কথায় আছে ‘কালো জগতের আলো’। কিন্তু গায়ের রং এর ক্ষেত্রে এই কথা বারবার মিথ্যে প্রমাণিত হয়েই এসেছে। আশেপাশের মানুষ হোক বা টিভির তারকা গায়ের রং ফর্সা হলে তবেই তাকে মানুষ পছন্দ করে। বিশেষ করে তা যদি হয় কোন মেয়ে। সিনেমা হোক বা সিরিয়াল নায়িকা মানেই তাকে হতে হবে টুকটুকে ফর্সা। গায়ের রং কালো হলেই তাকে দিয়ে দেয়া হবে পার্শ্ব চরিত্রে। এমনকি খলনায়িকা হতে গেলেও গায়ের রং ফর্সা হওয়া চাই। বহু বছর ধরে বাংলা অভিনয় জগতে এই অলিখিত নিয়ম চলে এসেছে। কিন্তু এবার সময় বদলেছে। এখন গায়ের রং কালো হলেও দিব্যি সফলভাবে বছর পর বছর ধরে সিরিয়াল চলছে।
ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে শ্যাম বর্ণের নায়িকাদের গল্পই বেশি টিআরপি পাচ্ছে। আর তার থেকে পিছিয়ে থাকছে তথাকথিত সুন্দরী নায়িকাদের সিরিয়াল। বর্তমানে বেঙ্গল টপার ধারাবাহিক হল ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ (Anurager Chowa)। এই ধারাবাহিকের নায়িকা দীপা। তার গায়ের রং শ্যামলা। দীপার চরিত্রে অভিনয় করছেন স্বস্তিকা ঘোষ। কিন্তু এই অভিনেত্রীর বাস্তবে গায়ের রং মোটেও শ্যামলা নয়। যখন স্বস্তিকার দীপা চরিত্রের জন্য রাজি হন। তখন তাকে অনেকেই বলেছিলেন এমন শ্যামবর্ণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করলে কখনোই সফলতা পাবেন না। আর আজ এই ধারাবাহিক বেঙ্গল টপার।
এরপর জি বাংলার ‘রাঙা বউ’ (Ranga Bou) ধারাবাহিক। টিআরপি তালিকার সেরা ১০ এ জায়গা পেয়েছে এই ধারাবাহিকটি। এই ধারাবাহিকের নায়িকার নাম পাখি। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। বাস্তব জীবনে সুদিদাসের গায়ের রং শ্যাম বর্ণ। আর ঠিক সেই ধরনের চরিত্র এই অভিনয় করেন তিনি। তিনি নিজের গায়ের রং নিয়ে ভীষণ গর্ববোধ করেন। কখনওই সেই রং লুকানোর চেষ্টা করেননি তিনি।
এরপর কথা বলা জি বাংলার প্রাক্তন ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’ (Krishnokoli)-র সম্পর্কে। এই ধারাবাহিকের নায়িকা ছিলেন তিয়াসা। তিয়াসা বাস্তব জীবনে ফর্সা হলেও, একজন শ্যাম বর্ণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। আর দারুণ সফলতা পেয়েছিলেন। আসলেই চরিত্রের গায়ের রং টিআরপির জন্য নির্ভর করে না। গল্প আর অভিনয় ভালো হলে সফলতা এমনিই পাওয়া যায়।