Dakat Kali Bari: দশমহাবিদ্যার প্রথমা দেবী হলেন মা কালী (Dakat Kali Bari) । হিন্দুধর্মের পৌরাণিক এই দেবী সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ডাকাতদের আরাধ্য দেবী রূপে প্রবল জনপ্রিয়। ডাকাতদের দ্বারা আরাধ্য দেবীর এই রূপ আমাদের কাছে ডাকাত কালী নামে পরিচিত। বিভিন্ন জায়গায় এই পূজা প্রচলনের নানা লৌকিক কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত আছে (Dakat Kali Bari)। তবে বর্তমান সময়ে ডাকাতদের সেই প্রতাপ আর না থাকলেও তাদের আরাধ্য দেবীর পূজা উদযাপন কিন্তু বেশ ঘটা করেই চলে আসছে । পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলার ডাকাতদের মধ্যে এই পূজা প্রারম্ভের পশ্চাতে লোমহর্ষক কিছু লৌকিক এবং ঐতিহাসিক ঘটনা আছে যা জানলে হয়তো আপনার অজান্তেই আপনার মধ্যে শিহরন জাগবেই জাগবে । চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সব লোমহর্ষক কিছু ডাকাত কালী পূজা প্রচলনের ইতিহাসের কথা (Dakat Kali Bari)।

রঘু ডাকাতের কালীপূজা (Dakat Kali Bari): ডাকাতদের সর্দার রঘু ডাকাতের নাম আমরা কে না শুনেছি। হুগলীর বাঁশবেড়িয়া অঞ্চলের এই ডাকাতের নামে গোটা বাংলা কাঁপত। রঘু ডাকাতের মতোই প্রবল জনপ্রিয় তার কালীপূজা । কালী ভক্ত এই ডাকাতের দেবী আরাধনাতেও ছিল বিশেষত্ব , কি সেই বিশেষত্ব ? প্রতিদিন পূজার সময় তিনি দেবীকে পোড়া ল্যাটা মাছ নিবেদন করতেন।
প্রহ্লাদ ডাকাতের কালীপূজা (Dakat Kali Bari) : পূর্ব বর্ধমানের পাণ্ডুক গ্ৰামে অবস্থিত বামা কালী মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রহ্লাদ ডাকাত। লৌকিক কাহিনী অনুযায়ী ডাকাতদের সর্দার প্রহ্লাদ তার দলবল নিয়ে ডাকাতি করতে বের হন এবং হানা দেন কেতু গ্ৰামের রাম-সীতার মন্দিরে । সেখানে ডাকাতি করতে গিয়ে এক মহিলা কে আক্রমণ করবার সময় ওই মহিলার মধ্যে দেবী কালী অভিভূত হন , এবং তৎক্ষণাৎ প্রহ্লাদ ডাকাত দেবীর সামনে বশ্যতা স্বীকার করে , দেবী ভক্তে পরিণত হন এবং দেবী মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে এই বামা কালীর মন্দিরটি নির্মাণ করেন ।
গগন ডাকাতের কালীপূজা (Dakat Kali Bari) : স্বাধীনতা পূর্ব কালে পরাধীন ভারত কে স্বাধীন করবার বাসনা নিয়ে এবং ব্রিটিশ সরকারের চরম বিরোধীতা করবার উদ্দেশ্যে চলত ডাকাতি । ডাকাতদের নজরে থাকত ধনি জমিদার বাড়ি গুলি। সেই সময়ের ডাকাতদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন গগন ডাকাত । লোকমুখে প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী এই গগন ডাকাত একবার সারদা মাকে কালীরূপে দেখে ভক্তি রসে আপ্লুত হয়ে হুগলীর সিঙ্গুরে এক কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন ।
কেলে ডাকাতের কালীপূজা (Dakat Kali Bari) : হুগলী জেলার অন্তর্গত জিরাটে অবস্থিত কালী মন্দিরটি কেলে ডাকাতের মন্দির নামে পরিচিত । কেলে ডাকাত এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা । কথিত কাহিনী অনুযায়ী দেবী ভক্ত কালিচাঁদ ডাকাতি করবার পূর্বে প্রতিরাতে মায়ের আরাধনা করে অভিষ্ট লক্ষের উদ্দেশ্যে বের হতেন ।
আউস গ্ৰামের কালীপূজা (Dakat Kali Bari) : স্থানীয় কাহিনী অনুযায়ী, ডাকাতদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল আউস গ্ৰামের বাসিন্দারা । ডাকাতদের অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার আশা নিয়ে জমিদাররা একজোট হন এবং আক্রমণ করেন । সেই সময় ডাকাতদের রক্ষাকর্তা স্বরূপ আর্বিভূত হন মা কালী , এবং তিনি তাদের রক্ষা করেন । তারপর থেকেই সেখানে কালীপূজার প্রচলন হয় এবং এখনো পর্যন্ত সেই পুজোর রীতি বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে ঘটা করে চলে আসছে ।