Bipadtarini Puja: হিন্দু ধর্মে নানা দেবীর পূজা আচরা হয়। তারমধ্যে দেবী দুর্গা অন্যতম জাগ্রত বলেই পরিগণিত হয়। দেবী দুর্গার এক প্রতিরূপ বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja)। বিপদ কাটাতে দেবীর পূজা করা হয় বলেই বিশ্বাস। আর এই বিপত্তারিণী পূজোর এক অন্যতম অঙ্গ লাল ধাঁগা। কেন হাতে বাঁধা হয় এই সুতো জানেন কি এর পিছনে থাকা আসল কাহিনী। দেবাদিদেব মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী তিনি। তিনি শক্তির এক রূপ। দুর্গার ১০৮ রূপের মধ্যে অন্যতম হলেন বিপদতারিনী!
আসলে তিনি বিপদ নাশ করেন তাই এই উপাধি দেওয়া হয় তাকে। পুরান মতে শুম্ভ নিশুম্ভ অসুরদের বধ করবার জন্য দেবতাগণ একদিন তপস্যা করছিলেন। সেই সময় পার্বতী তাদের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করেন তোমরা কার মন্ত্র পড়ছো। কিন্তু দেবতারা বুঝতে পারেন না যার পুজো করছেন তিনি এসে উপস্থিত হয়েছেন তাদের সামনে। এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ অসুরদের দুই ভাইকে হত্যা করেন পার্বতী। বিপদ তাড়িয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বিপদতারিনী।
পুজোর সময়:
আষাঢ় মাসে রথ এবং উল্টো রথের মাঝে যে শনি এবং মঙ্গলবার থাকে তাতেই পুজো করা হয় দেবীর। বিবাহিত মহিলারা স্বামী এবং সন্তান ও পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই পুজো করে থাকেন। গ্রামের দিকে এই পূজা চার দিন ধরে চলে। দুই রাত্রি ধরে রাতে লোক গান ভজন এবং কীর্তন চলে। পুজো উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করে থাকেন।
এই পুজো শেষ হলেই লাল সুতো বেঁধে দেওয়া হয়, মেয়েরা বাম হাতে এবং ছেলেরা ডান হাতে বাঁধেন। যিনি ব্রত পালন করেন তাকেই বাঁধতে হয় এই সুতো। অবশ্যই পরিবারের বিপদ দূর করার জন্য। মায়ের প্রসাদ হিসেবে ১৩ টি লুচি এবং ১৩ রকমের ফল খাওয়া হয়। চাল চিরে মুড়ি এসব কেউ খেতে পারেন না।
লাল সুতোর মাহাত্ম্য:
শাস্ত্র অনুযায়ী এই পুজো ছাড়াও পুরাণে লাল সুতো ব্যবহার করা হয়। যেমন, ভক্ত বলিরাজ ব্রহ্মার আশীর্বাদে স্বর্গ মর্ত্য এবং পাতালের অধিকারী হয়েছিলেন। কিন্তু ইন্দ্রকে রক্ষা করতে তাকে মর্ত্যে পাঠিয়ে দেন বিষ্নু। ব্রাহ্মণ রূপে তিনি অমরত্ব পান। সেই অমরত্ব পাওয়ার কারণেই হিন্দুদের মধ্যে এই লাল সুতো বাঁধার এক প্রচলিত প্রথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: Cartoon Network Shut Down: বন্ধ হচ্ছে ‘কার্টুন নেটওয়ার্ক’? ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে উদ্বিগ্ন দর্শকরা
শোনা যায় দেবতা অসুরের মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয়। দেবরাজ ইন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়েন এই সময় তার স্ত্রী ইন্দ্রানী প্রার্থনা শুরু করেন। তিনি আধ্যাত্বিক শক্তি একত্রিত করতে একটি লাল সুতো দিয়ে বেঁধে দেন ইন্দ্রের গলায়। এই সুতো রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। ঠিক তেমনভাবে আজও বাংলার ঘরে ঘরে এই বিপদতারিনী ব্রত পালন করা হয় এবং বাধা হয় লাল সুতো।