রথযাত্রা ও নতুন জগন্নাথ মন্দির দর্শনের ভিড় সামাল দিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেল (South Eastern Railway) বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দীঘাগামী যাত্রীদের সুবিধার্থে পাঁশকুড়া–দীঘা স্পেশাল লোকাল ট্রেন-এর পরিষেবা বাড়ানো হল ১০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত। ৯ এপ্রিল চালু হওয়া এই ট্রেনটির মেয়াদ ইতিমধ্যেই দ্বিতীয়বারের জন্য বৃদ্ধি পেল। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পরিষেবা দীঘা-সহ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সংযোগ ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
দীঘার ভিড় সামলাতে ট্রেন পরিষেবা বাড়ল
দীঘা, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। গ্রীষ্মের ছুটি, ছুটির দিন এবং বিশেষত রথযাত্রার সময়ে ভিড় চরমে ওঠে। এবার সেই ভিড় আরও কয়েকগুণ বেড়েছে দীঘায় সদ্য নির্মিত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর।এই প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ-পূর্ব রেল (South Eastern Railway) সিদ্ধান্ত নেয় পাঁশকুড়া-দীঘা স্পেশাল ট্রেন পরিষেবা আরও বাড়ানোর। ফলে এখন এই ট্রেন ১০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত চলবে। এটি যাত্রীদের জন্য এক বড় স্বস্তির খবর।
পাঁশকুড়া-দীঘা স্পেশাল ট্রেনের ইতিহাস ও সময়সূচি
এই ট্রেনটি প্রথম চালু হয় ৯ এপ্রিল ২০২৫, দীঘা রুটে বাড়তি যাত্রী চাহিদা সামাল দিতে। প্রথমে এটি ৮ জুন পর্যন্ত চালানোর পরিকল্পনা ছিল। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২২ জুন। এবার আরও এক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে তা ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
South Eastern Railway: ট্রেনের সময়সূচি
স্থান | সময় |
---|---|
পাঁশকুড়া থেকে ছাড়ে | সকাল ১১:০০টা |
দীঘা থেকে রওনা দেয় | দুপুর ২:৫০ মিনিট |
প্রধান স্টপেজসমূহ (মোট ১৮টি স্টেশনের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ)
স্টেশন নাম |
---|
রঘুনাথবাড়ি |
তমলুক |
নন্দকুমার |
কাঁথি |
আশাপূর্ণা দেবী স্টেশন |
দীঘা ফ্ল্যাগ স্টেশন |
জগন্নাথ মন্দির: দীঘার নতুন আকর্ষণ
২০২৫ সালে দীঘায় নির্মিত নতুন জগন্নাথ মন্দির দর্শনার্থীদের কাছে এখন অন্যতম আকর্ষণ। ঐতিহ্যবাহী পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে তৈরি এই মন্দিরে প্রতিদিন ভক্তদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। বিশেষত রথযাত্রা উপলক্ষে পর্যটকদের আগমন আরও বাড়ছে। দীঘা, যেহেতু সমুদ্রতট সংলগ্ন ধর্মীয় ও পর্যটন গন্তব্য—জগন্নাথ মন্দির দীঘার পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
যাত্রীদের সুবিধার জন্য রেলের বড় পদক্ষেপ
দীঘার যাত্রীদের যাতায়াতে অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো পর্যাপ্ত ট্রেন না থাকা। এমন সময় বিশেষ ট্রেন চালু হওয়ায় যাত্রীরা স্বস্তি পাচ্ছেন।
রেল সূত্রে জানা গেছে:
- প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দীঘার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন
- ছুটি বা উৎসবের দিনগুলোয় ভিড় প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে
- যাত্রীদের চাপ সামলাতে লোকাল ট্রেন পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
এই সিদ্ধান্ত পর্যটন উন্নয়ন ও স্থানীয় যাতায়াত—দু’দিক থেকেই ইতিবাচক।
যাত্রীদের দাবি: এই পরিষেবা স্থায়ী হোক
যাত্রী সংগঠনগুলি এই ট্রেন পরিষেবা সাময়িক না রেখে স্থায়ীভাবে চালানোর দাবি জানাচ্ছে। তাদের যুক্তি:
- দীঘার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে
- স্থানীয় যাত্রী ও কর্মজীবীদের জন্য নিয়মিত ট্রেন অপরিহার্য
- ট্রেনের সময়সূচি দৈনন্দিন যাতায়াতের উপযোগী
যাত্রীদের মতামত:
- “এই ট্রেন না থাকলে দীঘা যাওয়া এক বিশাল ঝামেলার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।”
- “আমরা চাই, এই ট্রেন সারাবছর চালু থাকুক।”
- “পর্যটনের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের জীবনযাত্রাও এই ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত।”
রেল আধিকারিকদের মতে
রেল আধিকারিকদের মতে:
- লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুধু পর্যটন নয়, সামগ্রিক সংযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে
- দূরবর্তী স্টেশন থেকে দীঘা পৌঁছনো সহজ হয়
- দীঘা রুটে ট্রেন চলাচল বৃদ্ধি মানে রেল আয়ের দিক থেকেও ইতিবাচক প্রভাব
এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু দীঘা নয়, তমলুক, কাঁথি, নন্দকুমার, পাঁশকুড়া—এই সমস্ত স্টেশনের সঙ্গে সংযোগও আরও মজবুত হবে।
দীঘার পর্যটন বৃদ্ধির পরিসংখ্যান (২০২৫)
সময়কাল | পর্যটক সংখ্যা | % |
---|---|---|
জানুয়ারি–মার্চ | ৬.৮ লাখ | ১৮% বৃদ্ধি |
এপ্রিল–জুন (রথযাত্রা সময়কাল) | ৯.২ লাখ | ৩৫% বৃদ্ধি |
জুলাই পূর্বাভাস | ১০+ লাখ | আরও বৃদ্ধি সম্ভাবনা |
এই সংখ্যা প্রমাণ করে দীঘার গুরুত্ব ও পাঁশকুড়া-দীঘা ট্রেনের প্রয়োজনীয়তা কতটা।
দীঘায় রথযাত্রা ও নতুন জগন্নাথ মন্দির কেন্দ্র করে বিপুল জনসমাগম ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে পাঁশকুড়া-দীঘা স্পেশাল ট্রেন চালু রাখার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। যাত্রীদের দাবি অনুযায়ী এই ট্রেন যদি স্থায়ীভাবে চালু করা যায়, তবে তা শুধুমাত্র পর্যটন ক্ষেত্রেই নয়, স্থানীয় অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থারও গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হয়ে উঠবে। রেল যদি এই ট্রেনকে স্থায়ী করে, তবে সেটি হবে বাংলার এক ঐতিহাসিক সংযোজন।
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |