চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন! অপারেশন সিঁদুর ইস্যুতে মুখ খুলল বেজিং!

বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এমনিতেই রুক্ষ। তার উপর চিন যদি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যকে আরও নড়বড়ে করে তুলতে পারে। সম্প্রতি একটি সেনা অভিযানের পটভূমিতে ফের সামনে এসেছে এই তিন দেশের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ। বিশেষ করে যখন ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সহায়তা করার অভিযোগ উঠছে চিনের দিকে, ...

Published on:

চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন! অপারেশন সিঁদুর ইস্যুতে মুখ খুলল বেজিং!

বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এমনিতেই রুক্ষ। তার উপর চিন যদি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যকে আরও নড়বড়ে করে তুলতে পারে। সম্প্রতি একটি সেনা অভিযানের পটভূমিতে ফের সামনে এসেছে এই তিন দেশের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ। বিশেষ করে যখন ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সহায়তা করার অভিযোগ উঠছে চিনের দিকে, তখন তা শুধু রাজনৈতিক মহল নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও কৌতূহলের সঞ্চার করেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ভারতের সাধারণ নাগরিকদের জন্য এই প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির এই রেশ পৌঁছে যাচ্ছে দেশের নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভবিষ্যতের দিকেও। চিন যদি সত্যিই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতের গোপন সেনা গতিবিধি জানিয়ে থাকে, তবে তা জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী। এটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে—চিন কি সত্যিই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে?

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

সেনা অফিসারের বক্তব্য ঘিরে তৈরি বিতর্ক (Indian Army Officer Statement Controversy)

সম্প্রতি ভারতীয় সেনার ডেপুটি চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং এক প্রেস কনফারেন্সে জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) চলাকালীন পাকিস্তান চিনের কাছ থেকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছিল। তিনি দাবি করেন, ডিজিএমও স্তরের বৈঠকের সময়ও চিন পাকিস্তানকে আমাদের “ভেক্টর আপডেট” সরবরাহ করেছিল। তাঁর দাবি অনুযায়ী, চিন পাকিস্তানকে একটি “জীবন্ত পরীক্ষাগার” (Live Laboratory) হিসেবে ব্যবহার করেছে তাদের অস্ত্র প্রযুক্তির জন্য। এই বক্তব্য সামনে আসতেই একধাক্কায় চাপে পড়ে বেজিং। মিডিয়া, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং সাধারণ মানুষ জানতে চান—চিন আসলে কী ভূমিকা নিয়েছিল ওই সময়? পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও এমন কিছু কথা বলেন, যা চিনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দেয়।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

Read More: DA না দিয়ে সময় কাটানোর খেলায় রাজ্য? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নতুন পিটিশন, বিস্ফোরক অভিযোগ সরকারি কর্মীদের!

চিনের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ অবস্থান, কিন্তু প্রশ্ন রয়েই গেল (China Neutrality Claim in India-Pakistan Conflict)

চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “চিন এবং পাকিস্তান ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী (Traditional Friendly Neighbours)। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আমাদের স্বাভাবিক সম্পর্কের অংশ। এই সহযোগিতা কোনও তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে নয়।” তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, তারা নিরপেক্ষ এবং কোনও দেশের বিপক্ষে কাজ করছে না। তবে এক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব বাড়িয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্বীকারোক্তি। খোলাখুলি তিনি স্বীকার করেছেন যে, ‘ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময় চিন আমাদের গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল।’ তিনি জানান, স্যাটেলাইট নজরদারি (Satellite Surveillance Data) এবং গোপন তথ্য ভাগাভাগি চিন-পাকিস্তান কৌশলগত সহযোগিতার (Strategic Cooperation) অংশ।

আন্তর্জাতিক স্তরে কী বার্তা দিচ্ছে চিন? (China Message on India Pakistan Conflict)

বেজিংয়ের বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সংলাপকে স্বাগত জানায়। চিন এই দুই দেশের মধ্যেকার মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে মেটানোর পক্ষে। কিন্তু এখানে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—একদিকে যখন চিন “শান্তি”র কথা বলছে, অন্যদিকে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিত হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে গুপ্তচর তথ্য বিনিময় করছে কি না, সেই সন্দেহ অস্বাভাবিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের “নাক না গলানো”র নীতির বাস্তব প্রয়োগ কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে দক্ষিণ এশিয়ার তিন পরাশক্তির অদৃশ্য লড়াইকে।

Read More: ২০২৫ সালে কবে কবে ছুটি? রইল পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির ফুল লিস্ট!

শেষমেশ কী বলছে চিন, কী বলছে পাকিস্তান? (Final Words from China and Pakistan on Operation Sindoor)

চিন যেখানে প্রকাশ্যে নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিচ্ছে, সেখানে পাকিস্তানের মন্ত্রীরা আবার ভারতের বিরুদ্ধে চিনের গোয়েন্দা সহায়তার কথা খোলাখুলি বলছেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল সিংয়ের দাবি অনুযায়ী, চিন পাকিস্তানকে একাধিক সামরিক দিক থেকে সুবিধা দিয়েছে, এবং ভারতের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে শক্তিশালী করে তুলছে।

এই পরিস্থিতিতে চিনের অবস্থান ঘিরে তৈরি হয়েছে দ্বৈত বার্তার ধোঁয়াশা—একদিকে বন্ধুত্বের মুখোশ, অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষে গুপ্তচর সাহায্যের অভিযোগ। এখন দেখার, এই ইস্যু নিয়ে ভারত সরকার কূটনৈতিক স্তরে কী পদক্ষেপ নেয়। তবে একথা নিশ্চিত, অপারেশন সিঁদুর শুধুমাত্র একটি সেনা অভিযান নয়, তা পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রে।

Read More: বনধে ছুটি নিলে বড় শাস্তি! বেতন কাটা থেকে শোকজ, নবান্নের কড়া নির্দেশ