DA Case in Supreme Court: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ (Dearness Allowance) মামলা ফের একবার পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। দীর্ঘদিন ধরেই এই মামলার রায় ঘিরে কর্মীদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এদিন শীর্ষ আদালতে আবারও শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় কর্মীদের হতাশা আরও গভীর হলো।
কেন পিছল ডিএ মামলার শুনানি?
এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবীরা শীর্ষ আদালতে জানান যে, তাঁরা বর্তমানে সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ব্যস্ত। তাই এই ডিএ মামলার শুনানি অন্য দিনে করার আবেদন জানান। তাঁদের আর্জি মেনে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর পর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তবে এখনও সুনির্দিষ্ট দিন ঘোষণা হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশ
এর আগেই সুপ্রিম কোর্ট (DA Case in Supreme Court) পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেইসঙ্গে নির্দিষ্ট সময়সীমাও ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রাজ্য সরকার সেই অঙ্ক পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার সময় চেয়ে নেয় এবং শীর্ষ আদালতের কাছে ৬ মাসের সময়সীমা বৃদ্ধির আর্জি জানায়।
ডিএ মামলা: কোথা থেকে কোথায়
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদানের দাবি অনেকদিনের।
- প্রথমে এই মামলা ওঠে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (SAT)-এ।
- সেখান থেকে তা যায় কলকাতা হাইকোর্টে।
- কলকাতা হাইকোর্ট ২০২২ সালে রায় দেয় যে, ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার।
- এরপর রাজ্য সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়।
- সুপ্রিম কোর্ট কর্মীদের পক্ষে আংশিক রায় দিয়ে রাজ্যকে ২৫% বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেয়।
কিন্তু রাজ্য সরকার রায় কার্যকর না করে সময় চাইতে শুরু করে। ফলে মামলার শুনানি একের পর এক পিছতে থাকে।
সাম্প্রতিক শুনানি: কোন বেঞ্চে হলো?
আগস্ট মাসে (৪ থেকে ৭ আগস্ট ২০২৫) বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে একাধিক শুনানি হয়। কিন্তু এদিন (সর্বশেষ শুনানিতে) বিচারপতি কারোলের সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি সন্দীপ মেহতা। রাজ্যের আইনজীবীদের আর্জি মেনে এই মামলার নতুন তারিখ ১০ সেপ্টেম্বরের পর ধার্য করা হয়েছে।
সরকারি কর্মীদের হতাশা
রাজ্যের সরকারি কর্মীরা বহুদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। হাইকোর্টের রায় থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ—সবই তাঁদের পক্ষে এসেছে। কিন্তু সরকারের টালবাহানায় এখনো পর্যন্ত ডিএ কার্যকর হয়নি। অনেক কর্মীই মনে করছেন, বারবার শুনানি পিছোনো মানে সরকারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত টালবাহানা। এর ফলে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমনি কর্মরত কর্মীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ডিএ নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) মূলত সরকারি কর্মীদের বেতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মূলত মূল্যস্ফীতি ভাতা হিসেবে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য রাজ্য সরকার যেখানে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদান করে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার দীর্ঘদিন ধরে সেই হার মেনে চলেনি। ফলে, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না পাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামোতে স্পষ্ট বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এই বৈষম্য দূর করার দাবিতেই মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা (DA Case in Supreme Court) ফের পিছিয়ে গেল। সুপ্রিম কোর্ট ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর পর নতুন তারিখে শুনানি করবে বলে জানিয়েছে। যদিও আগেই আদালত রাজ্যকে ২৫% বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। ফলে সরকারি কর্মীদের ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে। এখন দেখার বিষয়, আগামী দিনে সুপ্রিম কোর্ট (DA Case in Supreme Court) কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং রাজ্য সরকার কতটা দ্রুত তা কার্যকর করে।
📌 FAQ (প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন ১: ডিএ মামলা (DA Case in Supreme Court) আবার কেন পিছল?
উত্তর: রাজ্যের আইনজীবীরা সাংবিধানিক বেঞ্চের মামলায় ব্যস্ত থাকায় ১০ সেপ্টেম্বরের পর শুনানির আবেদন জানান।
প্রশ্ন ২: সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে কী নির্দেশ দিয়েছিল?
উত্তর: কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫% মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল।
প্রশ্ন ৩: কলকাতা হাইকোর্টের রায় কী ছিল?
উত্তর: ২০২২ সালে কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, ডিএ সরকারি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার।
প্রশ্ন ৪: ডিএ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: ডিএ হলো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে সরকারি কর্মীদের দেওয়া অতিরিক্ত ভাতা।
প্রশ্ন ৫: এবার কবে শুনানি হবে?
উত্তর: নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা হয়নি, তবে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর পর শুনানি হবে।
অবশ্যই দেখবেন: সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ! এবার কীভাবে চলবে কাজকর্ম? দেখে নিন ছুটির ক্যালেন্ডার