PM-CM Removal Bill: প্রধানমন্ত্রী- মুখ্যমন্ত্রীদের জন্য আসছে নয়া বিল! টানা একমাস বন্দি থাকলেই হারাতে হবে পদ

PM-CM Removal Bill: ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে ঝড় উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে এক ঐতিহাসিক ও বিতর্কিত ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করতে চলেছে। প্রস্তাবিত এই বিল অনুযায়ী, যদি কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন জেল হেফাজতে থাকেন (PM-CM Removal Bill), তবে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ...

Updated on:

PM-CM Removal Bill

PM-CM Removal Bill: ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে ঝড় উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে এক ঐতিহাসিক ও বিতর্কিত ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করতে চলেছে। প্রস্তাবিত এই বিল অনুযায়ী, যদি কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন জেল হেফাজতে থাকেন (PM-CM Removal Bill), তবে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদ হারাবেন।

এই বিলটিকে কেন্দ্র একটি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তুলে ধরছে। তবে বিরোধীরা একে ‘বিরোধী সরকার অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ বলে কড়া সমালোচনা করছে। প্রশ্ন উঠছে—গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে এই আইন কতটা প্রয়োজনীয়, আর কতটা রাজনৈতিক কৌশল?

নতুন বিলের মূল বৈশিষ্ট্য

লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ বুধবার যে বিলটি পেশ করতে চলেছেন, তার প্রধান দিকগুলি হল—

  • সংবিধানের ৭৫ অনুচ্ছেদে একটি নতুন ধারা ৫(এ) যোগ হবে।
  • প্রধানমন্ত্রী, কোনো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রী—
    • যদি পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধে গ্রেপ্তার হন,
    • এবং টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন,
    • তবে ৩১তম দিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদ খোয়াবেন।
  • তিনি চাইলে মুক্তির পর পুনরায় সেই পদে যোগ দিতে পারবেন।

কেন এই আইন আনা হচ্ছে?

এই প্রস্তাবিত বিলের পেছনে সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাপট হলো দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঘটনা।

  • কেজরিওয়াল আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রায় ছয় মাস কারাগারে থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর পদে বহাল ছিলেন।
  • এর ফলে প্রশাসনিক কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
  • কেন্দ্র দাবি করছে, এমন পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আর হওয়া উচিত নয়, তাই এই আইন প্রয়োজন।

বিরোধীদের অভিযোগ

বিলটি নিয়ে বিরোধীরা একেবারে ক্ষুব্ধ।

  • কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেছেন—

    “এটি বিরোধী রাজ্য সরকারগুলিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।”

  • তৃণমূল কংগ্রেস-এর এক সাংসদ এক্স (X)-এ লিখেছেন—

    “কোনো আদালতের রায় বা চার্জশিট ছাড়াই এই আইন বিরোধী সরকারকে অস্থিতিশীল করবে। সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী।”

তাদের আশঙ্কা, এই আইনের ফলে ইডি, সিবিআই, এনআইএ-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির রাজনৈতিক ব্যবহার আরও বাড়বে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে—

  • এই বিল একদিকে প্রশাসনিক শুদ্ধি আনতে পারে।
  • তবে অন্যদিকে এটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে।
  • কারণ, গ্রেপ্তার মানেই দোষী সাব্যস্ত হওয়া নয়। আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত কাউকে দোষী ধরা যায় না।
  • অথচ এই আইনে মাত্র গ্রেপ্তার এবং ৩০ দিনের জেলই যথেষ্ট পদচ্যুতির জন্য।

এতে প্রশ্ন উঠছে, গণতন্ত্রে নির্বাহী প্রধানকে কি শুধুমাত্র গ্রেপ্তারের ভিত্তিতে ক্ষমতা থেকে সরানো উচিত?

আইন বাস্তবায়নের সম্ভাব্য প্রভাব

  1. প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা
    • দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত কেউ দীর্ঘদিন জেলে থেকেও পদে থাকলে প্রশাসন ভেঙে পড়তে পারে।
    • এই আইন সেই পরিস্থিতি রোধ করবে।
  2. রাজনৈতিক অপব্যবহার
    • বিরোধীদের আশঙ্কা, রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে এবং বিরোধী সরকার ভাঙতে এই আইন কার্যকর হতে পারে।
  3. জনতার আস্থা
    • মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত বা মামলায় জড়ানো নেতাদের পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
    • তাই আইনটি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে পারে।

অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিল

আজ শুধু এই সংবিধান সংশোধনী বিল নয়, আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিল লোকসভায় উঠছে—

  1. কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনিক সংশোধনী বিল
  2. জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, ২০২৫

দুই বিল মিলিয়ে বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদে তীব্র বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

সারসংক্ষেপ

  • ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হলে কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন জেলে থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদচ্যুত হবেন (PM-CM Removal Bill)
  • মুক্তির পর তিনি চাইলে আবার সেই পদে ফিরতে পারবেন।
  • বিরোধীরা একে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ তুলছে।
  • সরকারের দাবি, এটি দুর্নীতি রোধ ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা আনার একটি পদক্ষেপ।

এখন দেখার বিষয়, সংসদে এই বিল নিয়ে কী ধরনের বিতর্ক হয় এবং শেষ পর্যন্ত আইনটি কার্যকর হয় কি না।

FAQ – ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর

Q1: ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল কী (PM-CM Removal Bill)?
👉 এটি একটি প্রস্তাবিত আইন, যেখানে বলা হয়েছে কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন জেলে থাকলে পদচ্যুত হবেন।

Q2: এই আইনে পদচ্যুত হলে কি আবার পদে ফেরা সম্ভব?
👉 হ্যাঁ, মুক্তির পর তিনি চাইলে পুনরায় পদে ফিরতে পারবেন।

Q3: কোন অপরাধের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে?
👉 এমন অপরাধের ক্ষেত্রে, যেখানে পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে।

Q4: বিরোধীরা কেন এর বিরোধিতা করছে?
👉 বিরোধীদের মতে, আদালতের রায় ছাড়াই শুধু গ্রেপ্তার হলেই পদচ্যুতি হবে। এতে কেন্দ্রীয় সংস্থার রাজনৈতিক অপব্যবহার বেড়ে যাবে।

Q5: এই বিল কবে লোকসভায় পেশ হবে?
👉 কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার লোকসভায় বিলটি পেশ করছেন।

Q6: এর প্রেক্ষাপট কী?

👉 দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার এবং জেল থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল থাকার ঘটনা থেকেই এই বিতর্কিত আইন আনার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে।

অবশ্যই দেখবেন: Mobile Phone Under 3000: অবিশ্বাস্য অফার! ৩০০০ টাকার কমে ইউটিউব চালাবেন, UPI লেনদেন করবেন এই ৩ মোবাইলে

 

Anamika Sen

দেশ-বিদেশের খবর, অর্থনীতি, জ্যোতিষ, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য এবং টেকনোলজির জগৎ—এই সব বিষয় নিয়ে লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
WhatsApp Icon