রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব অধ্যায়ের সূচনা করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যাঁরা ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) গ্রুপ C এবং গ্রুপ D-র চাকরির দুর্নীতির জেরে কর্মচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার চালু করল আর্থিক ভাতার প্রকল্প। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫’ নামক এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার এক নজিরবিহীন মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণ
গত ২৬ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন, “সবার যাতে চাকরি থাকে, সেই বিষয়টা আমরা দেখব।” সেই সময় থেকেই গ্রুপ C এবং গ্রুপ D-র চাকরিহারা SSC কর্মীদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছিল। আজ, মে মাসের শেষ সপ্তাহে সেই আশার বাস্তবায়ন করল রাজ্য সরকার। ঘোষিত হল ভাতা প্রকল্প, যা কার্যত শিক্ষাক্ষেত্রে চাপে থাকা কর্মীদের জন্য এক বড় স্বস্তি।
অবশ্যই দেখবেন: কালবৈশাখীর তাণ্ডব থামছেই না! আজও দক্ষিণের ৬ জেলায় বজ্রপাত ও ঝড়বৃষ্টি
কত জন কর্মচারীর চাকরি খোয়া গিয়েছে?
সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ২০১৬ সালের SSC নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই গ্রুপ C ও গ্রুপ D বিভাগে কাজ করতেন। এই রায়ের ফলে চাকরি হারিয়ে আর্থিক ও মানসিক দুর্দশার শিকার হন বহু যুবক-যুবতী।
নতুন প্রকল্প: লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কিম, ২০২৫
রাজ্য সরকার ‘West Bengal Livelihood and Social Security Interim Scheme, 2025’ প্রকল্পের অধীনে এই চাকরিহারা কর্মীদের জন্য মাসিক ভাতা চালু করেছে। প্রকল্প অনুযায়ী—
কর্মী শ্রেণী | মাসিক ভাতা (টাকা) |
---|---|
গ্রুপ C | ২৫,০০০ টাকা |
গ্রুপ D | ২০,০০০ টাকা |
ভাতা কার্যকর করা হবে এপ্রিল ২০২৫ থেকেই।
কিভাবে পাবেন এই ভাতা? আবেদন প্রক্রিয়া বিশদে
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ইতিমধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, যারা এই ভাতার জন্য যোগ্য, তাদের নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে—
ধাপ ১:
সংশ্লিষ্ট কর্মীদের Annexure-A নামক নির্ধারিত ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে।
ধাপ ২:
প্রধান শিক্ষক ফর্মগুলি ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর অফ স্কুলস (DI/S) বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন যাচাইয়ের জন্য।
ধাপ ৩:
DI/S কর্তৃপক্ষ আবেদনগুলি খতিয়ে দেখে স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠাবেন।
ধাপ ৪:
সেই আবেদনপত্রগুলি iOSMS পোর্টালে কর্মীর তথ্যের সাথে যাচাই করে মিলিয়ে দেখা হবে।
ধাপ ৫:
সর্বশেষে যাচাইকৃত আবেদনগুলি শ্রম দফতরের কাছে পাঠানো হবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য।
অবশ্যই দেখবেন: গ্রাহকদের বড় ধাক্কা! বন্ধ হতে চলেছে Vodafone Idea-এর পরিষেবা? কেন্দ্রকে যা জানাল সংস্থা
প্রযুক্তিগত দিক ও নিরাপত্তা
এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি iOSMS পোর্টাল এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন সিস্টেম এর মাধ্যমে করা হবে যাতে কোনও প্রকার ভুল বা জালিয়াতির সম্ভাবনা না থাকে। প্রতিটি পর্যায়ে আবেদনকারীর তথ্য খুঁটিয়ে দেখা হবে যাতে প্রকৃত প্রাপকের হাতেই পৌঁছায় এই সহায়তা।
মমতা সরকারের মানবিক মুখ
এই প্রকল্প চালু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করলেন, রাজ্য সরকার শুধুমাত্র কোর্টের নির্দেশ মানছে না, বরং শিক্ষাক্ষেত্রে চাকরি হারানো নিরীহ কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে সর্বতোভাবে প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র মানবিক দিক থেকেই নয়, রাজনৈতিক কৌশলের দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ।
এখনো প্রক্রিয়া চলমান: স্কুলশিক্ষা এখনও কাঠগড়ায়
যদিও এই প্রকল্প কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে কর্মচ্যুত SSC কর্মীদের, তবুও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করে দিয়েছে, ফলে এখনো ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বহু চাকরিপ্রার্থীর। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে আরও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতেই হবে।
রাজ্য সরকারের এই ভাতা প্রকল্প নিঃসন্দেহে একটি সাহসী এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ। SSC দুর্নীতির জেরে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য এই ভাতা একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছে। এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও কতদূর কার্যকর হয় এবং চাকরি ফিরে পাওয়ার লড়াই কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার।
অবশ্যই দেখবেন: ভদ্রা তিথিতে জীবনের মোড় ঘুরবে এই ৩ রাশির, আজকের রাশিফল, ২৫ মে
📅 বিষয় | 🔗 লিংক/বিবরণ |
---|---|
🌤 আবহাওয়া আপডেট | ✅ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর জানতে আমাদের ফলো করুন |
🔮 রাশিফল | ✅ দৈনিক রাশিফল ও জ্যোতিষশাস্ত্রভিত্তিক পরামর্শ |
💬 হোয়াটসঅ্যাপ | 👉 WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন |
📢 টেলিগ্রাম | 👉 Telegram চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন |
📰 অন্যান্য আপডেট | ✅ View More |