Viral Video: জীবন যুদ্ধে লড়াই করার যে কোন বয়স হয় না তা দেখিয়ে দিয়েছেন ৯৫ বছরের বৃদ্ধা। নাম তার পুষ্পা। রাস্তার ধারে তাকে নিয়ে আসতে হয়েছে শুধুমাত্র নিজের পেট চালানোর জন্য। নবতিপর ওই বৃদ্ধা এখন রাস্তার ধারে বিক্রি করছেন ফুচকা। যে ফুচকা দেখে সাধারণ মানুষের জিভে জল চলে আসে সেই ফুচকাই তার জীবন যুদ্ধের উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । তার ফুচকা খেতে নয় তাকে দেখার জন্য মানুষ দাঁড়িয়ে পরে রাস্তার ধারে। কেন তাকে এই করুন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়েছে ওই বৃদ্ধার জীবনযুদ্ধে লড়াই। এই বয়সে যখন মানুষের আরামে আয়েশে বসে থাকে তখন পেট চালানোর জন্য তাকে রাস্তায় নামতে হয়েছে ফুচকা বিক্রি করতে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই তার চোখের সামনে নেমে এসেছে আধার। কিন্তু সেই আঁধারে তো আর বসে থাকলে চলবে না আঁধার হাতরে নতুন আলোর পথ খুঁজে বেরোতে হবে। তাইতো ওই বৃদ্ধা রাস্তায় নেমে পড়েছেন। বৃদ্ধা জানেন সকলেই ফুচকা খেতে ভালোবাসেন। তাই ফুচকাকে হাতিয়ার করে তিনি রাস্তায় নেমেছেন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে:
তিনি থাকতেন ওপার বাংলায় কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে চলে যেতে হয়েছে এপার বাংলায়। তারপর পেটের টানে নানান রকম কাজ করতে হয়েছে তাকে। বাংলাদেশে তার স্বামীকে গুলি করে হ’ত্যা করা হয় সেই ঘটনা নিজের চোখের সামনে দেখেছিলেন তিনি। এরপর তিনি এপার বাংলায় চলে আসেন। প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন পুষ্পা । যত তার বয়স বাড়তে থাকে ততই যেন তার শরীরের শক্তি ক্ষয় হতে থাকে। বৃদ্ধা ঠাকুমাকে রাস্তার ধারে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে এলাকার কিছু সহৃদয় যুবকরা তার একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: Iman Chakraborty: জীবনের স্বাদ বদল করতে এবারে এই পথ বেছে নিলেন জনপ্রিয় গায়িকা ইমন চক্রবর্তী
সংসার:
কিন্তু শুধু ঘর থাকলে তো হবে না পেটের জ্বালা মেটাতে হবে। প্রতিদিন তাকে কে দেবে ভিক্ষা। তাই সেসব না ভেবে নিজের পথ নিজেই দেখে নিয়েছেন পুষ্পা। এখনো কঠোর পরিশ্রম করেন তিনি। নতুন গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। মধ্যমগ্রাম সুভাষপল্লি কোয়াটারের পিছনে একটি ছাউনিতে ফুচকা বিক্রি করেন পুষ্পা। তার এক মেয়ে রয়েছে। নিজেই পয়সা জোগাড় করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মেয়ের সংসারে রয়েছে প্রবল অর্থকষ্ট। তাই মেয়েকেও টাকা দিতে হয় এই বয়সে(Viral Video)।
Viral Video of 95-year-old Phuchkawala Pushpa Mondal
বেচাকেনা:
মধ্যমগ্রাম স্টেশনের ১ নম্বর টিকিট কাউন্টারের পাশেই বিকালবেলা তিনি ফুচকা নিয়ে বসে পড়েন! ঠেলাগাড়ি করে নিয়ে আসেন ফুচকার স্টল! বিকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কেনাবেচা হয়! তারপরে বাড়ি ফিরে যেতে হয়! পুষ্পা জানিয়েছেন আগে অনেকেই আসতো ফুচকা খেতে! তবে এখন ফুচকার বিক্রি বাটা অনেকটাই কমে গেছে। দিনে কখনো ১০০ কখনো আবার ৫০ টাকা রোজগার হয়। তা দিয়েই কোনরকমে উদরপূর্তি করতে হয় তাকে। সকালবেলা কখনো ছাতু খান কখনো মুড়ি। দুপুরে কখনো আধপেটা খেয়ে থাকতে হয়। বিকেল হলেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন ফুচকা বিক্রি করতে। একেই বয়স হয়েছে তার উপর বয়সের ভারে শরীর নুইয়ে গেছে। কিন্তু তারপরেও ফুচকা ভেঙে আলু এবং টকজল দিয়ে পরিবেশন করেন তিনি। এভাবেই কেটে যাচ্ছে নবতীপর বৃদ্ধা পুষ্পার জীবন। এভাবেই আগামী পাঁচটা বছর কাটিয়ে দিতে চান ফুচকা ওয়ালা পুষ্পা(Viral Video)।