Bally Bridge: পশ্চিমবঙ্গে হুগলি নদীর উপর অবস্থিত বালি ব্রিজ (Bally Bridge) হাওড়া (Howrah) এবং দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar) এর মধ্যে সংযোগকারী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। যদিও এটি সাধারণত বালি ব্রিজ নামে পরিচিত, কিন্তু এর প্রকৃত নাম বিবেকানন্দ সেতু (Vivekananda Setu)। সেতুটির ইতিহাস যেমন আকর্ষণীয়, তেমনই এর নির্মাণশৈলী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিক থেকে এক অনন্য উদাহরণ।
বালি ব্রিজের ইতিহাস(History Of Bally Bridge):
বালি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯২৬ সালে এবং সম্পন্ন হয় ১৯৩১ সালে। ১৯৩২ সালের ডিসেম্বরে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২,৮৮৭ ফুট (৮৮০ মিটার)। এটি নির্মাণ করেন বিখ্যাত ঠিকাদার ও শিল্পপতি রায় বাহাদুর জগমল রাজা চৌহান (Rai Bahadur Jagmal Raja Chauhan)। ব্রিজের ফ্যাব্রিকেশন (fabrication) এবং নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ব্রেথওয়েট অ্যান্ড কোম্পানি (Braithwaite & Co.)। সেই সময় এটি ছিল দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেতু। প্রাথমিকভাবে, সেতুটির নাম রাখা হয়েছিল উইলিংডন ব্রিজ (Willingdon Bridge), যা পরবর্তীতে বিবেকানন্দ সেতু নাম ধারণ করে।
Read More: ২৫ হাজার টাকা পাবেন বিয়ের আগে! রূপশ্রী প্রকল্পের ফর্ম ফিলাপ ও আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন
Bally Bridge সেতুর গুরুত্ব ও স্থাপত্য
সেতুটি হাওড়ার বালি এবং উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণেশ্বরকে সংযুক্ত করে। এর নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা বন্দর (Kolkata Port) এবং হাওড়া রেলস্টেশন (Howrah Railway Station) এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা। সেতুটির স্থাপত্যশৈলী এবং নির্মাণ কৌশল সেই সময়ের জন্য অত্যন্ত উন্নতমানের ছিল। এর মাল্টিস্প্যান স্টিল স্ট্রাকচার এখনো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে প্রশংসিত।
Bally Bridge বর্তমান অবস্থা
বালি ব্রিজ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। তবে সেতুটির বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর কাঠামো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
বালি ব্রিজ শুধু একটি সেতু নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। এর নির্মাণশৈলী, স্থাপত্য এবং ইতিহাস একে অনন্য করে তুলেছে। সময়ের সাথে সাথে এর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে এটি ভবিষ্যতেও মানুষের সেবা করতে পারে। বিবেকানন্দ সেতু নামটি জানা থাকলেও, এটি বালি ব্রিজ নামেই সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়। এই ঐতিহাসিক সেতুটি পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে আসছে।