আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ছোটোবেলা থেকেই কমবেশি সপ্ন দেখে থাকেন, যে বিদেশে গিয়ে একটা ভালো জায়গা থেকে পড়াশোনা শেষ করে একটা ভালো চাকরি বা ভালো ব্যাবসা শুরু করে সেখানেই সেটেল হওয়ার। আর সেই সপ্ন পূরণ হলেই, একবার বিদেশের মাটিতে সেটেল হয়ে গেলেই পুনরায় দেশে ফেরার কথা উঠলেই অনেকেই রীতিমতো নাক কুঁচকোন। কারণ তাঁদের মতে, বিদেশের আরামের চাকরি নাকি দেশের মাটিতে সহজে মেলে না! আর তাই এই ভ্রান্ত ধারণাকে সম্পূর্ণ রূপে বদলে দিতে সক্ষম হয়েছেন, আইপিএস অফিসার অনুকৃতি শর্মা।
জানা গেছে, তিনি রাজস্থানের আজমেঢ়ের বাসিন্দা ছিলেন। এবং তাঁর বাবা পেশায় একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ছিলেন। অনুকৃতি ছোটো বেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব মেধাবি ছিলেন। এবং সেই সঙ্গে ছোট বেলা থেকেই নির্দিষ্ট নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছেন। অনুকৃতি জয়পুরের ইন্দো ভারত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে প্রাথমিক ভাবে শিক্ষা জীবনের পঠনপাঠন শেষ করে, তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ভর্তি হন কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে বিএসএমএস কোর্স নিয়ে।
আরও পড়ুন: সর্ষে বাটা ও ঢেঁড়স দিয়ে বানিয়ে ফেলুন দুর্দান্ত স্বাদের ঢেঁড়সের রেসিপি, শিখে নিন রেসিপি
আর তারপরেই ২০১২ সালে তিনি টেক্সাসের হিউস্টনের রাইস ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির করার সুযোগ পেলেই পাড়ি জমান বিদেশে। এবং পিএইচডি শেষ করেই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় চাকরি পান অনুকৃতি। আর এরপর থেকে শুরু হয় তাঁর আগ্নেয়গিরি নিয়ে গবেষণা। আর তারজন্য তাঁকে বেতন দেওয়া হতো ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দুই লক্ষ টাকা। কিন্তু হঠাৎই তিনি সিদ্ধান্ত নেন দেশে ফিরে অংশ নেবেন ইউপিএসসি পরীক্ষায়। আর তাই যেমন ভাবা তেমন কাজ। এরপর পরিকল্পনা অনুসারে শুরু করেন পড়াশোনা।
আর সেই জন্যে তাঁকে দিন রাত এক করে পরিশ্রম করতে হয়। এরপর তিনি প্রথমবারের মতো বসেন দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায়। প্রথমবার প্রিলিমসে সফল হলেও মেন পরীক্ষায় আটকে যান। তারপর থেকে চার চারবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েও পরাস্ত হন অনুকৃতি। অবশেষে ২০২০ সালে পঞ্চমবারের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ধরা দেয় সাফল্য। আর সেই কারণেই আজ তিনি একজন আইপিএস অফিসার। অনুকৃতির মতে, ‘মনের জেদ, ধৈর্য আর পরিশ্রম করলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব’। আর আজ তাইতো তাঁর এই সফলতা বর্তমানে অনেক ছাত্রছাত্রীদের অনুপ্রেরণা যোগাবে।