়ম কার্যকর করা হবে। অর্থাৎ যারা এতদিন কাজের সুবিধার জন্য মোবাইল ব্যবহার করতেন, তাঁদেরও এখন থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে ফোন ব্যবহার করতে হবে। SJTA-র মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ কুমার পাধী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কেউ নিয়ম ভাঙলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরুরি প্রয়োজনে বা কোনও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠাতে হলে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে ফোন ব্যবহার করতে হবে।
ভক্তদের জন্য আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা
প্রসঙ্গত, সাধারণ ভক্তদের জন্য শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ করা বহুদিন ধরেই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য কিছু পুলিশ আধিকারিক ও সেবায়েতদের বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক সময় সেই সুযোগের অপব্যবহার হওয়ায় এবার নতুন করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ধাপে ধাপে এই নিয়ম সেবায়েতদের উপরেও প্রয়োগ করা হবে।
সারিবদ্ধ দর্শনের ব্যবস্থা চালু হবে
শুধু মোবাইল ব্যবহারেই নয়, মন্দির প্রশাসন দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কার্তিক মাসের পর পরীক্ষামূলকভাবে সারিবদ্ধ দর্শনের ব্যবস্থা চালু করা হবে। এখনকার তুলনায় ভক্তরা তখন আরও সহজে এবং শৃঙ্খলিতভাবে দর্শন করতে পারবেন। এ ছাড়া পূজার সময়সূচি সম্পর্কেও নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রূপার ইঁট স্থানান্তরের প্রস্তাব
এই বৈঠকে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় আলোচনায় আসে। ২০১১ এবং ২০২১ সালে এমার মঠ থেকে উদ্ধার হওয়া ৫০০-রও বেশি রূপার ইঁট রয়েছে। সেই ইঁটগুলো মন্দিরে আনার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন। মুখ্য প্রশাসক জানিয়েছেন, আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই এই রূপার ইঁটগুলো শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এতে মন্দিরের ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।
অবশ্যই দেখবেন: Trump H-1B Visa: ৮৮ লক্ষ না দিলে মার্কিন ভিসা বাতিল! ট্রাম্পের নিয়মে দিশেহারা হাজারো ভারতীয় IT কর্মী
কেন এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ
মন্দির কেবল ভক্তির স্থানই নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। ভিড়ের মধ্যে যদি মোবাইল ব্যবহারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তাহলে সাধারণ ভক্তদের অসুবিধা বাড়ে। অনেক সময় দেখা যায়, কেউ ভিডিও করছে বা ছবি তুলছে, যা ভক্তদের মনোযোগ ভঙ্গ করে। তাই মন্দির প্রশাসনের এই পদক্ষেপ অনেকের কাছেই ইতিবাচক মনে হচ্ছে। আবার সেবায়েত ও কর্মীদের কাজের ক্ষেত্রেও শৃঙ্খলা বজায় রাখা সহজ হবে।
অবশ্যই দেখবেন: Mahalaya 2025: মহালয়া শুভ না অশুভ? জানুন এবার আসল অর্থ ও তাৎপর্য
মন্দিরের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা
পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দির শুধু ওড়িশার নয়, সমগ্র ভারতের একটি গৌরবের প্রতীক। প্রতি বছর রথযাত্রার সময় যেমন কোটি কোটি ভক্ত এখানে আসেন, তেমনি সারা বছর ধরেই দর্শনার্থীর ভিড় থাকে। তাই মন্দিরের ভাবমূর্তি ও পরিবেশ রক্ষা করা খুবই জরুরি। মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর এই নিয়ন্ত্রণ তারই একটি অংশ।
অবশ্যই দেখবেন: Mahalaya 2025: মহালয়ার সকাল মানেই মহিষাসুরমর্দিনী! এবার কোথায় ও কবে শোনা যাবে? না জানলে পস্তাতে হবে!
শেষকথা
শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের এই নতুন সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ভক্তদের অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করে তুলবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আনা হোক বা সারিবদ্ধ দর্শনের ব্যবস্থা চালু করা হোক—সবকিছুর লক্ষ্য একটাই, ভক্তরা যেন নির্বিঘ্নে মহাপ্রভুর দর্শন করতে পারেন। আগামী দিনে এই পদক্ষেপ কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Disclaimer
এই প্রবন্ধে দেওয়া সমস্ত তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের সরকারি বিবৃতির উপর ভিত্তি করে লেখা। লেখকের ব্যক্তিগত মতামত এর সঙ্গে যুক্ত নয়।
অবশ্যই দেখবেন: Amul Price Drop: ৭০০ প্রোডাক্টে দারুণ ছাড়! দামে ধাক্কা দিল AMUL, হাসি ফোটাবে গ্রাহকদের মুখে