Vishwakarma Puja 2025: বাঙালির উৎসব ক্যালেন্ডারে ভাদ্র মাস মানেই আলাদা উচ্ছ্বাস। দুর্গাপুজোর আগে ঘরে ঘরে, কারখানায়, দোকানে বা কর্মক্ষেত্রে পালিত হয় বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja 2025)। অনেকেই মনে করেন, বিশ্বকর্মা পুজো মানেই দুর্গাপুজোর আগমনী সুর বেজে ওঠা। সকালবেলা রঙিন ঘুড়ি উড়ানো, কর্মক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি সাজানো, আর দেবশিল্পীর আরাধনায় মেতে ওঠেন সবাই।
বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja 2025) কেন পালন করা হয়
পুরাণ মতে, ভগবান বিশ্বকর্মা (Vishwakarma Puja 2025) হলেন সমগ্র বিশ্বের স্থপতি ও স্রষ্টা। দেবশিল্পী নামেও তিনি পরিচিত। স্বর্গ থেকে লঙ্কা, দ্বারকা থেকে মহাদেবের ত্রিশূল— সবকিছুই তাঁর হাতে তৈরি বলে বিশ্বাস করা হয়। তাই শিল্পী, কারিগর, ব্যবসায়ী, মেকানিক, তাঁতি থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মজীবী মানুষ এই দিনে তাঁকে স্মরণ করেন।
বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫ (Vishwakarma Puja 2025)-এও একইভাবে কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দোকান, অফিস, গ্যারাজ— যেখানে যন্ত্রপাতি আছে, সেখানে দেবশিল্পীর পুজো হবে। সেদিন সকাল থেকে যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করা হয়, নতুন রঙ করা হয়, আর কাজের শুরু হয় দেবতার আশীর্বাদ নিয়ে।
কেন ১৭ সেপ্টেম্বরই বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja 2025)হয়
সাধারণত হিন্দু ধর্মে অন্য সব দেবদেবীর পুজো নির্ভর করে চাঁদের গতিপ্রকৃতির উপর। তাই দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর মতো উৎসবের তারিখ প্রতি বছর একটু এদিক-ওদিক হয়। কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজোর ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারেই আলাদা। এই পুজো নির্ভর করে সূর্যের অবস্থানের উপর।
শাস্ত্র অনুসারে, কন্যা রাশিতে সূর্যের গমন হয় ভাদ্র সংক্রান্তিতে। সেই দিনটিকেই ভগবান বিশ্বকর্মার জন্মদিন হিসেবে ধরা হয়। তাই প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বরই পালিত হয় বিশ্বকর্মা পুজো। এই নিয়মে কোনও হেরফের সাধারণত হয় না।
বাংলা ক্যালেন্ডারে দেখা যায়, ভাদ্র মাসের শেষ দিনেই এই সংক্রান্তি পড়ে। আবার এই ভাদ্র মাসের আগে মোট পাঁচটি মাস থাকে, যার দিন সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫৬। ইংরেজি ক্যালেন্ডারে ১৫৬তম দিন হিসেব করলেই মেলে ১৭ সেপ্টেম্বর। তাই বছরের পর বছর একই তারিখে বিশ্বকর্মা পুজো হয়ে আসছে।
বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫-এ বিশেষত্ব
এই বছরও সূর্য নিয়ম মেনে প্রবেশ করবে কন্যা রাশিতে। ভাদ্র সংক্রান্তির দিনটি আবার পড়ছে ১৭ সেপ্টেম্বরেই। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই এবারও এই তারিখেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫ (Vishwakarma Puja 2025)। কারখানা বা অফিসে যারা কাজ করেন, তারা বিশেষ ভোগ, প্রসাদ এবং যন্ত্রপাতির আরাধনায় ব্যস্ত থাকবেন। শহর বা গ্রামে সকাল থেকেই দেখা যাবে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দ। অনেকেই বলেন, ঘুড়ি ওড়ানো মানেই আকাশের দিকে শুভ কামনা পাঠানো। শিশুরা যেমন মজা করে, তেমনি বড়দের কাছেও এই রীতি আলাদা আনন্দ বয়ে আনে।
বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে বাঙালির আবেগ
বিশ্বকর্মা পুজো মানে শুধু পুজো নয়, বরং এটি এক ধরণের সামাজিক উৎসব। প্রতিটি মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে কর্মই আসল ধর্ম। দোকানদার হোন বা কারিগর, দিনমজুর হোন বা ব্যবসায়ী— সকলেই একই দিনে প্রভুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
এই দিন থেকেই শুরু হয় দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউনও। কারণ ভাদ্র সংক্রান্তি পেরোলেই আশ্বিন মাস, আর আশ্বিন মানেই দুর্গোৎসব। তাই বাঙালির কাছে বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫ শুধুমাত্র কর্মদেবতার আরাধনা নয়, বরং এক বড় উৎসবের প্রাক্কাল।
FAQ: বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন
প্রশ্ন: বিশ্বকর্মা পুজো ২০২৫ (Vishwakarma Puja 2025) কবে পালিত হবে?
উত্তর: এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হবে বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫।
প্রশ্ন: কেন প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বরেই বিশ্বকর্মা পুজো হয়?
উত্তর: কারণ এই পুজো নির্ভর করে সূর্যের কন্যা রাশিতে প্রবেশের উপর। ভাদ্র সংক্রান্তির দিনটিকেই বিশ্বকর্মার জন্মদিন ধরা হয়।
প্রশ্ন: কোথায় কোথায় বিশ্বকর্মা পুজো হয়?
উত্তর: কারখানা, দোকান, গ্যারাজ, অফিস, শিল্প প্রতিষ্ঠান বা যন্ত্রপাতি যুক্ত প্রায় সব জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজো হয়।
প্রশ্ন: বিশ্বকর্মা দেবতা কে ছিলেন?
উত্তর: পুরাণ মতে তিনি দেবশিল্পী, সমগ্র বিশ্বের স্থপতি। স্বর্গ থেকে শুরু করে লঙ্কা নগরী পর্যন্ত সবই তাঁর সৃষ্ট।
Disclaimer
এই লেখাটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক এবং সাধারণ পাঠকের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এখানে উল্লেখিত তথ্য মূলত পুরাণ, পঞ্জিকা এবং প্রচলিত বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে লেখা। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত মতামত বা কোনও ধর্মীয় উপদেশ জড়িত নয়।
অবশ্যই দেখবেন: শিল্পে উন্নতি ও সৌভাগ্যের বার্তা! বিশ্বকর্মা পুজোয় সকলকে পাঠান এই বিশেষ শুভেচ্ছা





