পর্দায় অভিনয় করা মানেই ত্বক হতে হবে চকচকে, দাগ হীন, শরীর হতে হবে স্লিম। এমনটাই বহু বছর ধরে দর্শকরা দেখে অভ্যস্ত। যদি সুন্দর্যের এই ক্রাইটেরিয়া কোনও অভিনেত্রী মানতে না পারেন, তাহলেই তাঁকে হতে হয় ব্যঙ্গ বিদ্রুপের শিকার। মহিলা মানেই অনেকে ভেবে রাখেন দুর্বল হবে, মাথা নিচু করে থাকবে। কিন্তু সব সময় যে তা হয় না, এর জলজ্যান্ত প্রমাণ আমাদের সামনে বহু আছে। প্রতিটি কর্ম ক্ষেত্রেই এমন অনেকেই আছেন যাঁরা অপরকে ছোট করতে ভালোবাসেন। বলা ভালো স্যাটিস্ফাইড হন। আর বিশেষ করে এই ধরনের মানুষেরা মূলত মহিলাদেরই টার্গেট করে থাকেন। কারোর মেরুদন্ড ভাঙতে, দুর্বল জায়গায় আঘাত করতে আর স্বপ্নকে গুড়িয়ে ফেলতে এঁরা সিদ্ধহস্ত। আর এই ধরনের মানুষের পরিমাণ অভিনয় জগতে একটু বেশিই।

এই ধরনের বহু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে অভিনেত্রী স্বাগতা মুখার্জিকে (Swagata Mukherjee)। সম্প্রতি তিনি ‘জোশ টকস্’ (Josh Talks) -এর মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন। জানিয়েছেন অতীতের বহু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। খুব অল্প বয়সেই অভিনয় জগতে কাজ করা শুরু তাঁর। মুখ ভর্তি দাগ নিয়ে টলিউডের পা রেখেছিলেন এই অভিনেত্রী। এখন অবশ্য আর মুখে তাঁর দাগ নেই। কিন্তু সেই সময় এই কারণে বহু অপমান তাঁকে সহ্য করতে হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে মুখের দাগ মুছে গেলেও, সেই অপমানের দাগ আজও তাঁর মনে রয়ে গেছে।

প্রথমবার তাঁর মায়ের বান্ধবী এই দাগের কারণে তাঁকে কথা শুনিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন স্বাগতার স্কিন ট্রিটমেন্ট করাতে। যা শুনে ছোট্ট স্বাগতা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। ওই মহিলা বলেছিলেন স্বাগতার মুখে এমন দাগ থাকলে, কখনওই বিয়ে হবে না। এইসব শুনে স্বাভাবিক ভাবেই মূর্ষে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় স্কিন ট্রিটমেন্ট করাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ‘ভদ্র’ মহিলার কথা শুনে, তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
এরপর নিজের পরিচয় তৈরি করতে জোর কদমে শুরু করে দেন গানের প্র্যাক্টিস। তারপর যুক্ত হন থিয়েটারের সাথে। একটার পর একটা প্রজেক্ট এর সাথে যুক্ত হতে থাকেন তিনি। আর তখনই বুঝে গিয়েছিলেন অভিনয়টাই তাঁর ভবিষ্যৎ হতে চলেছে। এরপর নিজের কেরিয়ার তৈরির দিকে মন দেন। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, অভিনয় শেখানোর জিনিস নয়। এটি উপলব্ধি আর নিজস্বতার বিষয়। নিজের চরিত্র থেকে অন্যের চরিত্র চিত্রায়নে নিজেকে সঁপে দেওয়ার নামই হল অভিনয়। তাঁর মতে, পরিশ্রম একজন অভিনেতার সঠিক মূল্য দিতে পারে।