প্রতিটি বাঙালীর কাছেই মহালয়ার মধ্যে দিয়েই দুর্গা পূজার শুভ সূচনা হয়ে যায়। অর্থাৎ পিতৃ পক্ষের শেষ এবং দেবী পক্ষের শুরু তেই মহালয়ার পুণ্য তিথি আসে। চলতি বছরে 29 সে সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল পিতৃপক্ষ। 14 ই অক্টোবর পিতৃপক্ষের শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে মহালয়ার শুরু হয়েছিল। তবে মহালয়ার ভোরে অনেককেই তর্পণ করতে দেখা যায়। এর পেছনে আসল কারন কি জানেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

এই তর্পন এর পিছনে রয়েছে প্রাচীন এক কাহিনী। প্রতিটি মানুষই রামায়ন মহাভারত পড়ার কারনে দাতা কর্নকে চিনে থাকবেন। মূলত এই কর্ণের কারনেই পিতৃপক্ষের শেষে তর্পণ করার প্রথা চালু হয়েছিল। যা আজও মানুষ একইভাবে পালন করে আসছে।
মূলত কর্ণ মারা যাওয়ার পর যখন তার আত্মা স্বর্গে স্থান পায় তখন স্বর্গে সোনা সহ বিভিন্ন রত্ন দেওয়া হয় খাদ্য হিসেবে। এহেন খাদ্য দেখে রীতিমতো অবাক হয় কর্ণ। কারন সোনা বা রত্ন তো আর খাওয়ার জিনিস নয়। এর পর তার এহেন খাবারের কারন হিসেবে তিনি জানতে পারেন, তিনি নিজে তার পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে আজীবন সোনা,গয়না দিয়ে এসেছেন। তাদের তেষ্টা বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য কোনোদিন জল বা কোন খাবার দান করেননি। আর সেই কারনে তাকেও একই জিনিসই দান করা হচ্ছে।

এর পরেই কর্ণ কার্যত তার ভুল বুঝতে পেরে জানান আমি কখনোই জানতাম না পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে খাদ্য,জল দান করার কথা। আর সেই কারনেই আমি আজীবন তাদের সোনা , গয়না দান করে এসেছি। এখন এর থেকে মুক্তির উপায় ও জানতে চান তিনি। সেই সময় তাকে বলা হয় পিতৃপুরুষদের তৃষ্ণা নিবারণের কারণে তাকে পিতৃপুরুষকে জল দান করতে হবে। টর জন্য তাকে মর্ত্যলোকে যেতে হবে। যেই সময় কর্ণ পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করতে গিয়েছিলেন সেই সময়কাল টিই ছিল পিতৃপক্ষ। এছাড়াও শাস্ত্র মতে মহালয়ার এই অমাবস্যা তিথিটির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রেতকর্মের কাজের জন্য এই তিথিটিকে সব থেকে ভালো তিথি হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে। তার সাথে সাথে প্রাচীন শাস্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী পিতৃপক্ষের শেষে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পনের নিয়ম চলে আসছে।