DA মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই নবান্নে হুলুস্থুল! রাজ্য নিল বড় সিদ্ধান্ত

রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বহুদিনের দাবি পূরণের পথে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance বা DA) সংক্রান্ত মামলা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের মধ্যে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। এবার সেই টানাপোড়েনের অবসানে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশ, যেখানে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারকে কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র অন্তত ২৫% পরিশোধ ...

Published on:

da

রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বহুদিনের দাবি পূরণের পথে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance বা DA) সংক্রান্ত মামলা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের মধ্যে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। এবার সেই টানাপোড়েনের অবসানে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশ, যেখানে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারকে কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র অন্তত ২৫% পরিশোধ করতে হবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সুপ্রিম কোর্টের রায়: ২৫% বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে | Supreme Court verdict: 25% of outstanding DA must be paid

১৬ মে, ২০২৫ তারিখে দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র অন্তত ২৫ শতাংশ মেটাতে হবে। এই নির্দেশের পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলে। কর্মী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই রায়কে ‘বড় জয়’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

এই নির্দেশ কার্যকর করতে এখন জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্যের অর্থ দপ্তর (Finance Department)। তারা সমস্ত বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে, কতজন কর্মী বর্তমানে এবং অতীতে ডিএ প্রাপকের তালিকায় রয়েছেন। অর্থাৎ কারা কারা এই ২৫% বকেয়া পাওয়ার যোগ্য, তার তালিকা তৈরি হচ্ছে পুরোদমে।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

অবশ্যই দেখবেন: মাত্র ২৮ দিনের ছুটি! রাজ্যের স্কুল খোলার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা, জেনে নিন বিস্তারিত!

কতজন কর্মী পাবেন এই ২৫% বকেয়া ডিএ? | How many employees will receive this 25% outstanding DA?

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ২.৫ লক্ষ সরকারি কর্মী। এর সঙ্গে প্রায় ৩.৮ লক্ষ স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষিকা, ১ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মী এবং পৌরসভা ও অন্যান্য সরকার স্বীকৃত সংস্থায় নিযুক্ত আরও বহু কর্মী রয়েছেন। সব মিলিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়াতে পারে প্রায় ৮ লক্ষের কাছাকাছি।

তবে শুধু বর্তমান কর্মীরাই নন, এই ডিএ পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরাও। অর্থাৎ পেনশনপ্রাপ্তদের মধ্যেও যারা সেই নির্দিষ্ট সময়কালে চাকরিরত ছিলেন, তারাও এই ডিএ পাওয়ার জন্য যোগ্য। ফলে মোট প্রাপকের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে কর্মী সংগঠনগুলো।

অবশ্যই দেখবেন: জুনের শুরুতেই বড় ধাক্কা! ATM থেকে LPG, বদলে যাচ্ছে সব নিয়ম

কারা এই বকেয়া ডিএ পাওয়ার যোগ্য? | Who is eligible to receive this outstanding DA?

সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, যেসব সরকারি কর্মচারী ২০০৯ সালের আগে থেকেই রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত ছিলেন, এবং পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় পড়েন, তারা এই ডিএ-র দাবিদার হবেন। কারণ পঞ্চম পে কমিশন অনুসারে ডিএ-র মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১৯ সালে। ফলে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওই কর্মীদের ডিএ বকেয়া হিসেবে গণ্য হবে। তবে ২০১৯ সালের পর যারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তারাও তাদের কর্মজীবনের সময়কালের ভিত্তিতে বকেয়া ডিএ পাওয়ার যোগ্য হবেন। অর্থাৎ কর্মজীবনের যে সময়ে ডিএ দেওয়া হয়নি, সেই সময়ের জন্য তারা ডিএ পাবেন।

অবশ্যই দেখবেন: বিরাট আপডেট! বকেয়া ২৫% DA সহ এবার মিলবে গ্র্যাজুইটি ও লিভ এনক্যাশমেন্ট? দেখে নিন বিস্তারিত

কারা পাবেন না? 

অর্থ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের মাধ্যমে যেসব শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং পরে আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন, তারা এই বকেয়া ডিএ পাবেন না। কারণ তাদের চাকরি বর্তমানে আইনগতভাবে অবৈধ বিবেচিত হয়েছে। ফলে ডিএ প্রাপকের তালিকা তৈরি করার সময় এইসব ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হবে।

অর্থ দপ্তরের প্রস্তুতি ও দপ্তরীয় তালিকা তৈরির কাজ শুরু 

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরেই রাজ্যের অর্থ দপ্তর সমস্ত দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে কর্মী সংখ্যা এবং পদ অনুযায়ী ডিএ প্রাপকের তালিকা তৈরি করতে। প্রত্যেকটি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পৌর সংস্থা আলাদাভাবে এই তথ্য পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। এই তালিকার ভিত্তিতেই বকেয়া ২৫% ডিএ প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠালো কর্মী সংগঠন 

সরকারি কর্মচারীদের প্রধান সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটি (Coordination Committee) ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ মতো অবিলম্বে অন্তত ২৫% বকেয়া ডিএ মেটানো হোক। সংগঠনের নেতা বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকার আমাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক, এটাই আমাদের দাবি।”

ডিএ-র অর্থনৈতিক প্রভাব কতটা? | What is the economic impact of DA?

সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ২৫% ডিএ পরিশোধের জন্য রাজ্য সরকারের প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে। বর্তমান রাজস্ব ঘাটতির মধ্যে এই টাকা মেটানো রাজ্যের জন্য বড়সড় চ্যালেঞ্জ হবে বলেই মনে করছে অর্থনৈতিক মহল। তবে আদালতের নির্দেশ মানতেই হবে – এমন অবস্থায় অর্থ দপ্তর রাজস্ব পরিচালনার নতুন পরিকল্পনা করছে।

কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি | Relaxation among workers

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের পর অবশেষে আদালতের আশীর্বাদে ডিএ পাওয়ার রাস্তায় তারা এগোতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ এক ঐতিহাসিক রায়। বহু বছর ধরে চলা আন্দোলন, প্রতিবাদ, আদালতের দ্বারস্থ হওয়া – সবকিছুর ফলস্বরূপ এবার তাদের প্রাপ্য অর্থ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার কত দ্রুত তালিকা প্রস্তুত করে এবং বকেয়া ডিএ পরিশোধ করে। যদিও চূড়ান্ত বকেয়া এখনও দেওয়া বাকি, তবে এই ২৫% পরিশোধই বহু কর্মীর জীবনে এক আশার আলো হয়ে উঠছে।

অবশ্যই দেখবেন: গণপতির বাপ্পার কৃপায় খুলছে ভাগ্যের দরজা! আজকের রাশিফল ২৯ মে